উপসাগরীয় দেশে যেতে না পারায় বিমানবন্দরে এক প্রবাসী কর্মীর কান্না। বিমানবন্দরে পিসিআর টেস্ট করানোর সুযোগ দাবি করে প্রবাসীরা কয়েকদিন বিক্ষোভ করেছেন।
উপসাগরীয় দেশে যেতে না পারায় বিমানবন্দরে এক প্রবাসী কর্মীর কান্না। বিমানবন্দরে পিসিআর টেস্ট করানোর সুযোগ দাবি করে প্রবাসীরা কয়েকদিন বিক্ষোভ করেছেন।

বাংলাদেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য রোববার ছয়টি আরটিপিসিআর ল্যাব চালু করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুত নয় এখনো।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেছেন, ২৮শে সেপ্টেম্বর নাগাদ পূর্ণাঙ্গভাবে আরটিপিসিআর ল্যাবগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করতে পারবে। তবে, তার আগে বেশ কয়েকটি ধাপের কাজ বাকি রয়েছে। এ বছরের অগাস্ট মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশসহ মোট ছয়টি দেশের তালিকা প্রকাশ করে ঘোষণা দেয়, ওই দেশগুলো থেকে আরব আমিরাতে যেতে ইচ্ছুক যাত্রীদের সে দেশে প্রবেশের ৪৮ ঘণ্টা এবং ছয় ঘণ্টা আগে দুই দফায় করোনাভাইরাসের দুইটি পরীক্ষার ফল হাতে নিয়ে যেতে হবে।

এই নির্দেশনার কারণে এখন বাংলাদেশে আটকে পড়েছেন প্রায় ৫০ হাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী। এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলোও টিকেট বিক্রি বন্ধ রেখেছে। সে প্রেক্ষাপটেই আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবি করে আসছিলেন।

কর্তৃপক্ষ কী করছে?

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেছেন, বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। রোববার এমন ছয়টি ল্যাবে পরীক্ষামূলকভাবে ১০০জন যাত্রীর করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয়েছে।

কিন্তু পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দরকার। মি. রহমান বলেছেন, “আমাদের ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ নির্মাণ কাজ শেষ। আজ টেস্ট রান চলছে। সফল হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে, যে এগুলো প্রস্তুত।”

শ্রমিক
সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজ করেন এমন অনেক শ্রমিক দেশে আটকা পড়েছেন

“তখন তারা আমাদের জানিয়ে দেবে যে কী পরিমাণ যাত্রীর পরীক্ষা তারা করতে পারবে। সে অনুপাতে আমরা এয়ারলাইন্সগুলোকে অবহিত করব যে তারা যেন টিকেট বিক্রি শুরু করে।” তিনি বলেছেন, এজন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে।

“কারণ বিমানবন্দরে যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান ল্যাব স্থাপন করেছে, তাদের এসওপি বা কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের কাছে এই পরীক্ষা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কিনা, সে উত্তরের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।”

সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে এসব ল্যাব পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করবে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাত্রা শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। এর আগে বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবিতে প্রবাসী কর্মীরা কয়েক দফায় বিক্ষোভ মিছিল এবং অনশন কর্মসূচী পালন করেন।

বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দ্রুত আরটিপিসিআর ল্যাব বসিয়ে সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়।

অভিবাসী শ্রমিক
মহামারি কালে কয়েক লাখ শ্রমিক দেশের ফিরে এসেছেন

সে অনুযায়ী সর্বশেষ শনিবার ২৫শে সেপ্টেম্বরে এটি চালু হবার কথা ছিল। এদিকে, এই জটিলতার কারণে কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি অনেক অভিবাসী শ্রমিক। অনেক কর্মীর ইতিমধ্যে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, কারো বা শেষ হবার পথে।

কেউ আছেন যাদের ভিসার মেয়াদ এবং রিটার্ন টিকেট থাকলেও, সময়মত না পৌঁছাতে পারায় এখন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান তাকে ফেরত নিতে চাইছে না। যে কারণে এখনো বিমানবন্দরে ও টিকেট বিক্রয়কারী এজেন্সিতে প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন বিক্ষুব্ধ আরব-আমিরাত প্রবাসীরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মূহুর্তে ছয়টি ল্যাব স্থাপন হলেও, ক্রমে এ সংখ্যা বাড়িয়ে বিমানবন্দরে ১২টি আরটিপিসিআর ল্যাব বসানো হবে। তখন ২৪ ঘণ্টায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।

# সূত্রঃ বিবিসি বাংলা #