চলমান সংবাদ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেতন ফি মওকুফের দাবি ছাত্র ইউনিয়নের

করোনাকালে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন ফি মওকুফ করার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা। মহান শিক্ষা দিবসের সমাবেশ থেকে সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করে পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, ২০২০-২১ সেশনের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, সেশনজট রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সকল শিক্ষকদের জাতীয়করণ করারও দাবি জানানো হয়।

পাশপাশি অসাম্প্রদায়িক, গণমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক, একই ধারার অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুরও দাবি জানায় সংগঠনটি।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকোলে মহান শিক্ষা দিবস স্মরণে ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সংসদ আয়োজিত ছাত্র সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সমাবেশে অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দে, ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার প্রাক্তন সভাপতি সাংবাদিক নেতা হাসান ফেরদৌস, ট্রেড ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক দিলীপ নাথ।

সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলার জাতীয় সঙ্গীত ও সংগঠন সঙ্গীতের পরিবেশনের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি এ্যানি সেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গৌরচাদ ঠাকুর অপু, চট্টগ্রাম জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক খালিদ মিরাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক টিকলু দে, কোতয়ালী থানার সাধারণ সম্পাদক অয়ন সেনগুপ্ত, পাহাড়তলী থানার সাধারণ সম্পাদক নিশান রায়, শুভ নাথ, মোস্তফা প্রমুখ।

সমাবেশে গণসঙ্গীত ও কবিতা পরিবেশন করেন উদীচী, প্রমা, মিলেনিয়ার্স, কলরব। সিআরবিতে সকল বাণিজ্যিক স্থাপনা বাতিলের দাবি জানিয়ে সমাবেশে শেষে একটি মিছিল সিআরবি এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বৃটিশ ও পাকিস্তান উপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠ তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য যে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলো, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর পরেও সেই ব্যবস্থার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। শিক্ষা এখনো গরীব, মেহনতি ও সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের নাগালের বাইরে। সমাজ জীবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে বৈষম্য বাড়ার সাথে সাথে শিক্ষা ক্ষেত্রেও বৈষম্য বাড়ছে।

করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে অনেক শিক্ষার্থীর পরিবারে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বেতন-টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতা ছাড় দিচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ী, সরকারি চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণীর মানুষের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হলেও ‘অলাভজনক’ বিবেচনায় শিক্ষা ও শিক্ষার্থীগণ বিবেচনার বাইরেই থেকে গিয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ১৯৬২ সালে ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক, গণমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষানীতির দাবিতে ছাত্র গণআন্দোলন গড়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ৬২’র ১৭ সেপ্টেম্বর হরতাল আহবান করা হয়। হরতালের দিন সকালে মিছিলে ঢাকায় হাইকোর্ট মোড় পার হওয়ার সময় আইয়ুব সরকারের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে বাবুল, গোলাম মোস্তফা, ওয়াজিউল্লাহ শহীদ হন।

এই ঘটনায় দেশব্যাপী ছাত্র-জনতা ক্ষোভে ফুঁসে উঠলে তীব্র প্রতিরোধের মুখে আইয়ুব সরকার পিছু হঠতে বাধ্য হয়। সেই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক “শিক্ষা দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে এদেশের ছাত্র সমাজ।

  • # ১৭.০৯.২০২১ চট্টগ্রাম #