শিল্প সাহিত্য

ফাউজুল কবিরের কবিতা

ভিক্ষাবৃত্তি

আমার
কোনো উচ্চারণ ব্যর্থ নয়
সব মন্ত্র আমি জানি কুশলী রহস্য
প্রতিটি ধ্বনির শরীরেই আমি বাঁচি
প্রতিটি
রঙের ভেতরে পাবে আমার কণ্ঠের ছাপ
আমার
সব কবিতার কথা বনস্পতি হয়ে ওঠে
আসলে
যে চেনে
শব্দজাগরণ নীলিমার অর্থ — তার নাম শোক
আমার
সমস্ত শোকেরা চিরজীবী নক্ষত্রবাচক
আমার
প্রিয় শব্দগুলো জলেস্থলে মাছের সংসার
আমার
জীবনের অর্থ হচ্ছে স্রষ্টাদের অখিল বাগান
আমার
সমস্ত কবিতা স্বপ্নে স্বপ্নে রাত্রিদিন ভিক্ষাবৃত্তি
মুলত
ভিক্ষাবৃত্তি হলো মহৎ কবির কর্ম পুণ্যবান ।

নদী

ফাউজুল কবির

নদী হলে বাঁক থাকা চাই
নদী হলে জল থাকা চাই
নদী হলে থাকা চাই প্রাণ
জীবনের কাছে ভিক্ষা চাই একটি নদী
প্রবল গতির টানে চলা দূর-স্বপ্ন
পাথর ও নুড়ি সঙ্গী হবে – তার সাথে
ঝোপঝাড় লতা কারো স্মৃতি গল্পকথা
মাটির ক্রন্দন ভালোবাসা
অথবা ভাঙ্গন রিক্ত আশা সর্বনাশা
ভাষার একান্ত একটি সুর নিজস্বতা
সরোদের মতো দরদিয়া কথনের
হৃদয়ের নদী ইচ্ছা যার –গহনতা।
বাঁক থাকা চাই নদী হলে
জল থাকা চাই নদী হলে
নদী হলে থাকা চাই প্রাণ
বেগ থাকা চাই নদী হলে
ইচ্ছার দুর্মর স্রোত টেনে নিয়ে যাবে
মানব কল্লোল দূর লক্ষে
জনতাকে বলবে এই পথে যেতে হবে
ভিন্নপথ—নাই ভিন্নমত
তীব্র তীক্ষ্ণ স্রোত স্মরণীয় গড়ে তুলবে
পথের মহিমা শক্তিধর
শক্তিমান জানে সত্যবাক্য সুন্দরের
শক্তি তো সমুদ্রে জন্ম নেয় চিরকাল
বাঁক নিতে জানলে ধরা যায় সমকাল।
ফাউজুল কবিরঃ কবি, শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা