শিল্প সাহিত্য

অনন্ত শোকবার

-নাজিমুদ্দীন শ্যামল

তারপর ঝমঝমিয়ে ট্যাংক এসে ঢুকলো;
আর রাস্তায় রাস্তায় সারি সারি সৈন্য
বন্দুকের নল উঁচিয়ে রাতের অন্ধকারে
কেবল গুলি ছুঁড়েছিলো। আশেপাশের
বাড়িগুলো থেকে কেউ কেউ দেখেছিলো।
ভেবেছিলো হয়তো পাখি শিকারির দল
নেমেছে নগর জুড়ে। রাতের আঁধারে
নাগরিক পাখিগুলো তাই গৃহকোণে
চুপ চাপ লুকিয়ে পড়েছিলো। আর
যাহারা তোমার দলে ছিলো তারা
কেবল পায়চারি করেছিলো খবরের জন্য।
তারপর তারা গুলিতে বিদীর্ণ করেছিলো
তোমার বুক। সকলে খবরটা ছড়িয়ে গেলো
রাত শেষ হবার আগে। সকাল হতেই তারা
সকলে ছুটেছিলো মসনদের দিকে। তাদের
অনেকেই হৈ হৈ করে চিৎকার করলো আর
তোমার নিথর দেহ রক্তাক্ত; অনাদরে পড়ে রইলো!

যারা সকাল ভেবে হৈ চৈ করে উল্লাসে
মেতেছিলো এবং মসনদে মৌমাছির মতো
ঘুর ঘুর করেছিলো তারা বলেছিলো
চাঁদের আলোয় দিন হয়। অথচ
সেই রাতে রাতের কালোতে ডুবে গিয়েছিল
আলোর সূর্য। শেষ হয়ে গিয়েছিলো দিনের স্বপ্ন,
আগামীর আলো!

সেই রাতে তোমাকে খুন করেছে। খুন করেছে
তোমার রক্ত উত্তরাধিকার। সেই রাতের নাম
পনের আগস্ট, অনন্ত শোকবার।

নাজিমুদ্দীন শ্যামলঃ কবি ও সাংবাদিক