চলমান সংবাদ

সিআরবির বাইরে চমেকের মতো সরকারি হাসপাতাল চাই – সিপিবি

 চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত সিআরবি ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। একইসঙ্গে সিপিবির পক্ষ থেকে সিআরবির বাইরে চট্টগ্রাম শহরের অন্যত্র সরকারি উদ্যােগে হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানানো হয়েছে। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকালে নগরীর হাজারী লেইনে দলীয় কার্যালয়ে জেলা কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সভা থেকে এসব দাবি জানানো হয়েছে। সিপিবি, চট্টগ্রাম জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আব্দুল নবীর সভাপতিত্বে সভায় কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. শাহআলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা এবং সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মো. মছিউদ্দৌলা, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অমৃত বড়ুয়া, উত্তম চৌধুরী, নুরুচ্ছফা ভূঁইয়া বক্তব্য রাখেন।

সভায় সিপিবি নেতারা বলেন, সিআরবিতে হাসপাতল নির্মাণের যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তাতে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। জনমত গ্রহণ না করে সরকার সম্পূর্ণ কর্তৃত্ববাদী সিদ্ধান্তে এ উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রামবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। একমাসেরও বেশি সময় ধরে সিপিবিসহ প্রায় সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো সভা-সমাবেশ করে এ উদ্যােগ বাতিলের দাবি করে আসছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। অগণতান্ত্রিক সরকার তাদের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তে অনড় আছে। সিপিবি নেতারা আরও বলেন, চট্টগ্রাম শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। অব্যাহতভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়। নদী দখল হচ্ছে। এই শহর থেকে হারিয়ে গেছে জলাশয়। শিশুদের খেলার মাঠ হারিয়ে গেছে। অবসর সময়ে দু’দণ্ড শান্তির শ্বাস নেওয়ার কোনো জায়গা আজ আর এই শহরে অবশিষ্ট নেই। চট্টগ্রাম শহর এখন ইট-পাথরের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। এতকিছুর পরও চট্টগ্রাম শহরে শুধু একটি জায়গা আছে সিআরবি, যা চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্রে সর্বশেষ একমাত্র উদ্যান, যেখানে নানা বয়সী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ গিয়ে একটু প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে। অথচ এই সিআরবিকেও ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে।

সভায় আরও বলা হয়, সিআরবি এলাকা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত। এখানে মুক্তিযুদ্ধে ৯ জন শহীদের কবর আছে। হাসপাতাল হলে সিআরবিতে নতুন নতুন দালান, অবকাঠামো, দোকানপাট, পার্কিং, ফার্মেসি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের জন্য আবাসিক ভবনে ছেয়ে যাবে। পুরো এলাকা জঞ্জালময় ও কোলাহলপূর্ণ হয়ে উঠবে। শতবর্ষীসহ অন্তঃত ৩০০ গাছ কাটতে হবে। কাটতে না হলেও হাসপাতালের পরিবেশগত প্রভাবে এসব গাছ বেশিদিন টিকবে না। সিআরবি পরিণত হবে মরুদ্যানে। সভায় বলা হয়, চট্টগ্রাম শহরে আর বেসরকারি হাসপাতালের প্রয়োজন নেই। এখন প্রয়োজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো একটি অাধুনিক, উন্নতমানের প্রতিষ্ঠান, যেখানে গরীব মানুষ চিকিৎসা সুবিধা পাবে। সরকারি উদ্যােগে এমন একটি হাসপাতাল হোক সিআরবির বাইরে চট্টগ্রাম নগরীর যে কোনো স্থানে।

# ১৩.০৮.২০২১, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি #