চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে সংক্রমণ কমায় রোগীর চাপ কমেছে হাসপাতালে

– স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও সংক্রমণ বাড়ার শংকা

গত কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপও কমেছে অনেকটা। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগেই রোগীর অতিরিক্ত চাপের কারণে হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই হচ্ছিল না রোগীর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কঠোর লকডাউনের বাধ্যবাধকতার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও গণটিকাদানের কারণে সংক্রমণ কমছে। এখন লকাডাউন তুলে দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হবে আগের মতোই। না হলে আবারও বাড়বে সংক্রমণ। চলতি মাসের প্রথম দিনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে ৩শ’ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ছিল ৩০৮ জন। এখন সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় হাসপাতালটিতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৩শ’ শয্যার করোনা ওয়ার্ডে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছে ২৩৯ জন। কোভিড চিকিৎসার অন্যতম চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ১২৮ জন। অথচ ১৫৮ শয্যার হাসপাতালটিতে ক’দিন আগেও ১৬৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। সরকারি এ দুই হাসপাতাল ছাড়াও গত কয়েকদিনে নগরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও গত মাসের তুলনায় ধীরে ধীরে কোভিড রোগীর সংখ্যা কমেছে। তবে হাসপাতালগুলোর প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, সাধারণ শয্যায় কোভিড রোগী ভর্তি কমে এলেও খালি হচ্ছে না আইসিইউ শয্যা। সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেক হাসপাতালেই আইসিইউ শয্যার জন্য কেউ না কেউ অপেক্ষা করছেন। পরিস্থিতি আগের মতোই। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে চট্টগ্রামে সংক্রমণ হার কমেছে। আগে যেখানে ৩৩ থেকে ৩৭ পর্যন্ত উঠানামা ছিল, সেখানে বর্তমানে ৩০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। সংক্রমণ হার কমার কারণে রোগীদের হাসপাতালমুখী হতে হচ্ছে না। যারাই আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাসায় চিকিৎসা নিলেও চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।’ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রোগীর চাপ কমলেও আইসিইউ শয্যায় চাপের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই দেরিতে হাসপাতালে আসছেন। তাদের সকলেরই শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ার পর হাসপাতালে আসছেন। তারা কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর নিজেরাই ওষুধ সেবন করছেন। ফলে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে। তাই অনেকের হাইফ্লো অক্সিজেন, আইসিইউ ও ভেন্টিলেটরও প্রয়োজন হচ্ছে। তাই সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসা ও চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘন্টায় ২৫৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরে ৩৬৭ জন। উপজেলায় ২৪৯ জন। সংক্রমণ হার ২৪ শতাংশের কিছু বেশি। আগের দিন শনাক্ত হয়েছে ৫৮৯ জন। গত বুধবার শনাক্ত হয়েছে ৭৭২। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন মোট ১১১১ জন। এর মধ্যে ৬৪৩ জন নগরের। উপজেলায় মারা গেছেন ৪৬৮ জন। চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৮৪ জনের শরীরে। শনাক্তের মধ্যে নগরে ৬৯ হাজার ৪১ জন। উপজেলায় ২৪ হাজার ৮৪৩ জন।
# ১৩.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম #