মতামত

করোনার মত বড় দুর্যোগ মোকাবেলায় চাই সমন্বিত উদ্যোগ

– ডা: কাজী রকিবুল ইসলাম।

‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় করণীয়’ বিষয় নিয়ে প্রগতির যাত্রীর পক্ষ থেকে ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রণমেন্ট এর সাধারণ সম্পাদক ডা: কাজী রকিবুল ইসলাম এর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। সাংগঠনিক কাজের বাইরেও তিনি দেশের স্বাস্হ্যব্যবস্হা ও স্বাস্হ্যসেবা নিয়ে দেশের শীর্ষস্হানীয় পত্রিকায় কলাম লিখেন, টেলিভিশনের চ্যানেলেগুলোতে  বিভিন্ন টকশোতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

সাক্ষাৎকারটি গ্রহন করেছেন প্রগতির যাত্রী ডট কম এর প্রধান সম্পাদক উৎপল দত্ত। সহযোগিতায় ছিলেন প্রগতির যাত্রী ডট কম এর বার্তা বিভাগের দায়িত্বে নিয়েজিত সম্পাদক ফজলুল কবির মিন্টু ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য রবীন গুহ।

গত ৩০ জুলাই জুম এপসের মাধ্যমে গৃহিত দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি সংক্ষেপিত আকারে এখানে প্রকাশ করা হলো।

প্রগতির যাত্রী:

ক) করোনাজনিত কারনে বেশ কদিন ধরেই মৃত্যুসংখ্যা দুইশত বা ততোধিক। এরই মধ্যে সরকার লকডাউন উঠিয়ে নিয়েছে। আবার ঈদের পরেই আবার কঠোর লকডাউনের কথা বলছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার কৌশল হিসেবে ব্যাপারগুলোকে কিভাবে দেখছেন?

খ) লকডাউন কিম্বা শাটডাউন এর জন্য যে ধরনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি থাকা দরকার তা কি আমাদের দেশে বিদ্যমান। এই সময়ে সাধারণ দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রশ্নটি সরকারের কর্মসূচিতে কতটা গুরুত্ব পেয়েছে বলে আপনার মনে হয়? লক ডাউন শাটডাউন সফল করার জন্য  কি কি পদেক্ষেপ নেয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?

ডা: রকিবুল ইসলাম:  প্রথমেই প্রগতির যাত্রীকে ধন্যবাদ জানাই আজকের এই আয়োজনের জন্য। গতবছর ৮ মার্চ প্রথম করোনা সনাক্ত হওয়ার পর থেকেই নানাভাবে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। নানা পদক্ষেপের মধ্যে করোনার প্রথম ঢেউয়ের মোকাবেলা করা যায়। একসময় তা কিছুটা কমেও আসে। মানুষের মধ্যে এমন একটা ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়েছিল যে, এটা বড়লোকের অসুখ ও কেবলমাত্র বড় শহরগুলোতেই করোনার সংক্রমণ চলছে। আসলে তা নয়। আমাদের দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হবার পর থেকেই আমরা চিকিৎসকেরা, সচেতন মানুষেরা এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বলার চেষ্টা করা হয়েছিল যে, করোনা কেবল নগরকেন্দ্রিক তা নয়, এর সংক্রমণ সব জায়গায়ই হচ্ছে।

গত বেশ কিছুদিন ধরেই পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে ব্যাপকভাবে করোনা ছড়িয়ে যাবার পর আমাদের দেশেও  করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট ও পরবর্তীতে এখন লেমডা ভ্যারিয়েন্টও সারাদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, পৃথিবীর ১৩২টি দেশে ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমিত হবার প্রমান পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে বর্ডার এলাকায় জনগনের যাতায়াতের মাধ্যমে আমাদের দেশে এই ভাইরাসগুলোর প্রবেশ ঘটে। আমরা তখন বলেছিলাম, যতটুকু সম্ভব বর্ডার বন্ধ রাখা, সীমান্ত এলাকার জেলাগুলোতে  যারা ভারত থেকে দেশে প্রবেশ করে তাদেরকে এবং তাদের সাথে  সংস্পর্শে আসা সবাইকে করোনা পরীক্ষা করা, আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। যদিও দীর্ঘ বর্ডারের কারণে কাজটা কিছুটা কঠিনও বটে। তবুও কাজগুলো ঠিকমত করা গেলে, আমরা যারা চিকিৎসক বা সংক্রমণ নিয়ে কাজ করি বা, বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শকদের মতামতকে আরো অধিক গুরুত্ব দিয়ে পালন করা গেলে ভাল হতো। তবে সেগুলো যেভাবে প্রয়োজন ছিল সেভাবে করা যায়নি। রোগ নির্ণয়ের জন্য যতবেশি সম্ভব পরীক্ষা করানো দরকার। পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেসব এলাকায় সংক্রমণের মাত্রা বেশি সেই এলাকাগুলোকে মূল ভুখন্ড থেকে আলাদা করে রাখা। আমাদের দেশের জনসংখ্যার ঘনবসতি ও আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কাজটা বেশ কঠিন। তবে, সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, জনপ্রতিনিধি, যুব সমাজসহ সকলের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলার যে সুযোগ ছিল, তা করা যায়নি। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ভুটান, পাশ্ববর্তী দেশের কেরালাসহ যেসব দেশ অধিকসংখ্যক পরীক্ষা করা ও প্রতিরোধের জায়গাটাতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ফলেই করোনা নিয়ন্ত্রণে সফলতা পেয়েছে। আমরা এখনো যদি প্রতিরোধের ব্যবস্থা  যথাযথভাবে করতে না পারি শুধু চিকিৎসা দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ করে বা মৃত্যুসংখ্যা কমানো সম্ভব নয়। করোনা যদি গ্রামে-গন্জে এবং প্রত্যন্ত এলাকাসহ সব জায়গায় আরো ছড়িয়ে পড়ে, তবে আমাদের স্বাস্থ্য সেক্টরের সীমিত  সংখ্যক লোকবল, যন্ত্রপাতি, বাজেটসহ ইত্যাদি নিয়ে কোনভাবেই মোকাবেলা করা যাবেনা। তাই আমাদের জনবল বাড়াতে আরো বেশিসংখ্যক ডাক্তার, নার্স, টেকনিয়াশিয়ানসহ ও অন্যান্য সহযোগী কর্মীদের নিয়োগ দেয়া,যন্ত্রপাতি আইসিইউসহ অন্যান্য সক্ষমতা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বাড়ানোর আর কোন বিকল্প নেই।

প্রগতির যাত্রী: সরকার করোনার মোকাবেলার ক্ষেত্রে নানা বিষয়ের উপর জোর দিলেও শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নজরে আসছে না। এমনকি সময়মত মেডিকেল কলেজগুলোতে ফাইনাল পরীক্ষা না হওয়ার কারণে হাসপাতালে ইন্টার্ণী ডাক্তারের সংখ্যাও বাড়ছে না। এই ব্যাপারটা কিভাবে দেখছেন?

ডা: রকিবুল ইসলাম:  দেখুন, আসলে শিক্ষার্থীদের তো আর জোর করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরানো যাবেনা। সবার আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা জানেন, এই সময়ের মধ্যেই অসংখ্য ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অনেকেই মারাও গেছেন। বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ মেডিকেল ছাত্রদের দুই ডোজ টীকা দেয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা যায়, সামনে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো বিষয়টা সুরাহা হবে।

প্রগতির যাত্রী: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতে অসংখ্য প্রাণহানীর নেপথ্যের কারণ হিসেবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের মতামত পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ  করার মত গুরুতর অভিযোগ এসেছে। আমাদের দেশে সরকার করোনা মোকাবেলার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামতের কতটুকু সমন্বয় করতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করেন?

ডা: রকিবুল ইসলাম: আপনারা যারা গণমাধ্যমের সাথে জড়িত আছেন তারাও ব্যাপারগুলো চাক্ষুষ অবলোকন করছেন। কখনোও বিশেষজ্ঞদের মতামত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, কখনো বা সেভাবে হয়নি। তবে এবারে দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন সময়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রতি আগের চাইতে বেশিই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যেমন বিভিন্ন মহলের চাপ সত্ত্বেও কঠোর লকডাউনের মধ্যে গার্মেন্টস কারখানাগুলো  বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে সরকারকে স্বাস্থ্যের সাথে জড়িতদের অধিকতর গুরুত্ব দিতে, তাদেরকে জনগণের মাঝে কথা বলা, কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাদেরকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করা যাবেনা।

প্রগতির যাত্রী: এমন একটা সংকটাপন্ন অবস্থার মধ্যেই আজকে দুপুরের পরেই আবার সরকার গার্মেন্টস শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?

ডা: রকিবুল ইসলাম: এটা তো সবাই বুঝতে পারে। যেখানে রাষ্ট্রপতি নিজে বলছেন, সংসদ কাদের দখলে! রাজনীতি কাদের দখলে! বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদেরা সংসদে হতাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, আমাদের সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিদের অবস্থান কোথায়? এখানে নতুন করে বলার মত কিছুই থাকেনা। সহজেই বোঝা যায়, এইসব সিদ্ধান্ত কোথা থেকে আসে। কাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এরকমের সিদ্ধান্তগুলো দেয়া হয়। অস্বীকার করা যায়না যে, এই খাত থেকে বড় রকমের বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসে এবং দেশের জিডিপির ক্ষেত্রেও বিশাল একটা অবদান রয়েছে। তবুও দেশের অন্য খাতগুলোকেও তো বাঁচিয়ে  রাখতে হবে। সরকার বা প্রশাসন বিগত সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় নানা ঘোষণা দিয়েছেন, নিজেদের চিন্তার কথা বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত তার সাথে অবশ্যই সাংঘর্ষিক। এভাবে বারবার সিদ্ধান্ত বদল ভাল কিছু বয়ে আনবে না, বরং পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকেই নিয়ে যাবে।

প্রগতির যাত্রী: উন্নত দেশগুলো দ্রুতগতিতে ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে জীবন ও জীবিকার স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনার চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি পাশ্ববর্তী ভারতেও দ্বিতীয় ঢেউয়ের বড়রকমের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করে ইতিমধ্যেই প্রায় চল্লিশ কোটি ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে সেখানে প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে বলেই সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে। বাংলাদেশে নতুন করে করোনার টীকা আসা শুরু হয়েছে। সরকারও ইতিমধ্যে গণ টীকাদান  কর্মসূচী আবার চালু করেছে। বাংলাদেশে এভাবে টীকাদান চলতে  থাকলে আমরা আনুমানিক কতদিন সময় পরে দেশের করোনা পরিস্থিতির একটা মোটামুটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো?

ডা: রকিবুল ইসলাম: আসলে কবে নাগাদ সেটা বলা মুশকিল। তবে আমরা কতটা সবকিছু মেনে চলতে পারবো বা অন্যদের মানাতে পারবো তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। আমরা যদি সংক্রমণের উর্ধগতিকে ঢেউয়ের মত দেখি তবে দেখা যাবে এই ঢেউ নিচের দিকে নামতে তিন থেকে চার মাস চলে যায়। আর যদি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে সময়টা আরো প্রলম্বিতও হতে পারে। যদি বেশি করে টীকা নেয়া যায় তবে ভাল হয়। কারণ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, যারা টীকা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার কম এবং  কিছু ব্যতিক্রম বাদে আক্রান্ত হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বড় রকমের ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছেনা। আমরা সেটা সেভাবে করতে পারছিনা আবার সবাইকে মাস্ক ব্যবহারেও যথেষ্ট সচেতন করতে পারছিনা। এসব কিছু নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে সংক্রমণ কমিয়ে আনা যাবেনা। দু-একটা খাত চালু করলেও এখন যেভাবে চলছে, তাতে জীবন-জীবিকার স্বাভাবিক অবস্থায় ও ফিরে যাওয়া সম্ভব হবেনা। তাই টীকা ও টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে ও মাস্ক পরার ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে। সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো বেশি পরিমান মাস্ক জনগনের মাঝে সরবরাহ করার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সবাই মাস্ক পরতে বাধ্য হয় ও উদ্বুদ্ধ হয়।

প্রগতির যাত্রী: দুর্যোগ মোকাবেলার  ক্ষেত্রে আমাদের রয়েছে অতীতের অনেক সফল অভিজ্ঞতা। দুর্যোগ মোকাবেলার দেশীয় মডেল দেশে-বিদেশেও বিভিন্ন সময় প্রশংসিতও হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি রাজনীতিবিদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয় সাধন করে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামাজিক উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এছাড়াও করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে  অতীতের অভিজ্ঞতা  কাজে লাগানো যেতে পারে। এ ব্যাপারে আপনি কী মনে করেন?

ডা: রকিবুল ইসলাম:  সবাস্থ্য সেবাকে যদি একেবারেই জনগণের কাছে নিয়ে যেতে চাই তবে জনপ্রতিনিধি, জনগণ ও সবাস্থ্য কর্মীদের কাজের সমন্বয় করতে হবে। প্রশাসনের ভুমিকা থাকবেই, কিন্তু শুধু প্রশাসনের ভুমিকাই যথেষ্ট নয়। সবাইকেই কাজে লাগাতে হবে। যেমন, মসজিদের ইমাম যখন বলেন, তখন নামাজীরা মনোযোগ দিয়ে শোনেন, শিক্ষকদের কথা ছাত্ররা শোনেন, একজন ওয়ার্ড কমিশনারের কথা তার স্থানীয় লোকজন শোনেন। একইভাবে অন্যান্য সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগনের অংশগ্রহন এবং স্বাস্থ্যখাতের  লোকজনের নিজেদের মত করে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিতে না পারলে এত বড় দুর্যোগ মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়াও গোটা সবাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে একটা আমূল পরিবর্তন করা চাই।

  প্রগতির যাত্রী:  অনুগ্রহ করে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে করোনায় সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে  আপনার পরামর্শগুলো জানাবেন।

ডা: রকিবুল ইসলাম:  করোনার মোকাবেলার জন্য প্রথমেই দরকার যতটা সম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলা, অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা না করা, সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে আনতে হবে। বাইরে থেকে হাত ধুতে হবে, নাকে বা মুখে হাত দেবার আগে হাত ধুয়ে ফেলা বা সেনিটাইজ করতে হবে। অবশ্যই ঘরের বাইরে সর্বত্র মাস্ক ব্যবহার করতে হবে সবাইকে। যেসব খাবার থেকে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, সেসব খাবার গ্রহণের প্রতি জোর দিতে হবে। নিয়মিত বিভিন্ন ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারে। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারকে নিয়মিত রেশনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে, তারা যাতে তাদের প্রয়োজনীয় খাবারগুলো পায়। লকডাউনের সময় যদি মানুষের খাবার ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়, তারা কম বাইরে বের হবে এবং লকডাউনও বেশি কার্যকর হবে। সংকটকালীন সময়ে রেশনিং সুবিধা চালু  রাখার জন্য আমাদের সরকারের  রিজার্ভে যে টাকা রয়েছে তা কাজে লাগানো যেতে পারে, যাতে করে মানুষকে বাঁচানো যায়। এখন সবচেয়ে বড় দরকার মানুষকে বাঁচানো। তার সংগে কৌশলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখে জীবিকা যতটুকু সম্ভব কার্যকর রাখা।

প্রগতির যাত্রী: আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও পরামর্শের জন্য প্রগতির যাত্রী ডট কম এর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

ডা: রকিবুল ইসলাম: প্রগতির যাত্রী ও আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ।

সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটির ইউটিউব লিংক সংযোজিত হলো।

https://youtu.be/v5TN_DchrHQ