চলমান সংবাদ

করোনায় গার্মেন্টস শ্রমিক হয়রানির জন্য দায়ীদের শাস্তি, শ্রমিকদের যাতায়াত ব্যায় ও ঝুঁকি ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়েছে স্কপ

করোনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের হয়রানির জন্য দায়িদের শাস্তি, শ্রমিকদের যাতায়াত ব্যায় ও ঝুঁকি ভাতা প্রদান, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং চাকরিরত শ্রমিকের করোনা সংক্রমণে মৃত্যুতে সরকারী কর্মচারীদের সমান ক্ষতিপুরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ। তারা করোনাকালে শ্রমিক ছাঁটাই কিংবা শ্রমিকদের বেতন-ওভারটাইমের পাওনা থেকে কোন ধরনের কর্তন প্রচেষ্টা মেনে নেওয়া হবেনা বলে সাবধান বানী উচ্চারণ করেন। ৬ আগষ্ট ২০২১, সকাল ১১টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে স্কপ নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান। স্কপ যুগ্ম সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ চৌধুরী এর সভাপতিত্বে আহসান হাবিব বুলবুল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের অর্থ নম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক লীগের ট্রেড ইউনিয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ হোসাইন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ইন্ডাষ্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিল (ওইঈ) এর সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা জাতীয় মঞ্চের আহবায়ক আবুল হোসেন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার। সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহবায়ক রাশেদুর রহমান রাশেদ, বাংলাদেশ হোটেল-রেস্তোরা-সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী ফয়েজ আহমেদ, ও.এস.কে গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ইয়াসিন মিয়া, সাধারন সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের যুগ্ম সম্পাদক সরদার খোরশেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কনক বর্মন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সঙ্ঘের সাবেক সভাপতি খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের দপ্তর সম্পাদক সাহিদা পারভিন শিখা, প্রচার সম্পাদক মোবারক হোসেন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল হাসান নয়ন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ গণপরিবহন বন্ধ রেখে কারখানা খোলার মত দায়িত্বহীন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ঈদের অনেক আগেই ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত ১৪ দিন কঠোর লকডাউন চলাকালে সকল শিল্প কারখানা বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেয় হয়। ফলে শ্রমিকরা ঈদের ছুটিসহ ১৭ দিনের ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান না করে গ্রামের বাড়িতে যাবে এটাই স্বাভাবিক। এই অবস্থায় কর্মস্থলে অবস্থানকারী শ্রমিকদের দিয়ে উৎপাদন চালানোর প্রতিশ্রুতিতে কারখানা খোলার অনুমোদন নিয়ে সেই শর্ত প্রকাশ না করে একদিনের নোটিশে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত প্রচার করা মালিকদের পরিকল্পিত প্রতারণামূলক কৌশল। আর ১লা আগষ্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খোলার নির্দেশনা দিয়ে ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে শর্তের কথা উল্লেখ না করে কিংবা গণপরিবহন চলাচল সম্পর্কিত নির্দেশনা না দিয়ে সরকারও চুড়ান্ত দায়িত্বহীন আচরন করেছে। পোষাক কারখানার মালিকরা জানেন যে কারখানা খোলার ঘোষণা দিলে শ্রমিকরা চাকরি হারানোর ভয়ে যেকোনমূল্যে কর্মস্থলে উপস্থিত হবে। তাই তারা ৩১ জুলাই রাতের আগে প্রকাশ্যে বলেননি যে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে না পরলেও চাকরি হারানোর ভয় নেই, বরং তারা ফেসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়ে. ফোন করে এবং ম্যসেজ পাঠিয়ে সকল শ্রমিককে ১ আগষ্ট থেকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে শ্রমিকদের একদিনের মধ্যে নৌকা, ফেরি, ট্রাক, কভারড ভ্যান, পিকআপ সহ বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনে করে, পায়ে হেটে অবর্ণনীয় কষ্ট এবং তিন চারগুন বেশি খরচ করে কর্মস্থলে আসতে হয়েছে। কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় নাই। ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। শ্রমিকদের এই হয়রানি আর ঝুঁকির দায় মালিকরা এড়াতে পারেনা। আর মিথ্যা তথ্য প্রদানকরে শ্রমিকদের হয়রানীর জন্য দায়ীদের শাস্তি না হলে শিল্প মালিকদের সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করার প্রবনতা আর শ্রমিকদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরী করবে। নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, মালিকরা লকডাউনের কারণে বন্ধের দিনগুলির মজুরি কেটে নেওয়ার চক্রান্ত করছে, বিভিন্ন কারখানায় নানা অজুহাতে অনেক শ্রমিককে কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, এই ধরণের হীন প্রচেষ্টা স্কপ সহ্য করবে না। চাকরিরত শ্রমিকের করোনা সংক্রমণে মৃত্যুতে সরকারী কর্মচারীদের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান করা এবং করোনাকালে যাতায়াতের অতিরিক্ত ব্যায় প্রদানের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন মালিকদের যেকোন অপচেষ্টায় উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় তাদেরকেই বহন করতে হবে।