চলমান সংবাদ

সংকটে সীমিত হলো চসিকের টিকা কার্যক্রম ওয়ার্ড ভিত্তিক টিকা প্রদান ছয়দিনের পরিবর্তে একদিন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আগামী ৭ আগস্ট থেকে ছয় দিনব্যাপী ওয়ার্ড পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে টিকা দেয়ার কথা থাকলেও, টিকা স্বল্পতার কারণে এই কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র আগামী ৭ আগস্ট (শনিবার) একদিনের জন্যই ওয়ার্ড পর্যায়ের টিকাদান ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের ৩টি করে টিকা কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। বুধবার (৪ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৭ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম টিকা স্বল্পতার কারণে আপাতত সীমিত করা হয়েছে। ৭ আগস্ট শুধু একদিন প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা সভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। অনেক চেষ্টার পরেও এটা পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, আগামী ১৪ আগস্ট থেকে টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে এ কর্মসূচি পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। চসিক এলাকায় গণটিকা কর্মসূচি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। টিকা পেতে প্রতিটি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যে নিবন্ধন করা কয়েক হাজার মানুষ এই একদিনে টিকা পাবেন কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে হাজার হাজার চিকা প্রত্যাশী মানুষ। চসিকের পক্ষ থেকে ছয়দিনে দেড় লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনার কথা থাকলেও সেটি আর হচ্ছে না। বরং শুধুমাত্র একদিনের এ কর্মসূচিতে মাত্র ৩৬ হাজার ৯০০ মানুষ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। তবে চসিক সূত্র জানায়, ৭ আগস্ট শুধু একদিন প্রতিটি টিকাকেন্দ্রে অগ্রীম রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ, নারী ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিয়ে টিকা দেওয়া হবে। পরিবর্তিত টিকা কর্মসূচি নিয়ে চসিক মেয়র রেজাউল করিম আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় সভা ডেকেছেন। এতে সরকারি নির্দেশনার আলোকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া চসিকের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার থেকে স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে সরবরাহ করা ফরমে আঠারোর্ধ্ব যে কেউ টিকার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আঠারোর্ধ্ব কারো এনআইডি না থাকলেও জন্ম নিবন্ধন সনদের মাধ্যমে তারা টিকা নিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে এনআইডি ছাড়া যারা টিকা নিবেন তারা সনদ সংগ্রহ করতে পারবেন না। এসব বিষয়ে চসিক’র ওয়ার্ড কাউন্সিলররা সদুত্তর দিতে পারছেন না। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি ও চসিক’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা সিভিল সার্জন বলেন, সরকারের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা টিকা কর্মসূচি সীমিত করে এক দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার যদি নির্দেশনা আসে তাহলে আবার বাড়ানো হবে। আপাতত একদিন আগামী শনিবার (৭ আগস্ট) একদিন নগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে নগরের প্রতি ওয়ার্ডে ৩টি কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। ইউনিয়নের কেন্দ্রে ৬০০ জনকে। তিনি জানান, বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। শুধু সিটি কর্পোরেশন এলাকাই নয়, গ্রাম পর্যায়ে শনিবার থেকে সপ্তাহে তিনদিনের জন্য গণটিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটিও আর হচ্ছে না। তাও একদিনের জন্য হবে। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে সর্বমোট ২০০ টিকা কেন্দ্রে প্রায় চার লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হবে। চসিক’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুধুমাত্র শনিবার ৪১ ওয়ার্ডে ৩ কেন্দ্রের মাধ্যমে সর্বমোট ৩৬ হাজার ৯০০ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। এদিন ছাড়া আপাতত আর অন্য কোন দিন টিকাদান হচ্ছে না। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। এর আগে গত ১ আগস্ট এক সভায় চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছিলেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে দৈনিক ৬০০ করে পরবর্তী ছয়দিনে প্রায় দেড় লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে চসিক। প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি করে বুথে প্রতিদিন ২০০ করে কমপক্ষে ৬০০ ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
# ০৫.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম #