মতামত

সি আর বি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্তে তরুণ প্রজন্মের প্রতিক্রিয়া

-সিআরবি এলাকায় কোন স্থাপনা চাই না

– আদিবা তাসনিম বানু

সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর চট্টগ্রামবাসী

সাগর, নদী আর পাহাড়ের এক অপূর্ব সমারোহ যেন বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। এমন সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ বিশ্বের আর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। মন মাতানো অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারনে চট্টগ্রামকে প্রাচ্যের রানী বলা হলেও বর্তমানে তার সৌন্দর্য যেন একে একে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তোলা হয়েছে। ছোটদের খেলার মাঠ দখল করে বড় বড় দালান কোঠা  বানানো হয়েছে। ফলে ক্লান্তি কাটানোর জন্য মানুষ দু-দন্ড  সময় কাটাবে কিংবা বুক ভরে নিঃশ্বাস নেবে এমন উন্মুক্ত পরিবেশ অবশিষ্ট নেই প্রাচ্যের রানী খ্যাত  এই  চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের মানুষের নিঃশ্বাস নেয়ার সবুজে আবৃত শেষ জায়গাটুকুন যেন সিআরবি এলাকা। নানা প্রজাতির গাছগাছালি, পিচঢালা আঁকাবাঁকা রাস্তা, ছোট বড় পাহাড়-টিলা সব মিলিয়ে মন জুরানো এক প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে সিআরবি এলাকায়। নগরবাসী স্থানটিকে চট্টগ্রামের ফুসফুস বলে থাকেন। কিন্তু এখানে একটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করে সেই ‘ফুসফুস’ ধ্বংসের উদ্দ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

সিআরবি এলাকাটি এমন একটি জায়গা যেখানে দিন শেষে মানুষ গাছের নিচে বসে গল্প করতে আসে। এখানে মানুষ বুক ভরে বাতাস নেয়। এখানে খোলা আকাশের নিচে বসে সবুজ গাছপালার সৌন্দর্য্য মানুষ অনাবিল তৃপ্তি ও শান্তি পায়। এই গাছপালা থেকে মানুষ অক্সিজেন পায়। এই গাছপালাগুলো যদি কেটে ফেলে অক্সিজেনের সংকট হবে। কিন্তু মানুষকে বাঁচতে হলে অবশ্যই অক্সিজেনের কোন বিকল্প নেই।

তাছাড়া গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখলে যেকোন মানুষের মন ভালো হয়ে যায়। তাই প্রকৃতিকে ধ্বংস করার অর্থ হচ্ছে, মানুষের মনকে হত্যা করা। মানুষ ছাড়া প্রকৃতি বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু প্রকৃতি ছাড়া মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার স্বার্থে সিআরবি এলাকা কিছুতেই ধ্বংস করতে দেওয়া যাবে না। চট্টগ্রামে ঢাকার মতো রমনা পার্ক নেই, বোটানিক্যাল গার্ডেন নেই। গাছগাছালিতে আচ্ছাদিত এরকম পরিসরটিই যদি না থাকে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? চট্টগ্রামে অনেক খালি জায়গা আছে, প্রয়োজনে সেখানে হাসপাতাল করা হোক। কিন্তু কোনভাবেই সিআরবি এলাকায় নয়। যেকোনো মূল্যে সিআরবি এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। সিআরবি এলাকায় কোন স্থাপনা করতে দেয়া যাবেনা।

আদিবা তাসনিম বানু: ৭ম শ্রেণির ছাত্রী, সেন্ট মেরিস স্কুল, চট্টগ্রাম