চলমান সংবাদ

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে শঙ্কায় আড়তদাররা

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে শঙ্কায় আছে চট্টগ্রামের আড়তদাররা। নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে তারা সংগ্রহ করেছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ চামড়া। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে তারা। অন্যদিকে চামড়া প্রক্রিয়ায় খরচ ও সিনথেটিকের প্রচলন বেড়ে যাওয়ায় কাঁচা চামড়ার ব্যবসায় ধস নামার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, করোনা মহামারির মধ্যেও এখানকার অর্ধ শতাধিক ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহে লগ্নি করেছে অন্ততঃ ২৫ কোটি টাকা। কিন্তু এবারও ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে তারা শঙ্কায় আছে। এর অন্যতম কারণ হলো চট্টগ্রামে ট্যানারির সংখ্যা কমতে কমতে ২২টি থেকে একটিতে নেমেছে। তাই আড়তদাররা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের ওপর। বেশিরভাগ সময় তারা বাকিতে চামড়া কিনে পরে ন্যায্যমূল্য দেয় না। এরপরও পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়ায় কিছুটা আশার আলো দেখছে চট্টগ্রামের চামড়া ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ট্যানারি মালিকদের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। আশা করি, আগে যে সমস্যা ছিল সেটা এবার কেটে যাবে। তারা আমাদের সহযোগিতা করবে। বাকিতে চামড়া দেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, লবণজাত করে চামড়া দুই থেকে আড়াই মাস রাখা যায়। এরপর চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যায়। তখন ট্যানারি মালিকরা নেয় না। এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ চামড়াশিল্প সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তারিকুল খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পর্যায়ে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায় চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। তাই অনেকে সংগ্রহ করার পরও বিক্রি করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হন। চামড়া ব্যবসার বর্তমান অবস্থার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে চামড়া ব্যবসার অবস্থা এক কথায় বললে ভালো না। কারণ আমরা অধিকাংশ মানুষই চামড়াজাত পণ্য আগের মতো ব্যবহার করি না। সবাই চামড়াজাত পণ্যের পরিবর্তে সিনথেটিক পণ্য ব্যবহার করছে। পাশাপাশি কাঁচা চামড়ার দাম কমলেও, অন্যান্য খরচ যেমন কেমিক্যালের দাম, শ্রমিকের বেতন, বিদ্যুৎ, পরিবহন খরচ ইত্যাদি অনেক বেড়েছে। তিনি আরও জানান, চামড়াশিল্পে কমপ্লায়েন্স বিষয়ে আন্তর্জাতিক নজরদারি বেড়েছে। আমাদের অধিকাংশ তরল বর্জ্য শোধনাগার মানসম্মত নয়। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ এখানে তৈরি করা হয়নি। সুতরাং অধিকাংশ ট্যানারিতে প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্সের অভাব। তাই আমরা আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কোম্পানির কাছে চামড়া বিক্রি করতে পারছি না। ফলে চামড়ার ভালো মূল্যও পাচ্ছি না। এ ব্যবসার ভবিষ্যত কেমন দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, চামড়া ব্যবসায় ধস সামলাতে প্রয়োজন কমপ্লায়েন্স মেনটেইন করা। এটি ঠিক করাটা সহজ নয়। কিন্তু করতে হবে। অন্যথায় আমাদের চামড়াশিল্পের অবস্থাও রাশিয়া কিংবা আর্জেন্টিনার মতো হবে। ওখানে এমনও হয়েছে যে কাঁচা চামড়া যদি কেউ ফ্রিতে নিয়ে যায় তাহলে মাংস কারখানাগুলো ডাম্পিং-এর খরচ থেকে বেঁচে যায়।
# ২৪.০৭.২০২১ চট্টগ্রাম #