চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া

১৭ শর্তে স্থায়ী-অস্থায়ী ৬টি পশুর হাট বসবে চট্টগ্রামে করোনা মহামারির কারণে অনলাইনে কোরবানির পশু বেচা-কেনায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই হাটে যেতে চান না। অনলাইনে পছন্দের কোরবানির পশু কিনে নিচ্ছেন। সরকারিভাবেও এবার অনলাইনে কোরবানির পশু ক্রয়ে ক্রেতাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যদিও চট্টগ্রামে ১৭ শর্তে বসছে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট। অন্যান্য বছর নগরের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী হাটের ইজারা দেয় সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু এবার জেলা প্রশাসন তিনটি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে। এছাড়া স্থায়ী তিনটি বাজারে সারাবছরই পশু বেচাকেনা হয়। গরুর বাজার অনুমোদনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধি মানার ১৭টি শর্ত দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার কারণে এবার বাজারে গিয়ে গরু কেনা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। গত বছরও করোনার মধ্যে নগরের গরুর হাটগুলোতে অতিরিক্ত জনসমাগম হয়। উপেক্ষিত ছিল স্বাস্থ্যবিধি। এবারও যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে করোনার সংক্রমণ ছড়াবে ভয়াবহ আকারে। তাই অনলাইনে গরু কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। লকডাউনের কারণে বাজারে পর্যাপ্ত গরু পাওয়া যাবে কি না, নাকি গত বছরের মতো শেষ বাজারে গরুর সংকট দেখা দেবে- তা নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যতই নিয়ম বেঁধে দেওয়া হোক না কেন মানুষ তা মানবে না। আর এত বড় একটা কর্মযজ্ঞ সামলানো কঠিন বিষয়। এজন্য অনলাইনে গরু কিনতে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজনে অনলাইনে গরু পছন্দ করে পরিবারের দুই-তিনজন সদস্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরু দেখে আসতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন অ্যাগ্রো ফার্মে গিয়ে গরু পছন্দ করা যায়। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানায়, চট্টগ্রামে অনলাইনে প্রায় ৩৮ হাজার কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে। লকডাউনের কারণে ক্রেতারা বেশি সাড়া দিচ্ছে। আবার খামারিরাও বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। তবে গত বছর অনলাইনে বেচাকেনায় বেশকিছু প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। বিকাশে গরু বিক্রির টাকা নিয়ে পরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতে ক্রেতারা অনলাইনে পশু কেনা নিয়ে সর্তক রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রিয়াজুল হক বলেন, কয়েক বছর ধরে অনলাইনে কোরবানির গরু বিক্রির বিষয়টি সামনে এসেছে। অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনায় বেশ সাড়া পড়েছে। সামনে বিক্রি আরো বাড়বে। এবার বাজারে কোরবানির গরুর সংকট হবে না। কিন্তু করোনার সংক্রমণ যদি আমরা কমাতে চাই, তাহলে অনলাইনে গরু বিক্রির ওপর জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ খামার থেকেও গরু কিনছে। গরু কিনে ওই খামারেই রেখে দিচ্ছে। কোরবানির আগের দিন নিয়ে আসবে। এখন যে হারে গরু বিক্রি হচ্ছে, তাতে প্রায় ৬০ শতাংশ গরু বেচা-কেনা হয়ে যাবে। বাকি ৪০ শতাংশ বেচা-কেনা হবে বাজার থেকে। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সেজন্য ইজারাদাররা মাইকিং করবে। ক্রেতাদের প্রতি পরামর্শ হলো, বাজারে অতিরিক্ত লোক আনার দরকার নেই। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবার মাস্ক পরা, হাটে প্রবেশ ও বহির্গমনের আলাদা পথ, বৃদ্ধ ও শিশুদের হাটে আসতে নিরুৎসাহিত করাসহ ১৭টি শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব শর্তে হাটগুলো শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১০ দিনের জন্য বসার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই হিসাবে আগামী ১২ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত নগরের ওই তিন জায়গায় অস্থায়ী হাট বসবে। তিনটি অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট হলো- কর্ণফুলী পশুর হাট (নূর নগর হাউজিং), সল্টগোলা ক্রসিং পশুর হাট এবং পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে খালি মাঠের গরুর হাট এবং তিনটি স্থায়ী হাট হলো- সাগরিকা গরুর বাজার, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। এর বাইরে সিটি কর্পোরেশন পতেঙ্গা স্টিল মিল বাজার, পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (কাঠগড়), মাদারবাড়ি লেভেলক্রসিং-সংলগ্ন বালুর মাঠ, কালুরঘাট ব্রিজের উত্তর পাশে মাঠের খালি জায়গাসহ সাত জায়গায় হাট বসানোর অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এ তিন জায়গায় পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। # ০৫.০৭.২০২১ চট্টগ্রাম #