চলমান সংবাদ

দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিতে নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম

-আইটি বিশেষজ্ঞ গ্রেপ্তার

আল ইসলামের আইটি বিশেষজ্ঞ সাখাওয়াত আলী লালু (৪০)

দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম জঙ্গি অপতৎপরতা চালাচ্ছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে দেশের জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পানা করছে সংগঠনটি। ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে নিজেদের সংগঠিত করে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটাতে বিভিন্ন নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সংগঠনটি। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) বিশেষজ্ঞ সাখাওয়াত আলী লালু (৪০)কে গ্রেপ্তার পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সিরিয়াফেরত জঙ্গি নেতা সাখাওয়াৎ চার বছর আগে বাংলাদেশ থেকে গিয়ে সিরিয়াযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। শুক্রবার (১১ জুন) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জিহাদি বইপত্র, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ তাকে গ্রেপ্তার করে নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। শনিবার (১২ জুন) বিকেলে সিরিয়াফেরত জঙ্গি সাখাওয়াত আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ খুলশী কেন্দ্রীয় আহলে হাদীস জামে মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নগরীর দামপাড়া এম এম আলী সড়কের বাসিন্দা শেখ মো. শমসের আলীর ছেলে। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, সাখাওয়াত আলী ২০১২ সালে তার ভায়রা ভাই মো. আরিফ মামুনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হন। সংগঠনটির নেতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া, মনসুরাবাদ এলাকার শফিক হুজুর, লালখান বাজার এলাকার এসির দোকানের কর্মচারী ওমর ফারুকদের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আনসার আল ইসলাম’র সদস্যদের সংগঠিত করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। গ্রেপ্তার লালু বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসে বিভিন্ন প্রকার জিহাদি কার্যক্রম প্রচারের কাজে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসাবে নিয়োজিত ছিল। জিহাদে অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে ২০১৭ সালে তুরস্ক যান সাখাওয়াত। তুরস্ক থেকে অবৈধপথে সীমান্ত অতিক্রম করে সিরিয়ায় প্রবেশ করে ৬ মাস ‘হায়াত তাহরীর আরশাম’ এর কাছে ভারি অস্ত্রশস্ত্রের প্রশিক্ষণ নেন এবং সিরিয়ার ইদলিব এলাকায় ছয় মাস প্রশিক্ষণ শেষে ইদলিব এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সিরিয়া সীমান্ত অতিক্রম করে তুরস্ক হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশ করেন। এরপর ইন্দোনেশিয়া হতে শ্রীলংকা হয়ে পুনরায় ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে বসবাস করেন। ইন্দোনেশিয়ায় থাকাকালে তিনি জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। সর্বশেষ গত ২২ মার্চ দেশে ফিরে তিনি ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শ প্রচারের মাধ্যমে নিজেদের সংগঠিত করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটাতে বিভিন্ন নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সংগঠনটি। সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তার গতিবিধি নজরদারি করে তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি নাশকতা চালানো বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রশিক্ষন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বিন্যাসে প্রচারের কাজে নিয়োজিত ছিল। সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাছিব খান বলেন, আনসার আল ইসলামের আইটি বিশেষজ্ঞ সাখাওয়াত সিরিয়া থেকে চট্টগ্রামে আসার খবরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তার কাছ থেকে বিভিন্ন জিহাদি কাগজপত্র, ১টি পাসপোর্ট, ১টি মোবাইল ফোন, ১টি ট্যাব ও ১টি মিনি নোটবুক জব্দ করা হয়েছে। খুলশী থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরই মধ্যে তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এসআই রাছিব খান বলেন, ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসেন মো. রেজার আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাকে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রিমান্ডে তার কাছ থেকে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। এই নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের আরও সক্রিয় কর্মী যারা আছেন তাদেরকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হবে পুলিশ।’ # ১২.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম