চলমান সংবাদ

সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় বন্দরনগরী প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন

-তিন সংস্থাকে তলব করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। তারপরও গত ৬ জুন মাত্র ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ডুবে যায় চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা। প্রতি বর্ষার মতো এবারের প্রথম বৃষ্টিপাতেও জলদুর্ভোগ, জলজট ছিল নগরবাসীর করুণ নিয়তি। নগরের এই করুণ নিয়তির বিষয়টি এবার ভাবিয়ে তুলেছে খোদ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়কেও। প্রায় ৩ বছর প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান থাকার পরও কেন জলাবদ্ধতা সমস্যার কোন উন্নতি হয়নি? তাই জলাবদ্ধতা সমস্যা মূল কারণ কি? বর্তমানে চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতিই বা কতটুকু হয়েছে?-তার সম্যক বিষয় জানতে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পানিসম্পদ উন্নয়ন বোর্ডকে তলব করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৩ মুহাম্মদ শাহীন ইমরান স্বাক্ষরিত ঐ চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরের প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে আগামী ১৬ জুন বুধবার একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবেরা অংশ নেবেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের পরিচালকদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে ভার্চুয়াল আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) দুটি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন একটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড একটিসহ মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। সিডিএ গৃহিত ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী- ৩৪ ইসিবি। অন্য প্রকল্পগুলো স্ব স্ব সংস্থা সরাসরি বাস্তবায়ন করছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম বলেন, বর্ষার আগে থেকেই নগরজুড়ে জোর গতিতে চলছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। ৩ ফুটের বড় নালাগুলো সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিস্কার করার কথা। তবে নগরীর অনেকগুলো খালে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে গেছে। আমরা সেগুলোও পরিস্কার করছি। আমি নিয়মিত অনেকগুলো নালা,খাল পরিদর্শন করছি।

সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও নির্বাহি প্রকৌশলী আহমেদ মঈনুদ্দিন বলেন, জলাবদ্ধতা সংকট থেকে মুক্ত হতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের বড় কাজ খাল খনন ও স্লুইস গেট নির্মাণ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। চাক্তাই-রাজাখালী খালসহ বিভিন্ন খালের মুখে দেয়া বাঁধগুলো অপসারণ করে দেয়া হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ’র আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন , রাস্তা থেকে পানি খালে প্রবাহিত হওয়ার জন্য ২১টি পয়েন্টে নতুন ড্রেন করা হয়েছে। আরও ৪০টি ড্রেন করা হবে। তখন আর পানি সড়কে থাকবে না। ছোট ড্রেনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। সিটি কর্পোরেশনকে সেটি আন্তরিক ভাবে করতে হবে। তাছাড়া ভারী বৃষ্টিতে নগরের কোথাও জলজট হলে সেনাবাহিনীর কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত রয়েছে। # ১১.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #