চলমান সংবাদ

অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চা রফতানি করাও সম্ভব : বাণিজ্যমন্ত্রী

আগামী ৪ জুন প্রথম ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন করা হবে

 নিজস্ব প্রতিবেদক : অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চা রফতানি করাও সম্ভব জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, চা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রফতানি পণ্য। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চা’র বিপুল চাহিদা রয়েছে। চা’র উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার খুব আন্তরিক। দেশে চায়ের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এই উৎপাদন আরো বাড়াতে সরকার কাজ করছে। মন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চা রফতানি করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১৯৯৬ সাল থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল পঞ্চগড়ে সমতল ভূমিতে চা উৎপাদন শুরু হয়। দিন দিন সেখানে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার সেখানে চা উৎপাদনে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে। চা শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। বুধবার (২ জুন) সচিবালয়ে নিজ অফিস কক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ড’র উদ্যোগে ‘১ম জাতীয় চা দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত জুম প্লাটফর্মে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থেকে বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেন। বঙ্গবন্ধু চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এবং পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে চা শিল্পের উন্নয়নে অবিস্মরণীয় অবদান রাখেন। মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে চা শিল্পে তাঁর অসামান্য অবদান এবং চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তার যোগদানের তারিখ ৪ জুনকে স্মরণীয় করে রাখতে ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে চা শিল্পের ভূমিকাকে বিবেচনায় নিয়ে গত ২০ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, চা শিল্পের প্রসার’ স্লোগান নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড’র উদ্যোগে আগামী ৪ জুন প্রথম ‘জাতীয় চা দিবস-২০২১’ উদযাপন করা হবে। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এদিন সকাল ১০টায় জাতীয় চা দিবসের উদ্বোধন করা হবে এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে দিনব্যাপী চা প্রদর্শন করা হবে। চা প্রদর্শনীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন করবে। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু প্যাভেলিয়ন এবং শ্রীমঙ্গলের টি মিউজিয়ামে রক্ষিত চা শিল্পের দুর্লভ জিনিসপত্র প্রদর্শন করা হবে। তিনি বলেন, ঢাকার পাশাপাশি ৪ জুন জাতীয় চা দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে দেশের চা উৎপাদনকারী অঞ্চল চট্টগ্রাম, সিলেট ও পঞ্চগড়ে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। চা বোর্ডের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ বিটিআরআই-তে এবং উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, একসময় চা বাংলাদেশের অন্যতম রফতানি পণ্য ছিল। দেশে চায়ের উৎপাদন অনেক বেড়েছে, একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চা তেমন রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না। একসময় চা খেতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হলেও আজ গ্রামের মানুষও চা পান করতে অভ্যস্ত। ফলে চায়ের ব্যবহার বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৭০ সালে যেখানে চায়ের উৎপাদন ছিল মাত্র ৩১.৩৮ মিলিয়ন কেজি, সেখানে ২০১৯ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ৯৬.০৭ মিলিয়ন কেজি এবং ২০২০ সালে ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। ২০২০ সালে ১৯টি দেশে ২.১৯ মিলিয়ন কেজি চা রফতানি করে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, বাংলাদেশ চা বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ সংযুক্ত ছিলেন। # ​০২.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #