un

বেসরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

-বেসরকারী স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের স্বার্থে শ্রমিকদের মজুরি পুনর্বিন্যাস অপরিহার্য্য : সিটি মেয়র

বেসরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী

আজ বিকাল ৪টায় বেসরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সভা চট্টগ্রাম প্রবর্তক স্কুল এন্ড কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজানের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত উক্ত সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে  উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম, প্রধান বক্তা হিবাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন দত্ত এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের  সহকারী পরিচালক শফিকুর রহমান এবং অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন, টিইউসি চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খান, টিইউসি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু, সংগঠনের সাবেক সভাপতি বিকাশ বসু, তপন তালুকদার, কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ পারভেজ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সেলিম, ইমারত নির্মান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মোঃ হালিম, হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ হানিফ ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম প্রমুখ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

সভায় সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উত্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজান, বিগত চার বছরের আয়-ব্যায়ের হিসাব উত্থাপন করেন সংগঠনের নেতা আদুরী কনা এবং শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ইফতেখার কামাল খান।

সভায় প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বেসরকারী স্বাস্থ্য সেক্টরের শ্রমিক কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে বেসরকারী স্বাস্থ্য সেক্টরের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। রোগীদের সুস্থ্য করার ক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের তুলনায় একজন নার্স বা বাদার এর ভূমিকাও কোন অংশে কম নয়। তিনি করোনাকালে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেক্টরের শ্রমিকদের ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করেন। তিনি বলেন ডাক্তাররা যখন ভয়ে রোগীদের কাছে যাচ্ছিলেন না তখন বেসরকারী স্বাস্থ্য সেক্টরের নার্স, ব্রাদার এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সাহসী ভূমিকার কারনে করোনার দুর্যোগকালে দেশের মানুষকে রক্ষা করা অনেক সহজ হয়েছে।

মেয়র মহোদয় আরো বলেন, বেসরকারী স্বাস্থ্য সেক্টরের শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বেসরকারী স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের স্বার্থে শ্রমিকদের বেতন যুগোপযোগি করতে তাদের মজুরি পুনর্বিন্যাস করা উচিৎ বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

প্রধান বক্তা তপন দত্ত বলেন, স্বাস্থ্য সেক্টরের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে শ্রম আইনে প্রাপ্য সুযোগ, শ্রম অধিকার তথা নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিসবুক, নৈমিত্তিক ছুটি, পীড়া ছুটি, উৎসব ছুটি, অর্জিত ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ওভারটাইম ভাতা, বিমা সুবিধা, লভ্যাংশের ৫% শ্রমিকদের মধ্যে বন্টন, কেন্টিন সুবিধা ইত্যাদি আইনানুগ অধিকার থেকে শ্রমিক কর্মচারীদের প্রতিনিয়ত বঞ্চিত করা হয়। ইউনিয়ন করলে ঠুনকো অজুহাতে চার্জশিট দিয়ে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ধরণের অন্যায় এবং অত্যাচার থেকে স্বাস্থ্য সেক্টরের শ্রমিকদের রক্ষা করতে হলে সকল শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার কোন বিকল্প নাই।

সভায় উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, সেক্টরে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের মজুরি খুবই কম। নিত্য ব্যবহার্য পণ্য, যাতায়াত, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ঘরভাড়া, চিকিৎসা খরচ সহ সবকিছুই আজ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে -যা মজুরির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। মাত্র ৩/৪ হাজার টাকায় মাসিক মজুরিতে আয়া মাসীরা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রয়োজনীয় খরচ মেটানোর জন্য অধিকাংশ শ্রমিকদের দুই শিফট কিংবা তিন শিফটে কাজ করতে হচ্ছে। এই অবস্থা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের জীনমান ও শোভনকাজ বাস্তবায়নে মজুরি বোর্ড গঠক করে অবিলম্বে অবিলম্বে স্বাস্থ্য সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি ঘোষনার দাবি জানানো হয়।