চলমান সংবাদ

২০ জানুয়ারি পল্টনে সিপিবি’র মহাসমাবেশে বোমা হত্যাকাণ্ডের ২৩তম বার্ষিকীতে সমাবেশ

-ভাত ও ভোটের অধিকারের সংগ্রাম জোরদারের আহবান

গতকাল ২০ জানুয়ারি ২০২৪, পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র মহাসমাবেশে বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ২৩তম বার্ষিকী। ২০০১ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টন ময়দানে সিপিবি’র লাখো মানুষের মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালায় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্র। এই হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা কমরেড হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরীর শ্রমিক নেতা কমরেড আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুটমিলের শ্রমিক নেতা কমরেড আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের কমরেড মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই এবং খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা কমরেড বিপ্রদাস রায় আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ওই বছরেই ২ ফেব্রুয়ারি শহীদের মৃত্যুবরণ করেন। বোমা হামলায় শতাধিক কমরেড আহত হন।

পল্টন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার  কার্যকর করার দাবিতে সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে আজ ২০, জানুয়ারি, ২০২৪, শনিবার,  বিকাল ৪ টায় সিনেমা প্যালেস চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা’র সভাপতিত্বে এবং সদস্য জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মৃণাল চৌধুরী, সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি লাল পতাকার মিছিল সিনেমা প্যালেস থেকে আন্দরকিল্লা হয়ে চেরাগী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

বক্তারা বলেন, পল্টন হত্যাকাণ্ডের বিচার দীর্ঘসূত্রিতায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। সঠিক সময়ে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদের এমন উত্থান হতো না। যখনই যারা ক্ষমতায় এসেছে তারাই বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু রেখেছে। কমিউনিস্ট পার্টিকে নিশ্চিন্ন করতেই বোমা হামলা করা হয়েছিল। আমরা দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই- বোমা মেরে মেহনতি মানুষের কন্ঠস্বরকে রোধ করা যাবে না। এই বোমা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের পাশাপাশি এর নেপথ্যের হোতাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, স্বৈরাচার এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছিল তা আজ নির্বাসনে চলে গেছে। এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের পর গত ৩৩ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু গণতন্ত্র আসেনি। এদের অপরাজনীতি, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী রাজনীতি দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়। দুর্নীতি, লুটপাট, সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য আওয়ামী ও বিএনপি ধারার বাইরে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীলদের বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। ‘ভাত ও ভোটের’ সংগ্রামকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির সরকার প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই আজকের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। সংগ্রামকে এই নতুন পর্বে কমিউনিস্ট পার্টিকেই আরও শক্তভাবে হাল ধরতে হবে।