un

বেগম রোকেয়া বাংলার নারীসমাজকে মানুষের মর্যাদা নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- সরকারী নার্সিং কলেজে রোকেয়া স্মরণে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

বেগম রোকেয়া স্মরণে সরকারী নার্সিং কলেজ অডিটোরিয়ামে  নারীমুক্তি কেন্দ্র ও  নার্সিং কলেজ স্টুডেন্টস ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের আলোচনা সভা

“অজ্ঞানতা-কূপমন্ডুকতা-কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্তঃপুরে বন্দী বাংলার  নারীসমাজকে মানুষের মর্যাদা নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া।এজন্য তিনি হাতিয়ার করেছিলেন শিক্ষাকে। নারী শিক্ষা বিস্তারের জন্য নিজের সমস্ত শ্রম ও সম্পদ উৎসর্গ করেছেন। লাঞ্চনা-কটুক্তি-নিন্দা সমস্ত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে নিজের কর্তব্যকর্মে অবিচল থেকেছেন। বেগম রোকেয়ার জীবনসংগ্রাম ও চরিত্র থেকে শিক্ষা নিয়ে এ সমাজে নারীকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম বেগবান রাখতে হবে।”   নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া  সাখাওয়াৎ হোসেনের ১৪৩তম জন্ম ও ৯১তম মৃত্যু বার্ষিকী  উপলক্ষ্যে আজ ৯ ডিসেম্বর,২০২৩ সকাল ১০ টায় চট্টগ্রাম সরকারী নার্সিং কলেজ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও সরকারি নার্সিং কলেজ স্টুডেন্টস ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত  আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।  আলোচনাসভার শুরুতে অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।

এরপর রোকেয়ার জীবনের উপর নির্মিত স্লাইড শো প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক মঞ্চস্থ করে।

চট্টগ্রাম সরকারী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মোছাম্মদ সেলিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ডা.সালমা বিনতে শফিক, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তাসলিমা আক্তার বিউটি,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক  বাসন্তী রানী রায়,আনোয়ার নূর নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ ইলা দাশ,নারী মুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি আসমা আক্তার,চট্টগ্রাম  সরকারি নার্সিং কলেজ স্টুডেন্টস ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক  জিকু দাশ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন,বেগম রোকেয়া বুঝেছিলেন শিক্ষার মাধ্যমেই কেবল নারীজীবনের  অন্ধকার কাটানো সম্ভব। নারীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেছেন,”বহুকাল হইতে নারীহৃদয়ের উচ্চবৃত্তিগুলি অঙ্কুরে বিনষ্ট হওয়ায় নারীর অন্তর,বাহির  মস্তিষ্ক,হৃদয় সবই “দাসী “হইয়া পড়িয়াছে।এখন আর আমাদের হৃদয়ে স্বাধীনতা, ওজস্বিতা বলিয়া কোন বস্তু নাই এবং তাহা লাভ করিবার প্রবৃত্তি পর্যন্ত লক্ষিত হয় না!..  প্রথমে জাগিয়া উঠা সহজ নহে, জানি;সমাজ মহা গোলযোগ বাধাইবে জানি।… কিন্তু সমাজের কল্যাণের নিমিত্তে জাগিতে হইবেই।বলিয়াছি ত কোন ভালো কাজ অনায়াসে করা যায় না।…আমাদিগকেও বিবিধ নির্যাতন সহ্য করে জাগিতে হইবে।”

বক্তারা আরো বলেন,“রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম আজও প্রাসঙ্গিক।নারীধর্ষণ-নারী নির্যাতন-সহিংসতা-নারীপাচার ক্রমাগত বাড়ছে।এ অবস্থায় নারী সমাজের প্রতি আমাদের আহ্বান -আসুন আমরা সবাই রোকেয়ার জীবন সংগ্রাম থেকে শিক্ষা নিয়ে সমমর্যাদা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই বেগবান করি।পুঁজিবাদী শোষণ ও পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়নসহ সকল প্রকার দমন- নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলি।”