চলমান সংবাদ

ব্যাংক ঋণের ৮ হাজার ৪০৪ কোটি টাকার সুদ মওকুফ : অর্থমন্ত্রী

নয়টি ব্যাংক গত বছর ৪ হাজার ৬২১ জন গ্রাহকের অনুকূলে ৮ হাজার ৪০৪.৫২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে ১ হাজার ৬২০.৮৩ কোটি টাকার সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গতকাল রোববার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙার এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এ দিন প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। খবর বাংলানিউজের।

মুস্তফা কামাল বলেন, তফসিলি ব্যাংকের মূলঋণ (আসল) মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই। তফসিলভুক্ত রাষ্ট্র মালিকানাধীন ৬টি ব্যাংক (অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেডেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড, বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসি) এবং ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক (বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক) রয়েছে। ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ২০২২ সালে ৪ হাজার ৬২১ জন গ্রাহকের অনুকূলে ৮ হাজার ৪০৪.৫২ কোটি টাকার সুদ মওকুফ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। ২০২২ সালে ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ৬২০.৮৩ কোটি টাকার সুদ মওকুফ সুবিধা কার্যকর হয়েছে। বাংলাদেশে কার্যত তফসিলি ব্যাংকগুলোর জন্য সুদ মওকুফ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি আছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী তফসিলি ব্যাংকের আসল ঋণ মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকসমূহের সুদ মওকুফ সংক্রান্ত সুবিধার সাথে কোনো ব্যাংকের

দেউলিয়া হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে করদাতার সংখ্যা ৮৯ লাখ ৬ হাজার ৫৩৯ জন (৬ জুন, ২০২৩ পর্যন্ত)। তিনি বলেন, ব্যক্তি করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলো হলো, জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন করদাতা শনাক্তকরণ, এক পাতার রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি সহজীকরণ, স্পট অ্যাসেসমেন্ট, অনলাইন ই–রিটার্ন দাখিল, আয়কর দেওয়া সহজীকরণ, করদাতাদের সম্মাননা দেওয়া, নভেম্বর মাসে কর তথ্য সেবা মাস চালুকরণ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার–প্রচারণা চালানো হয়েছে; এবং কর তথা সেবা দেওয়া কেন্দ্রের মাধ্যমে করদাতাদের রিটার্ন পূরণসহ সামগ্রিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সদস্য মোরশেদ আলমের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদেশে অর্থ পাচার ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধকল্পে বর্তমানে দেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ কার্যকর রয়েছে, যা প্রয়োজনের নিরিখে ২০১৫ সালে আংশিক সংশোধন করা হয়। ২০১৫ সালের সংশোধিত আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশের সিআইডি বিভাগ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে অর্থ পাচার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। এর মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থপাচার সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিং মামলাগুলোর ক্ষেত্রে জাতীয় রাজ বোর্ডের অধীনস্থ দপ্তরগুলো কর্তৃক অনুসন্ধান ক্রমে মামলা ও তদন্ত পরিচালনা করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক বন্ডের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগের বিপরীতে এ পর্যন্ত ১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ৩৬৭ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মানিলন্ডারিং আইন অর্থপাচার প্রতিরোধে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।