চলমান সংবাদ

বান্দরবানে গুলি ও বিস্ফোরণে দুই সেনা সদস্য নিহত

বান্দরবান
বান্দরবানের একটি পাহাড়ী সড়ক(ফাইল ফটো)

বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি বা কেএনএ’র গুলি এবং আইইডি বিস্ফোরণে দু’জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর। এই ঘটনায় আরো দু’জন সেনা অফিসার আহত হয়েছে।

আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বান্দরবানের রুমা উপজেলার সুংসুংপাড়া সেনার ক্যাম্পের আওতাধীন জারুলছড়িপাড়া নামের একটি জায়গায় মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালাতে যায় সেনাবাহিনী।

সে এলাকায় কেএনএ সদস্যরা একটি আস্তানা গেড়েছে এমন খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালানোর জন্য যায় সেনা সদস্যরা। সেনা ক্যাম্প হতে মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে দলটি সেখানে গিয়েছিল বলে জানায় আইএসপিআর।

“উক্ত টহল দলটি জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে আনুমানিক ১৩৫৫ (১টা ৪৫মিনিট) ঘটিকায় কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণে পতিত হয়,” গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়।

এই ঘটনায় দু’জন সেনা অফিসার এবং দু’জন সৈনিক আহত হয়। আহতদের হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় আহত দু’জন সৈনিক মারা যায় বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এছাড়া দু’জন সেনা অফিসার এখনো চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

কুকি চিন : সেনাবাহিনীর নতুন চ্যালেঞ্জ?

জুরভারংপাড়া
এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে জুরভারংপাড়ায় নিহতদের কফিন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবিটি ৭ই এপ্রিল তোলা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর তরফ থেকে বলা হচ্ছে, বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গহীন অরণ্যে কুকি চিন অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।

এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে কুকি চিনের আটজন সদস্য নিহত হয়েছিল। নিহতরা সবাই ছিল বম সম্প্রদায়ের।

তখন নিরাপত্তা বাহিনীর দিক থেকে বলা হয়েছিল, কুকি চিন এবং এবং ইউপিডিএফ-এর মধ্যে সংঘাতের তারা নিহত হয়।

বম জনগোষ্ঠীর অনেকে তখন বিবিসি বাংলার কাছে অভিযোগ করেছিলেন, সে সাতজন কোন সংঘাতে নিহত হয়নি বরং তাদের ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এবং সে ঘটনার সাথে ইউপিডিএফ’র (গণতান্ত্রিক) সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছিল বম জনগোষ্ঠীর লোকজন।

তাদের এটাও অভিযোগ ছিল যে ইউপিডিএফ সংস্কারপন্থী অংশের সাথে সেনাবাহিনীর ‘ভালো সম্পর্ক’ আছে।

সম্প্রতি বম জনগোষ্ঠীর বেশ কিছু পরিবার ভারতের মিজোরামে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো। তাদের অনেকে জানিয়েছিল যে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে অভিযান চালাচ্ছে, তার থেকে বাঁচতেই ভারতে পালিয়ে এসেছেন তারা।

এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে আইএসপিআর-এর তরফ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মূলত আঞ্চলিক সশস্ত্র দলগুলোর নিজেদের মধ্যে বিদ্যমান দ্বন্দ্ব সংঘাত ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একের পর এক আত্মঘাতী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের এই আধিপত্য বিস্তারের অন্যতম মূল আগ্রহ হল বিভিন্ন উৎস থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া।“

আইএসপিআর বলছে, “এটা করতে গিয়ে কখনও কখনও তাদের নিজেদের অন্ত:দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছে সাধারণ জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।“