বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন তাদের সংলাপের জন্য যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, সেখানে তারা অংশ নেবে না।

বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার ২৩শে মার্চ বিএনপিকে একটি চিঠি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক ‘আলোচনা ও মতবিনিময়ে’র জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

সে প্রসঙ্গে মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘’সভা মনে করে, বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট – নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোন আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসু হবে না এবং তা হবে অর্থহীন। ‘’

‘’সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যেহেতু মূল রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময়ে সম্ভব নয়, সে কারণে বিএনপি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছে না,‘’ বলেন তিনি।

তবে এই উত্তর দলটি নির্বাচন কমিশনকে কোন চিঠি দিয়ে জানাবে না। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানাচ্ছে।

বিএনপির এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের কোন সদস্যের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে গত সোমবার বিবিসি বাংলার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশনার মোঃ আনিসুর রহমান বলেছিলেন, ‘’বিএনপি সংলাপে না আসার সিদ্ধান্ত নিলে আমার নিজেরা বৈঠক করে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা করবো।‘’

বিএনপিকে আগেও ডাকা হয়েছিল, তারা আসেন নি। ভবিষ্যতেও তাদের ডাকা হতে পারে। ”আমাদের আহ্বান অব্যাহত থাকবে,‘’ বলছেন মি. রহমান।

নির্বাচন কমিশন আমন্ত্রণ জানানোর পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে এই আমন্ত্রণকে ‘সরকারের নতুন কৌশল’ বলে বর্ণনা করেছিল দলটি।

তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সিইসি কাজী আবদুল আউয়াল বলেছিলেন, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্যই বিএনপির সঙ্গে তারা আলোচনা করতে চেয়েছেন। এর মধ্যে সরকার বা অন্য কারও কৌশল নেই।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, “এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার, নি্বচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।

তারা সংবিধানে পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন। সংবিধান পরিবর্তন করেই এই জায়গায় যেতে হবে। সুতরাং এটা সরকারের সঙ্গেই আলোচনা করতে হবে, সরকারকেই আসতে হবে।”

“এবং আমাদের কথা পরিষ্কার, এই বিষয় ছাড়া এই সরকারের সঙ্গে আর কোন বিষয়ে আমাদের আগ্রহ নেই,” বলেন বিএনপি মহাসচিব।

গত বৃহস্পতিবার ২৩শে মার্চ বিএনপিকে একটি চিঠি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
গত বৃহস্পতিবার ২৩শে মার্চ বিএনপিকে একটি চিঠি পাঠিয়ে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয়, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পূরণ না হলে বিএনপি ২০১৪ সালের মতো এবারো নির্বাচন বয়কট করবে কিনা?

তিনি বলেন, “ওয়াক ওভার তো আমরা ২০১৮ সালে দিতে চাইনি। ২০১৪ তে বয়কট করেছিলাম, আপনাার ওয়াক ওভার বলেছেন। কিন্তু ২০১৮ সালে তো আমরা (নির্বাচনে) গিয়েছিলাম। কী লাভ হয়েছে?”

বিএনপি মহাসচিব বলছেন, ‘’ওয়াক ওভারে তো আমরা কখনোই বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি (লেভেল) প্লেয়িং ফিল্ডে। আমরা যে দশ দফা কর্মসূচী দিয়েছি, রিজাইন করেন, সংসদ বাতিল করেন, নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন, আমরা একশোবার নির্বাচনে যাবো।

কিন্তু এই সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাবো না। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোন আলাপ নেই।‘’

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাদা পোশাকে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তিতে তুলে নেয়ার বিষয়ে মীর্জা ফখরুল ইসলাম বলছেন, নির্বাচনের আগে আগে বিরোধী বা ভিন্নমতের মানুষের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি করার জন্য এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।

‘’নির্বাচনের আগে যারা ভিন্নমত পোষণ করে অথবা ভীতি প্রদর্শন করা, গোটা দেশে একটা ত্রাসের অবস্থা সৃষ্টি করা, আমরা আবার অ্যাকটিভ। মাঝখানে সবাই ভাবছিল, এরা হয়তে একটু সংযত হয়েছে।

কিন্তু আবার মানুষকে ভীতির মধ্যে রাখার জন্য এই ঘটনাগুলো ঘটানো হচ্ছে। ‘’ তিনি বলছেন।