চলমান সংবাদ

এনআইডি দিয়ে ট্রেনের টিকেট বিক্রি কার্যক্রম শুরু

-প্রথম দিনে অবিক্রিত ৭০ শতাংশ টিকেট

কালোবাজারি বন্ধের চেষ্টায় ট্রেনে টিকেট কেনায় জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করে যে পদ্ধতি চালু হল, তা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে পাওয়া গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কারও কাছে এই পদ্ধতি সহজ লেগেছে, কারও কাছে কঠিন হয়ে ধরা দিয়েছে।

‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমের সঙ্গে প্রথম দিনে তাল মেলাতে পারেননি যাত্রীরা। স্বাভাবিক অন্যান্য দিনের মতো এসে আগে রেজিস্ট্রেশন না থাকায় টিকেট কাটতে পারেননি শত শত যাত্রী। বাধ্য হয়ে টিকেট না পেয়ে খালি হাতে ফিরে গেছেন। এই কারণে গতকাল ১ মার্চ যাত্রীদের কাছে ৫ মার্চের টিকেট বিক্রিকালে প্রতিটি ট্রেনে গড়ে ৭০ শতাংশ টিকেট অবিক্রিত রয়ে গেছে।

একদিনে চট্টগ্রাম থেকে সাড়ে ৭ হাজার আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হয়। টিকেট বিক্রি বাবদ দৈনিক আয় হয় ২৩ লাখের মতো। গতকাল সকালে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট খালি রয়ে গেছে।

টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে রেলের সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট সংগ্রহে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে বসানো হয়েছে একটি হেল্প ডেস্ক। যাত্রীদের অভিযোগ, টিকেট কাটার সময় নতুন নিয়ম করায় তারা টিকেট কাটতে পারছেন না। এখন টিকেট কাটতে এনআইডি লাগছে। সেটা তারা আগে থেকে জানতেন না বলে বেকায়দায় পড়েছেন।

গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে গতকাল টিকেট বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪১% (৮৯১ টিকেটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩৭২টি), সোনার বাংলায় টিকেট বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬০% (৫৮৪ এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ৩১৩টি), মেঘনা এঙপ্রেসে টিকেট বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩% (৯২৭ এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২৫টি), চট্টলায় বিক্রি হয়েছে ১৫%, পাহাড়িকায় হয়েছে ৩২%, বিজয়ে হয়েছে ২১%, গোধুলীতে হয়েছে ৩২%, উদয়নে হয়েছে মাত্র ৩৯% এবং তূর্ণা নিশীথায় টিকেট বিক্রি হয়েছে মাত্র ৫৫%।

রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে,  ১ মার্চ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের মাধ্যমে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট কাটতে হবে। রেলের কর্মকর্তারা পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিনের মাধ্যমে টিকেট যাচাই করবেন। কেউ অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকেট কেটে ভ্রমণ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ব্যবস্থাকে ‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ বলছে রেলওয়ে।

গতকাল বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর আলম। এসময় তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকেট বিক্রির কার্যক্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে কালোবাজারিদের রোধ হবে। বিনা টিকিটে আর ভ্রমণ করা যাবে না। এই কার্যক্রমে যাত্রীদের সাময়িক কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাফর আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মো. আবিদুর রহমান, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ইতি ধর, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ ইমরান, সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (১) মো. মনিরুজ্জামান, সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (২) ফেরদৌস রাজিব, সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (১) মেহেদী হাসান।