নিকি হ্যালি, প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী।
নিকি হ্যালি, প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী।

যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর নিকি হ্যালি ঘোষণা করেছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তার দল রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন চাইবেন।

ভারতের পাঞ্জাব থেকে যাওয়া অভিবাসী বাবা-মায়ের ৫১-বছর বয়সী এই কন্যা একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলেছেন যে এখন সময় এসেছে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের।

এটা তার এক সময়ের নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি এক স্পষ্ট ইংগিত। মি. ট্রাম্প ছ’বছর আগে তাকে জাতিসংঘে মার্কিন দূত পদে নিয়োগ করেছিলেন।

“এখন পিছিয়ে থাকার সময় নয়। এখন সময় একটি শক্তিশালী ও গর্বিত আমেরিকার,” টুইটারে নির্বাচনী প্রচারের এক ভিডিও পোস্ট করে তিনি বলেন।

গত নভেম্বরে তার প্রাক্তন নিয়োগকারী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার মনোনয়ন প্রচেষ্টা শুরু করার পরে নিকি হ্যালি দ্বিতীয় প্রধান রিপাবলিকান প্রার্থী যিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলের সমর্থন চাইছেন।

অন্যদিকে তিনি হলেন তৃতীয় ভারতীয়-আমেরিকান যিনি রাষ্ট্রপতি হতে চান।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিচ্ছেন নিকি হ্যালি।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিচ্ছেন নিকি হ্যালি।

যেভাবে মত পরিবর্তন

গত বছর তিনি বলেছিলেন যে হোয়াইট হাউসের লড়াইয়ে তিনি মি. ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করবেন না। তবে “ব্যাপক পরিবর্তন”-এর প্রয়োজন উল্লেখ করে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে তিনি তার মত বদলেছেন।

অন্যান্য যেসব রিপাবলিকান নেতা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন বলে মনে করা হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।

নিকি হ্যালি এর আগে ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি মার্কিন ক্যাপিটলে হামলার সময় মি. ট্রাম্পের আচরণের সমালোচনা করেছেন।

দাঙ্গার পরের দিন এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, “নির্বাচনের দিন থেকে তার কার্যকলাপের জন্য ইতিহাসের পাতায় (ডোনাল্ড ট্রাম্পের) কঠোর বিচার হবে।”

২০১৪ সালে স্বামী মাইকেলকে (ডান থেকে দ্বিতীয়) নিয়ে নিকি হ্যালি অমৃতসরের গোল্ডেন টেম্পল ভ্রমণ করেন।
২০১৪ সালে স্বামী মাইকেলকে (ডান থেকে দ্বিতীয়) নিয়ে নিকি হ্যালি অমৃতসরের গোল্ডেন টেম্পল ভ্রমণ করেন।

ট্রাম্প এখনও যথেষ্ট জনপ্রিয়। ২০১৬ সালে সাউথ ক্যারোলাইনার বিজয়কে ভর করে তিনি হোয়াইট হাউজের পথে অগ্রসর হয়েছিলেন।

ফলে ঐ রাজ্যে তার জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকলেও নিকি হ্যালিকে কঠিন বাধা পেরিয়ে যেতে হবে বলে দৃশ্যত মনে হচ্ছে।

বর্তমান এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের ওপর একটি জনমত জরিপকারী সংস্থা ট্রাফালগার গ্রুপের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ফলাফলে ৪৩% ভোট নিয়ে মি. ট্রাম্প প্রথম স্থানে এবং ১২% ভোট নিয়ে মিসেস হ্যালি চতুর্থ স্থানে রয়েছেন।

তার আগে অন্য যে দু’জন ভারতীয়-আমেরিকান মনোনয়ন পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন তারা হলেন, লুইজিয়ানার গভর্নর ববি জিন্দাল, ২০১৫ সালে যার প্রথম প্রচেষ্টা বিশেষ কারও নজর কাড়েনি, এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস, যিনি ২০২০ সালেও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

মায়ের সাথে নিকি হ্যালি।
মায়ের সাথে নিকি হ্যালি।

পাঞ্জাব থেকে আমেরিকা

নিকি হ্যালির বাবা-মা ভারতের পাঞ্জাব থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তারা দু’জনেই শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন এবং একটি পোশাকের বুটিক দোকানের মালিক ছিলেন।

বাবা অজিত সিং রানধাওয়া ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট অর্জন করেন এবং ভুরহিস কলেজে ২৯ বছর ধরে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার পর ১৯৯৮ সালে অবসর নেন।

মা রাজ কৌর রানধাওয়া দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। সাউথ ক্যারোলাইনায় যাওয়ার পর তিনি শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং স্থানীয় ব্যামবার্গ পাবলিক স্কুলে সাত বছর ধরে শিক্ষকতা করেন।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা