শিল্প সাহিত্য

সভ্যতা ও দ্বন্দ্ব

-শাহীন আকতার হামিদ

প্রায় তিনহাজার বছর ধরে মানুষের মধ্যে সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছে, সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নানারকমের দ্বন্দ্ব । মানুষ ক্ষমতায় থাকার জন্য, নিজেকে অন্যের চোখে মহান বানানোর জন্য শুরু হয়ে গেছে নানা ধরণের ফন্দি ফিকির। সভ্যতার শুরুতে এটা খুব একটা ভদ্রোচিত ছিলনা। প্রাচীন চীন, গ্রিক ও রোমান সভ্যতার দিকে তাকালে তা দেখা যায়।

মানুষের শরীরতত্ত্ব, মানসিক অবস্থা, দর্শন ও বস্তুগত আগ্রাসন পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায় সভ্যতা  কোন পথে এগুচ্ছে। মূলত দর্শন মানুষকে পরিচালিত করেছে সব চেয়ে বেশি। বুঝে না বুঝেই মানুষ সুবিধা অনুযায়ী জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছে বা বেছে নিয়েছে। আসলে ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় দার্শনিকদের যে দায়িত্ব পালন করা দরকার ছিল তা না করে তারা তাদের তত্ত্ব দিয়ে সাধারণের জীবন যাত্রাকে আরও অনেক বেশি কঠিন করে দিয়েছে যার কারণে বর্তমান কালে মানুষ শুধু ছুটে বেড়াচ্ছে, তার কোন স্থিরতা নেই, নেই কোন শান্তি।

কেউ কেউ জীবনকে সহজ করার চেষ্টা করেছে নানা মতবাদ দিয়ে, তার মধ্যে ধর্মীয় মতবাদ একটি।  এ ধর্মীয় মতবাদকে জীবনে স্থাপিত করতে গিয়ে টেনে এনেছে নানা ধরনের গল্প যা মানুষে মানুষে বিভেদটাকে জীবন হানিকর করে ফেলেছে।

দুজন গ্রিক দার্শনিক আজ পর্যন্ত রাষ্ট্র ও জীবনকে  নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। দুজনের ই জন্ম যিশু খ্রীষ্টের জন্মের পূর্বে।  এ দুজনের পরস্পরবিরোধী  তত্ত্ব নিয়েই মানুষ আজ পর্যন্ত পথ চলছে।  এ দুজনের একজন প্লেটো  ও অন্যজন এরিস্টোটল। আজ পর্যন্ত মানুষ এ দুদলেই বিভক্ত হয়ে আছে।

মানুষ তাদের মানসিক অবস্থানগুলোকে আস্তে আস্তে ধাবিত করেছে নানা ধরণের মানসিক ও শারীরিক বিভেদের উপর ভিত্তি করে। একারণেই বিভেদ তৈরি  হয়েছে নারী পুরুষে। শারীরিক গঠন আগে তৈরি হয়েছে এবং এটাকে ই নানাধরণের দার্শনিক অবস্থানে ফেলে নারীর কার্যক্রম ও পুরুষের কার্যক্রমের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে যা চলে আসছে হাজার হাজার বছর ধরে, এখানেই তৈরি হয়েছে শোষক ও শোষিতের অবস্থান।

প্রথম দিকে শোষক ও শোষিতের অবস্থান তৈরি হয়েছে বেশ দক্ষভাবে। এখানে অনুসরণ ও অনুকরণ ছিল মুখ্য। মানুষ খুব বেশি কিছু ভাবতে পারত না। আমরা যেটাকে সচেতন চিন্তা বলি তা ছিল না  বললেই চলে।  প্লেটো ও এরিস্টটলের মত কয়েকজন মানুষ কিছুটা সচেতন ছিল বিধায় বাকিরা সবাই  তাদের পিছনে হেঁটেছে। পরবর্তী পর্যায়ে এটা প্রযোজ্য হয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের ক্ষেত্রে।

মানুষের মন শরীর ও আবেগ দ্বারা তাড়িত হয়। শরীর ও মনের যে যুদ্ধ তা  আসলে মানুষের শরীরের  বিভিন্ন অঙ্গের চাহিদার বিষয়। একজনের শরীর মনের  চাহিদার খবর কিন্তু আর একজনের জানার  কথা নয়। দার্শনিকগ্ণ  নিজের শরীর, মনের চাহিদার উপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন তত্ত্ব দিয়েছেন এবং অন্যদের তা মানতে বাধ্য করেছেন তার লেখা ও বক্তৃতা দিয়ে। ওই সময়ে যাদের সচেতন বোধ তেমনভাবে গড়ে উঠেনি তারা এগুলোকেই অনুসরণ ও অনুকরণ করেছে।

একজন মানুষ যখন কোন কিছু করতে বাধ্য না হয়, তখন সে তার নিজ বুদ্ধি মননশীলতা ও শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে এবং যা অন্যের জীবনে কোন ক্ষতির কারণ না হয় এর চাইতে ভাল আর কিছু হতে পারেনা, কিন্তু সভ্যতার শুরুতেই মানুষ বাধ্য হয়েছে বিভিন্ন নিয়ম নীতি মানতে যা তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এভাবেই শোষক ও শোষিতের জন্ম হয়েছে।  অপেক্ষাকৃত সচেতন মানুষ কিছুটা অসচেতন মানুষের উপর এ ভার চাপিয়ে দিয়েছে যা আজও চলছে।

মানুষের শরীরে পঞ্চ ইন্দ্রিয় কাজ করে এবং এর সন্তোষ মানুষের মনকে ও জীবনকে আনন্দে ভরে তুলে। কোন সচেতন মানুষ যখন অন্যের ক্ষতি না করে নিজের স্বাভাবিক জীবন চালিয়ে নেয় সেটা বাঞ্ছনীয়,  কিন্তু সাধারণ ও ধর্মীয় দার্শনিক গণ তা হতে দেয়নি, তারা মানুষকে বাধ্য করেছে তাদের মত ও পথকে অনুসরণ করতে। মানুষ যখন নিজের মত ও পথকে অন্যের উপর চাপিয়ে দেয় তখন তারা কিছু রহস্যময়তার আশ্রয় নেয়।  এ রহস্যময়তার  জন্য সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে তাকে অনুসরণ করতে শুরু করেছিল। এটা ছিল অন্য মানুষকে নিয়ন্ত্রন করার  প্রধান কারণ।

মানুষের নিজেকে নিয়ন্ত্রন  করার ক্ষমতা নিজের উপর থাকলে পৃথিবীতে সে সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি।  কেউ যদি বলে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা আমার নেই তা সম্পূর্ণ ভুল কথা।  নিজেকে ভালবাসতে পারলেই অন্যকে ভালবাসা যায়। আমাদের জীবনে ভালবাসা তিনভাবে আসে, যৌন সুখ, বন্ধুত্ব ও পারিবারিক সুখ, বুদ্ধিভিত্তিক ও শৈল্পিক সুখ। এ তিন ধরণের সুখের  মধ্যে কোনটা কম কোনটা বেশি হতেই পারে। আমরা সাধারণ জীবনে দেখি এ সুখগুলো পেতে গিয়ে মানুষ নানা ধরণের ভান ও ভনিতার আশ্রয় নেয়, এটাই হল অসুখী সমাজের মূল কথা।

দুজন মানুষের মধ্যে যখন সৎ রোমান্টিক ভালবাসা কাজ করে এবং এখানে যদি কোন প্রকার ভান ভনিতা, রহস্যময়তা, মিথ্যা না থাকে সে জীবন সুখের। আমাদের জীবনে এখানে এসেই বর্তমান মানুষ   হার মেনে গেছে। দুজন মানুষের পারস্পরিক রোমান্টিক সম্পর্কের পরিবর্তে যদি বলাৎকার ও শারীরিক মানসিক অত্যাচার এসে যায় সেখানে সম্পর্ক হয়ে যায় অসৎ, এ সম্পর্কে ভালবাসা থাকেনা। আমরা যদি নারী পুরুষের সম্পর্কের কথা ধরি দেখা যায় অপেক্ষাকৃত শারীরিক দূর্বল মানুষটি সর্বাধিক অত্যাচারের মুখোমুখী হয়। এ ক্ষেত্রে নারী শারিরিকভাবে কিছুটা দূর্বল, কারণ তাকে ধারণ করতে হয়,  সে বাচ্চার মা হয়। কিন্তু বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় দেখা যায় এ দূর্বল নারীকেই যাবতীয় কাজ করতে হয়, যেমন সন্তান ধারণ  করা, ঘরের সব কাজ করা, বাজার করা, সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব পালন করা ও আরও অনেক কিছু।  অতীতে যাদেরকে সাধারণ মানুষ অনুসরণ ও অনুকরণ করত সে দার্শনিকগণ যদি সে সময়ে সঠিক দায়িত্ব পালন করত এক শ্রেণি আজ কষ্ট পেতনা এবং অন্য শ্রেণি তা উপভোগ করতনা।

রহস্যময়তা  যূগ যূগ ধরে মানুষকে প্রতারিত করে এসেছে। প্রতারকগণ সব সময় রহস্যময়তার আশ্রয় নিচ্ছে। এরা মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিকে সব সময় ছোট করে দেখে।  এরা মনে করে সে ছাড়া অন্য কোন কেউ কিছু বোঝেনা।

সমাজের  কিছু মানুষ প্রকৃতপক্ষে জীবনে যা ঘটে তা নানা ধরণের উপমা ও রহস্যময়তা দিয়ে অন্য কিছু একটা বানিয়ে ফেলে, এটা আসলে একধরনের অভিনয়, এক ধরণের অসুখ। যা দেখা  যায়না, যা বোঝা যায়না কিন্তু একধরণের রহস্যময়তা দিয়ে একটা বাস্তব অবস্থা তৈরি করে ফেলে, যার কারণে সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেনা এটা আসন নাকি নকল। এ ক্ষেত্রে আমরা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক বা শিক্ষক কে চিন্তা করতে পারি।  রাজনীতিবিদ্গণ নিজের সুবিধার জন্য নানা ধরণের রহস্যময়তা তৈরি  করে মানুষের ভোট আদায় করে। সাংবাদিকগণ যে ঘটনা ঘটে তা বাড়িয়ে ও কমিয়ে তার সুবিধা অনুযায়ী প্রচার করে, শিক্ষকগণ কখনো প্রকৃত জ্ঞান না দিয়ে তার তৈরি করা কিছু নোট দিয়ে ক্লাসে পড়াবে, সে কখন ও নিজের মত করে আর একজনকে বানাবেনা, ছাত্র শিক্ষকের চেয়ে বেশি কিছু ভাবতে পারে এটা শিক্ষক কখনই মেনে নিবেনা।

রহস্যময়তা এমন ই একটা বিষয় যা আপনাকে সমন্বিত চিন্তা করতে বাধা দেয়, মানুষকে বলা হচ্ছে আমাকে অনুসরণ কর, তুমি বোকা কিছু বুঝনা, আমি ই নেতা। যে মানুষ যত বড় বেশি রহস্যময়তার আশ্রয় নিবে সে ততবেশি  বড় নেতা, এক্ষেত্রে আমরা ধর্মীয় নেতাদের কথা বলতে পারি। তারা সব সময় সাধারণ মানুষ কে অনুসরণ করতে বলে। উদাহরণ সহ বলা যায় মানুষ  ধর্মগ্রন্থ নিজে না পড়ে  না বুঝে ধর্মীয় নেতারা যা বলছে, গানে গানে, কথায় কথায়, যে ভাষা মানুষ না বোঝে  সে ভাষায় ্ধর্ম প্রচার করে। এ ধরণের প্রচারণা  এক ধরণের রহস্যময়তার প্রভাব ফেলে সাধারণ মানুষের উপর। আসলে রহস্যময়তা সচেতন মনের বিপক্ষের একটা বিষয়। এটা কখনো ভাল কিছু দিতে পারেনা। আমরা আমাদের বাল্যকালে যখন, ইংরেজী, ল্যাটিন আরবী ও সংস্কৃত ভাষায় পড়েছি, তার কোন অর্থ জানতাম না, শুধু মুখস্ত করেছি, আমরা শুধু অনুসরণ করেছি, যার ফলে আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে  অনুকরণীয় মানিসিকতা। আমরা মৌলিকভাবে কিছু ভাবতে পারিনা।

রহস্যময়তা নীতি ও নৈতিকতাকে  ধ্বংস করে দেয়, এমতাবস্থায় মানুষ নিজে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা, সব সময়  অন্যের উপর নির্ভর করে, সে তার ব্যক্তিগত জীবন থেকে কিছু শিখতে পারেনা। অতীতকালে  কোনো কো্নো দার্শনিক বলেছে নিজে কর নিজে ভাব, আমি এভাবে ভাবি, দেখি তোমার ভাবনার সাথে আমার ভাবনার পার্থক্য কোথায়! কোনো কো্নো দার্শনিক বলেছে আমাকে অণুসরণ কর, তোমার ভাবার দরকার নেই, আমি ই তোমার সমস্যার সমাধান করে দিব। এ দুদল দার্শনিক এর মধ্যে বিশাল পার্থক্য। প্রথম জন  সমন্বিত ভাবনার অধিকারী অন্যকে নিজের মত করে ভাবতে শিখায়, আর শেষের জন জীবন ধ্বংসকারী  প্রতারক। বর্তমান কালে আমরা সাধারণ মানুষ প্রতারকদের অনুসরন করি, আমরা সাধারণত নূন্যতম প্রতিরোধের পথকেই অনুসরণ করি। আমরা কষ্ট করতে চাইনা। আমরা নিজেদের দায়িত্ব নিজেরা নিতে পারিনা। আমরা সচেতন নই।

পশুকুলের কোন সচেতনতা নেই, তারা অনুসরণ করে। এরজন্য পশুকূলকে সাধারণ মানুষ খুব সহজে নিয়ন্ত্রনে নিতে পারে। তাদের স্বাধীন চিন্তা বলে কিছু নেই। স্বাধীন সচেতন মানুষ  পৃথিবীতে সুখ বয়ে আনে, অন্যদিকে যারা শুধু একজনকেই অনুসরণ করে তারা পৃথিবীকে ধবংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।  যে মানুষ সাধারণত নিজে চিন্তা করতে পারেনা এরা অন্যের উপর নির্ভরশীল, এটা অলসতা  আর এ অলসতা তৈরি হয় যখন আমরা জীবনে নূন্যতম প্রতিরোধের মুখোমুখি হই। মানুষ যখন সর্বোচ্চ প্রতিরোধের মুখোমুখি হয় তখন তার মধ্যে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় এবং সে তখন নিজের মত ও পথকে নিজের মধ্যে আবিষ্কার করে ও তার বহির্প্রকাশ ঘটায়। সে অনুসরণকারী নয় সে হল নিজেকে পৃথিবীতে মূল্যবান করে তোলে ও একজন আবিষ্কারক হয়ে উঠে। সে বাঁচতে শিখে যায়। অন্যদিকে অলস মানুষের কিছু করার থাকেনা, সে জীবনের উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ও এ কারণেই বর্তমানকালে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশি বেড়ে গেছে।

বর্তমান  পৃথিবীর  এ দ্বন্দ্ব ও অস্থিরতার জন্য দায়ী মাত্র কয়েকজন রাজনৈতিক ও ধর্মান্ধ ব্যক্তি। এ ব্যক্তি  জন্ম গ্রহণ করার পর থেকেই এমন হয়নি। তার বড় হয়ে উঠা, পারিপার্শ্বিকতা  এর জন্য দায়ী। একটি বাচ্চা যখন জন্ম গ্রহন করে তার ব্রেন থাকে সাদা কাগজের মত, তখন পর্যন্ত ওই ব্রেন কলুষিত হয়না। এরপর সে যার সাথে বড় হয়ে  ওঠে তার কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে।  এই যে বড় হয়ে ওঠা এটা যদি ক্লুষিত হয়ে থাকে, তখন পুরো জীবন কলুষিত হয়। এরাই যখন ক্ষমতার অধিকারী হয় তখন বিশ্বকে অস্থির করে তুলে।

মানুষ বড় হয় এক ধরণের নীতিবোধ নিয়ে।  যে মানুষের চরিত্রে নীতিবোধে ত্রুটি থাকে কালে কালে  সে হয়ে উঠে  এক নায়ক। এ একনায়কতন্ত্র আমাদের সভ্যতাকে অস্থির করে তুলেছে। এদের মধ্যে  প্রতিশোধ স্পৃহা কাজ করে খুব বেশি ।  এই প্রতিশোধ নেয়ার চরিত্র গড়ে উঠেছে খুব বাল্যকাল থেকে। উপমা দিয়ে বুঝান যায় একটি দেয়াল গড়ে তুলতে গিয়ে যদি একটি ত্রুটিপূর্ণ ইট পাওয়া যায়, তার উপর দেয়াল যেভাবেই গড়ে উঠুকনা কেন ঐ ত্রুটিপূর্ণ ইরটিকে আর পাল্টান যাবেনা। পাল্টাতে গেলেই দেয়াল ভেঙ্গে পরবে। অনেক কেই বলতে শুনা যায়  আমি যদি অতীতে ফিরে যেতে পারতাম  জীবনটাকে অন্যভাবে গড়ে তুলতাম, আসলে ওতীতে ফিরে যাওয়া আর সম্ভব হয়না।  ত্রুটিপূর্ণ ইটকে আমরা যদি অনৈতিক ধারণা বলি এটা থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষমতা খুব কম মানুষের থাকে।

যে মানুষের প্রতিটা কাজের পিছনে একটা কারণ থাকে, সে হয়ে উঠে সংগঠক, তার দ্বারা জীবন, সমাজ ও পৃথিবী উপকৃত হয়। যার কাজের পিছনে কোন কারণ থাকেনা সে কাজ করে এলোমেলো  ভাবে কোন কারণ বা উদ্দেশ্য ছাড়া।  উদ্দেশ্যবিহীন জীবন এক সময় কোন সিদ্ধান্ত নিতে না পারার যন্ত্রনায় তিলে তিলে নিজেকে ধ্বংস করে দেয় বা অন্যকে যন্ত্রনা দেয়।  এদের উদ্দেশ্য থাকে কোন কিছু জোর করে দখল করা, মনের মধ্যে থাকে অপরাধবোধ, চরিত্রে থাকে প্রতারণা রহস্যময়তা।  এ ধরণের মানুষ দের দ্বারাই বিশ্ব বা সভ্যতা দ্বন্দ্বে  জড়িয়ে পড়ে।  এরা বিশ্বের উপকার যত না করে তার চেয়ে অপকার করে অনেক বেশি।  এরা কথায় কাজে অন্যকে নিয়ন্ত্রন করতে চায় নিজের অনিয়ন্ত্রিত জীবন ব্যবহার করে। রাজনৈতিক ও  ধর্মীয় নেতাগণ এ কাজটি সব চেয়ে বেশি করে।