চলমান সংবাদ

কাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে সাগরে মাছ ধরা

ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামীকাল শনিবার (২৯ অক্টোবর) ফের শুরু হচ্ছে মাছ ধরা।

আজ শুক্রবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই শহরের বিভিন্ন ঘাট থেকে সাগরে রওয়ানা দেবে অসংখ্য ট্রলার। তবে বেশিরভাগ ট্রলার ভোররাতে রওয়ানা দেবে বলে জানিয়েছে ট্রলার মালিক সমিতি।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই যাতে সাগরে রওয়ানা দেওয়া যায় তার জন্য শহর ও শহরতলীসহ জেলার সামুদ্রিক নৌঘাটগুলোতে গত কয়েকদিন ধরেই চলছিল প্রস্তুতি। ফলে শুক্রবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই শহরের বিভিন্ন ঘাট থেকে সাগরে রওয়ানা দেবে শতাধিক ট্রলার। তবে এখন জোৎস্না রাত না হওয়ায় বেশির ট্রলার শনিবার ভোররাতে রওয়ানা দেবে।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, কক্সবাজারে ছোটবড় প্রায় ৮ হাজার ফিশিং বোট রয়েছে। এরমধ্যে আকার ভেদে একেকটি বড় নৌযানে ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌ-যানে ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে।

তিনি জানান, ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে থাকে। যে কারণে ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো সাগরে মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। বিহিন্দি জালে ইলিশ ব্যতীত ছোট আকারের প্রায় পাঁচ প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।

শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী জানান, শনিবার থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হলেও সাগর থেকে ট্রলারগুলোকে মাছ ধরে ফিরতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে। ফলে চলতি মাসে আর ইলিশের দেখা নাও মিলতে পারে।

তবে বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে বলে আজ শনিবার সকাল থেকেই বাজারে ‘পাঁচকাড়া’সহ সামুদ্রিক চিংড়ির দেখা পাওয়া যাবে বলে জানান দরিয়ানগর বোট মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলম।

তিনি জানান, ককশিটের বোটগুলো সাগর থেকে দিনে ২ বার মাছ ধরে আনে। তবে কাঠের বোটগুলোর মাছ ধরে ফিরতে ২/৩ দিনও সময় লাগতে পারে।
সাগরে মাছ ধরা শুরু হওয়ার পর আজ থেকে দেশের বৃহত্তম শুটকী পল্লী নাজিরারটেকেও শুটকী উৎপাদনের কাজ শুরু হবে বলে জানান নাজিরারটেক শুটকি ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মোহাম্মদ নুরুদ্দিন কোম্পানি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান জানান, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছধরা, পরিবহন ও মজুদের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার মধ্যরাতে অতিবাহিত হচ্ছে। এরপরই জেলেরা আনুষ্ঠানিকভাবে সাগরে মাছ ধরতে যাবে। আশা করা যায়, অনুকূল আবহাওয়ায় আগামী কয়েক মাস সাগরে মাছ ধরা উৎসব চলবে।

# ২৮/১০/২০২২, চট্টগ্রাম #