মতামত

জাসদ রাজনীতির ৫০বছর: ১৯৭২ – ২০২২(১ম পর্ব)

– অপু সারোয়ার

এক

১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল। জাসদীয় রাজনীতির ৫০ বছর। জাসদীয়  সমাজতান্ত্রিক ধারার শুরু বাঙালী জাতীয়তাবাদের গর্ভে।  ‘বাঙালী মনোভাবের ভিত্তিতে’ মেহনতী জনতা কে ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে জাসদের জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৭২ সাল। সমাজতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে প্রতিশ্রুতিশীল প্রাণ প্রাচুর্যের  বিপ্লবী শক্তি সমবেত হয়েছিল জাসদে । জাসদের পতাকা তলে সমবেতরা আত্ম ত্যাগ ও নিষ্ঠায় ভরপুর ছিলেন। নেতৃত্বের ধৈর্য হীনতা, রাত পোহালেই বিপ্লব ও ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন – প্রচেষ্টা, বিপ্লবী  উচ্ছাস , বাম হটকারিতা ও সুবিধাবাদ নিত্য সহচর হয়ে দাঁড়ায় জাসদের পথ পরিক্রমার। ভুল নেতৃত্বে ও কর্মসূচি কারণে জাসদ  বহুধা বিভক্ত ও প্রায় নিঃশেষিত। রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু থেকে প্রান্তিকে ছিটকে পড়ার নানান উপখ্যান রয়েছে জাসদের ঝুলিতে। গত ৫০ বছরে দুঃখজনক ভাবে জাসদীয় ধারার ঝুলিতে জমা হয়েছে ডজন খানেক ভাঙনের অভিঘাত। (১)  কালের স্রোতে রাজনৈতিক দলের চক্র- উপদলীয় কোন্দলে নিষ্ঠাবান নেতা-কর্মীদের হারিয়ে যাওয়ায় নজির ভুরিভুরি। জাসদকে হারাতে হয়েছে অনেক বেশি। জাসদ নেতা-কর্মীগণ  হত্যা-খুনের শিকার হয়েছেন;  ভিন্নমতের কারণে দল ছিন্নভিন্ন হয়েছে; ভুল মত পথের কারণে পথহারা হয়েছেন হাজার কর্মী সমর্থক ।  দলের ভাঙ্গন নিয়ে নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখা যায় দলের মধ্যে। কর্মী সমর্থকেরা হতাশ হয়ে পড়েন। অনেকে হতাশ হয়ে দল ও  রাজনীতি ছেড়ে দেন। আওয়ামীলীগ – বিএনপি – জাতীয় পার্টিতে জাসদের পথহারা নেতা -কর্মীদের ঠাঁই মিলেছে। এই দল গুলিতে ঠাঁই নেওয়া সাবেক জাসদ কর্মীদের অতি অল্প সংখ্যক মজ্জাগতভাবে সুবিধাবাদী চরিত্রের থাকার সম্ভবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে সংখ্যা গরিষ্ঠ নেতা কর্মীরা বিভ্রান্তি থেকে সুবিধাবাদের দিকে ঝুকে থাকবেন। জাসদের  প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতি এখন  বিস্মৃত অতীত।

‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র ‘ / জনযুদ্ধ , শ্রেণীশত্রু’ এই জাতীয় গুরু গম্ভীর  শব্দ স্থান পেয়েছে জাসদের প্রথম ঘোষণা পত্রে। ১৯৬০ ও ১৯৭০ দশকে চীন পন্থী  পার্টিগুলোর প্রচার পত্র ও সাহিত্যে  জনযুদ্ধ ও শ্রেণীশত্রু  জাতীয় শব্দ গুলির রমরমা ব্যবহার ছিল । কোন শব্দের উপর ব্যাক্তি গোষ্ঠীর একক মালিকানা নেই। তারপরে বিশেষ রাজনৈতিক আবহাওয়ায় কোন শব্দ কোন দল গোষ্ঠীর যুদ্ধ পতাকা হিসাবে স্থায়ী রূপ নেয়। যেমন বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র দিয়ে জাসদ রাজনীতিকে বুঝানো হয়। শ্রেণী শত্রু / শ্রেণী শত্রু খতম নকশাল আন্দোলনের সাথে যুক্ত। জাসদের প্রথম ঘোষণায় জনযুদ্ধ  ও শ্রেণীশত্রু শব্দ সমূহের ব্যবহার চীনপন্থী কমিউনিস্টদের আদর্শিক প্রভাব হিসেবে দেখলে খুব বেশী অন্যায্য হবে না। ১৯৭৪ সালে জাসদের গণবাহিনী গঠন চীনপন্থী কমিউনিস্টদের অনুশীলনগত প্রভাব  ছিল। যুদ্ধত্তোর দেশে  একদিকে মুজিববাদী সমাজতন্ত্র এবং অন্যদিকে পরস্পর-বিরোধী রুশ- চীনপন্থী ধারার বিপরীতে  স্বতন্ত্র ধারা হিসেবে বৈজ্ঞানিক  সমাজন্ত্রকে লক্ষ্য ঘোষণা  করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জাসদ গঠিত হয়েছিল। জাসদ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রুশ ও চীনপন্থী সমাজতন্ত্রবাদের বাইরে বাঙালী জাতীয়তাবাদী চেতনার সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারার সূচনা ঘটিয়েছিল জাসদ । জোরালো ভাবে শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্ব ও আওয়ামী লীগের যুদ্ধকালীন ভূমিকার সমালোচনা উঠে এসেছিল জাসদের ঘোষণা পত্রে। কিন্তু মাত্র তিন মাস আগে জাসদ গঠনের উদ্যোক্তারা মার্ক্সবাদ -মুজিববাদ  এর জন্য সরব ছিলেন। ‘ রাজপথ থেকে গণ ভবন পর্যন্ত মার্ক্সবাদ- মুজিববাদ শ্লোগানে সরব ছিল জাসদ গঠনের সাথে যুক্ত যুদ্ধ ফেরত মুক্তিযোদ্ধারা , ছাত্রলীগ (বৈ :স ) এর নেতা কর্মীরা ।

মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা,  সমাজের অভ্যন্তরীণ রূপান্তর – সম্ভাবনা সঠিক খাতে প্রবাহিত না হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সমতা ভিত্তিক  আপোষহীন একটি রাজনৈতিক দলের জন্ম অনিবার্য হয়ে উঠেছিলো। অসম্পূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য ফসলই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ। জার্মানীর হিটলারের মতবাদকে জাতীয় সমাজতন্ত্র বলা হয়। মার্ক্সবাদ – বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রকে আন্তর্জাতিক মতবাদ । হিটলারের জাতীয় সমাজতন্ত্র মার্ক্সবাদ বিরোধী রাজনৈতিক চিন্তা। হিটলারের Mein Kampf ( আমার সংগ্রাম বা যুদ্ধ ) জাতীয় সমাজতন্ত্র বা নাৎসিবাদের ভিত্তি পুস্তক। জার্মানীর হিটলারের মতবাদ হচ্ছে গণবিরোধী ও শ্রমিক – কৃষক বিরোধী। জাতীয় সমাজতন্ত্রের সাথে নামের মিল থাকলেও জাসদ কখনোই হিটলার ও নাৎসীবাদকে সর্মথন করে নাই। জাসদ গঠনের পরে হিটলারের নাৎসিবাদের সাথে জাসদের নামের মিল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কথা উঠেছিল। সিরাজুল আলম খানের ভাষায় ”  কোন মহল ‘জাতীয় সমাজতন্ত্র ‘ কথাটার সঙ্গে নাৎসিবাদের মিলের উল্ল্যেখ করে নতুন এই [ জাসদ ] দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে।(২) জাসদের  ‘ জাতীয় সমাজতন্ত্র ‘ ও নাৎসিবাদের পার্থক্য নিয়ে বিস্তারিত কথা বলা থেকে বিরত থেকেছেন সিরাজুল আলম খান । জাসদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারগুলো কি ছিল এবং জাসদ কিভাবে এই অপপ্রচারের রাজনৈতিক জবাব দিয়েছিল সে সম্পর্কে সিরাজুল আলম খান কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না।  নিরবতা দিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতাকে ঢাকতে চেষ্টা করেছেন সিরাজুল আলম খান। নাৎসিবাদ ও জাতীয় সমাজতন্ত্র এই দুইটি শব্দ যে সমার্থক সে সম্পর্কে জাসদের উদ্যোক্তার কতখানি ওয়াকিবহাল ছিলেন তা বলা দুস্কর। তবে দলের নামের আগে জাতীয় রাখার পিছনে বিজয়ী বাঙালী জাতীয়তাবাদের প্রভাবকে উল্ল্যেখ করেছেন সিরাজুল আলম খান । (৩)  জাসদ অল্প বিস্তর যেটুকু সমাজতন্ত্রের চর্চা করেছে তা মার্ক্সবাদী সমাজতন্ত্রের। (৪)  জাসদের ভিতর থেকে ” জাতীয় সমাজতন্ত্র ” নিয়ে তেমন কোন সমালোচনার লিখিত রূপ চোখে পড়ে না। প্রাক্তন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গণকণ্ঠের সাংবাদিক জাসদ নামকরণ সম্পর্কে বলেন – ” বাহাত্তরের শেষ পর্বে এসে সিরাজুল আলমের নেতৃত্বাধীন এই শক্তিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল -জাসদ নামে রাজনৈতিক দলের জন্ম দেয়। দলের এই নামকরণ নিয়ে বিদ্বগ্ধ এবং স্বীয় সমর্থক মহলেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। তাদের ধারণা , যে দল নিজের নামকরণ করে হিটলারের কুখ্যাত নাৎসি বা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের অন্ধ অনুকরণে , তার সমাজতান্ত্রিক কেন , সমাজ চেতনা নিয়েই গভীর সন্দেহের অবকাশ আছে। ……… ! যুক্তিহীন আবেগের জোয়ারে সবাই সেদিন ভেসে গিয়েছিলাম। “ (৫) অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, ছাত্রলীগ (বৈ: স) এর সাথে যুক্ত ছিলেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক নামকরণ নিয়ে সলিমুল্লাহ খানের পর্যবেক্ষণ ” …. নিজেদের রাজনৈতিক দলের [ জাসদ] জন্য এমন একটি নাম তাঁহারা [ জাসদ নেতারা] কেমন করিয়া বাছিয়া ছিলেন তাহা পরিষ্কার নয়। এই নামের পেছনে যে বড় একটা কলঙ্ক জড়িত ছিল তাহা তো ইতিহাসের সামান্যতম ছাত্রেরও অজানা থাকার কথা ছিল না। …অবাক বিস্ময়ে ভাবি আমরা হয়তো এই পথেই বারবার ঠকিয়েছিলাম। (৬) সলিমুল্লাহ খান জাসদের রাজনৈতিক সংগ্রাম, যা সাধারণ ভাবে সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম হিসাবে প্রচার পেয়েছে তাকে ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। জনাব খান এই আন্দোলন -সংগ্রামকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেখেছেন। (৭)

জাসদ প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম মনিরুল ইসলামের  (মার্শাল মনি) ” জাতীয় সমাজতন্ত্র ” এর পক্ষে লিখেছেন। তবে মার্শাল মনির বক্তব্যে মধ্যে জাতীয় সমাজতন্ত্র শ্লোগান কিভাবে মার্ক্সবাদী আন্তর্জাতিকতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির সাথে মানিয়ে পথ চলবে তার কোন হদিস নেই।  মার্শাল মনির ভাষায় “৬৯য়ের আন্দোলন লক্ষ্য করেছে রাজপথে মারমুখি জনতার নিয়ন্ত্রক এক সুশৃঙ্খল কর্মীবাহিনীকে, যারা সমাজতন্ত্রের আদর্শে শুধু বিশ্বাসীই নয়, চলায়-বলায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যা প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে আসছে, যে কারণে ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক-কর্মচারী সর্বত্র সমাজতন্ত্রের নতুন এ জয় যাত্রায় শামিল হয়েছে। এই প্রথম তারা কোন পন্থী নয়, জাতীয় চেতনার মাঝে সমাজতন্ত্রের বিজয়ের স্বপ্ন দেখতে সক্ষম। শেখ মুজিবের পরীক্ষিত নেতৃত্বের সাথে এরকম একটা সুশৃঙ্খল কর্মীবাহিনীর সমন্বয় সাধারণ শিক্ষিত সমাজ থেকে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে ‘জাতীয় সমাজতন্ত্রের’ পরবর্তী পথপরিক্রমায় শুধু অপেক্ষা করছে একটার পর একটা বিজয়। “  (৮) মনিরুল ইসলামের বক্তব্য আবেগী অতিকথন। ছাত্রলীগে সমাজতন্ত্রের পক্ষে প্রস্তাব উঠেছিল ১৯৭০ সালের শেষের দিকে। ‘ ১৯৬৯-১৯৭০সালের ছাত্রলীগ  চীন পন্থীদের ব্যাঙ্গ – বিদ্রুপ করে স্লোগান ছিল -হো মাও- মাও / চীনে যাও / ব্যাঙ খাও। সিরাজুল আলম খান বা অন্য নেতারা কেউ  এর বিরোধিতা তো করেন নাই বরং এই জাতীয় স্লোগানে  মজা নিতেন।(৯)  এই স্লোগান তৎকালীন ছাত্রলীগের মনন বুঝতে কিছুটা সহায়ক ।

ঘোষণাপত্রে জাসদ নিজেদেরকে ‘ সহায়ক শক্তি ‘ ও গণ সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করেছিল। জাসদ অন্য বামপন্থীদের থেকে নিজেদেরকে পৃথক বুঝাতে অথবা অন্য কোন কারণে সমাজতন্ত্রের পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র  ব্যবহার করে দৃষ্টি আকর্ষণ ও বিতর্কের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছিল।  বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র জাসদের উদ্ভাবিত কোন মতবাদ নয়।  মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্রই হল বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র।  ইউরোপে প্রচলিত অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক ভাবনাকে এঙ্গেলস বলেছেন ইউটোপীয় – কাল্পনিক  সমাজতন্ত্র। ইউটোপীয় – কাল্পনিক  সমাজতন্ত্রের  বিপরীতে মাক্সীয় ধারার সমাজতন্ত্রকে আখ্যায়িত করেছেন বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র নামে। মার্ক্সবাদীরা মনে করে  মার্ক্স নির্দেশিত সমাজতান্ত্রিক তত্ব একমাত্র বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। (১০) বাংলাদেশের অপরাপর বামপন্থী দল গুলিও  মার্ক্সবাদী সমাজতন্ত্রে আস্থাশীল ছিল। বাংলাদেশের অপরাপর বামপন্থী দলের সমাজতন্ত্র ও  জাসদের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কোন পার্থক্য নেই। নির্মম হলেও সত্য বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের স্লোগান তোলা দলের নাম রাখা হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ।

চলবে . . .

দ্বিতীয় পর্ব আগামীকাল  প্রকাশিত হবে

অপু সারোয়ার : ফ্রি ল্যান্স লেখক।

 তথ্য সূত্র  

——-

() জাসদের ভাঙ্গন

() ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ সময় কালে জাসদের প্রধান ধারার নেতৃত্বে ছিলেন মেজর এম জলিল রব

( )১৯৭৬ সালে এম আউয়াল জাসদ গঠন করে জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দল বিধির অধীনে নিবন্ধিত হয় জাসদ (আউয়াল) ছিল জাসদের প্রথম ভাঙ্গন ১৯৭৬ সালে এম আউয়াল রহস্য জনক ভাবে খুন হওয়ার সাথে এই গ্ৰুপের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সমাপ্তি ঘটে

() ১৯৮০ সালে জাসদ ভেঙে বাসদ গঠিত হয় উল্লেখ্য যে আওয়ামী লীগের সাথে ঐক্যকের বিরোধিতা করে বাসদ গঠিত হয়েছিল ১৯৮৩ সালে বাসদ   ১৫ দলীয় ঐক্যজোটে যোগ দেয় ঐক্যজোটের ১৫ শরিক দল গুলির অন্যতম ছিল জাসদ আওয়ামী লীগ পরবর্তীতে বাসদ দুই ভাগে বিভক্ত হয় ১৯৮৩ সালে, বাসদ (নয়া ইশতেহার) বাসদ (ভ্যানগার্ড) পরবর্তীতে বাসদ (ভ্যানগার্ড) তিনটি উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে

() ১৯৮৩ সালে মেজর জলিল জাসদ ত্যাগ করে ইসলামী আন্দোলন গঠন করেছিলেন মেজর জলিলের দলত্যাগ জাসদের সাংগঠনিক কাঠামোয় তেমন প্রভাব না ফেললেও দলের ভাব মূর্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল ১৯৮৪ সালে মেজর জলিলের মৃত্যর মধ্য দিয়ে এই দলের বিলুপ্তি ঘটে

( )১৯৮৩ সালে জাসদ বিভক্ত হয়ে জাসদ (মীর্জাসিরাজইনু) জাসদ (রব) গঠিত হয়

( ১৯৮৬ সালে জাসদ (সিরাজইনু) আবার বিভক্ত হয়ে জাসদ (আরেফইনু) জাসদ (মীর্জাসিরাজ) গঠিত হয়

() ১৯৮৮ সালে জাসদ (মীর্জাসিরাজ) বিভক্ত হয়ে জাসদ (মীর্জা) এবং জাসদ (সিরাজ) গঠিত হয়েছিল জাসদ (সিরাজ) বিলুপ্ত হয়ে বিএনপি বিলীন হয়ে যায়

() ১৯৮৮ সালে জাসদ (মীর্জা), বাসদ (মান্না) মিলে জনতা মুক্তি পার্টি গঠন করে ১৯৯২ সালে জনতা মুক্তি পার্টি আওয়ামী লীগ বিলীন হয়ে যায়

() ১৯৯৭ সালে জাসদ (আরেফ–  ইনু), জাসদ (রব), বাসদের একাংশ (বাদল) একীভূত হয়ে জাসদ ঐক্যবদ্ধ পুনর্গঠিত হয়

() ২০০১ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত জাসদ তিন ভাগে বিভক্ত হয়েছে বর্তমানে জাসদ নামের দল গুলি হচ্ছে জাসদ (ইনু), জাসদ (আম্বিয়া) জাসদ (রব)

 () ১৯৮০ সালে জাসদ ভাঙ্গন কালে লক্ষীপুর গ্রুপ নামে আঞ্চলিক উপদলের সৃষ্টি হয়েছিল এই গ্রুপ জাসদের রাজনৈতিক বক্তব্য থেকে দূরে সরে যায় এই গ্ৰুপের কেউ গণফোরাম অন্য দলের সাথে যুক্ত হয় জাসদ বাসদের ভ্রান্তনীতিলক্ষীপুর গ্ৰুপের খোলা চিঠি প্রকাশ কাল ১৯৮১ এই গ্ৰুপের মতবাদিক সংগ্রাম ভিত্তিক একমাত্র প্রকাশনা 

() পৃষ্ঠা ১৬৫ আমি সিরাজুল আলম খানএকটি রাজনৈতিক জীবনালেখ্য শামসু্দ্দিন পেয়ারা

() () পৃষ্ঠা ১৬৪ আমি সিরাজুল আলম খানএকটি রাজনৈতিক জীবনালেখ্য শামসু্দ্দিন পেয়ারা

() সাপ্তাহিক, ঈদুল ফিতর সংখ্যা ৩০ মে ২০১৯ জাসদ গঠনের সামান্য পরে মবিনুল হায়দার চৌধুরীর সাথে সিরাজুল আলম খানের আলাপচারিতার কথা উল্ল্যেখ করেছেন মবিনুল হায়দার চৌধুরী আত্মজীবনী মূলক সাক্ষাৎকারে মবিনুল হায়দার চৌধুরী ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ভারতে SUCI সোশালিস্ট ইউনিটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়া এর নেতা ছিলেন ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে শুরু করেন ১৯৮০ সালে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পরে বহুধা বিভক্ত বাসদ একাংশের সম্পাদক হয়েছিলেন

() ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত জাসদের প্রকাশনাসাম্যবাদ মার্ক্সবাদলেনিনবাদ, মাওসেতুং এর উদৃতি কিউবার বিপ্লবীদের মানকারডা আক্রমণের বিষয় উল্ল্যেখ করা হয়েছে

() কাছের মানুষ দূরের মানুষরায়হান ফিরদাউস মধু কমরেড মাহবুবুল হক স্মারক গ্রন্থ পৃষ্ঠা ৩৫২ রায়হান ফিরদাউস: ছাত্রলীগ (বৈ: ) সাবেক সাহিত্য সম্পাদক গণকণ্ঠের অন্যতম প্রতিষ্টাতা সাংবাদিক জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য 

() আমাদের কালের নিয়তিসলিমুল্লাহ খান কমরেড মাহবুবুল হক স্মারক গ্রন্থ পৃষ্টা ৯৭ লেখক অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসঢাকা ১৯৮৩ সালের পর থেকে সলিমুল্লাহ খান সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত নন

() পূর্বোক্ত

() পৃষ্ঠা ৮৬ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমাজতন্ত্রলেখক মনিরুল ইসলাম মনিরুল ইসলাম জাসদ রাজনীতিতে মার্শাল মনি হিসেবে পরিচিত যুদ্ধ পূর্ব কালে ছাত্রলীগের সহ সভাপতি জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক  সদস্য জাতীয় শ্রমিক জোটের সাবেক সভাপতি বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয় নন  ” এই মুহূর্তে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠন আত্ম হত্যার সামিলপ্রকাশ কাল : জুন ১৯৯৪ সাল তৎকালীন সময়ে জাসদের রাজনীতির সাথে ভিন্ন মত প্রকাশ করে মনিরুল ইসলাম এই পুস্তিকা প্রকাশ করেছিলেন এর পর ধীরে ধীরে তিনি রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন 

(রায়হান ফিরদাউস মধু এর সাথে আলাপচারিতা ১০ অক্টোবর ২০২২।। রায়হান ফিরদাউস মধুমুক্তিযোদ্ধা জাসদের মুখপত্র গণকণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা অন্যতম সাংবাদিক ১৯৭০১৯৮০ সময় কালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্ব পূর্ন দায়িত্ব পালন করেন

(১০) Socialism: Utopian and Scientific by Friedrich ENGELS ১৮৮০ সালে ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস রচিত গ্রন্থ বইটি কাল্পনিক সমাজতন্ত্র বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করে