চলমান সংবাদ

গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জোড়ালো হচ্ছে

চট্টগ্রাম নগরীতে গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জোড়ালো হচ্ছে। চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ আয়োজিত গণশুনানির পর এবার গৃহকর কমানোর দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব। চসিক ধার্য করা বর্ধিত গৃহকরকে ‘গলা কাটা’ বলে মন্তব্য করে তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। তা না হলে হরতাল, নগর ভবন ঘেরাওসহ নানান কর্মসূচি ঘোষণা করার কথাও বলেছে সুরক্ষা পরিষদ। রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নতুন করে গৃহকর পুনঃমূল্যায়নের নামে গৃহকরের পরিমাণ ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ আশি হাজার টাকা হওয়া, ভাড়া আদায়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের প্রক্রিয়ার কারণে চসিকের হোল্ডিং ট্যাক্স এখন বাড়ির মালিকের কাছে আতংকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিবৃতিতে ক্যাব জানায়, গৃহকর মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় সিটি কর্পোরেশনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সিটি কর্পোরেশন গৃহকর ১০ গুণের বেশি বৃদ্ধি মানুষের ভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। অনতিবিলম্বে বর্তমানে চলমান গৃহকর আদায় প্রক্রিয়া বন্ধ করে বাড়ি ভাড়ার ভিত্তিতে গৃহকর মূল্যায়ন না করে সম্পত্তির অবস্থান, বর্গফুট, গুণগত মান এবং কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যই হতে হবে গৃহকর নির্ধারণ। দেশের সব সিটি কর্পোরেশনের গৃহকর নির্ধারণের পদ্ধতিকে ইউনিফর্ম পদ্ধতিতে নিয়ে আসার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠন করে ধাপে ধাপে কর বৃদ্ধি ও কর মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে আরো স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে কর আদায়কে জনবান্ধব করতে হবে। এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে নগরের কদমতলীতে গণশুনানির আয়োজন করে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। ‘গলাকাটা হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে’ এই গণশুনানিতে বর্ধিত গৃহকর কমাতে সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মীদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলেন নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। গণশুনানিতে ১৫ জন করদাতা গৃহকর নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। তাদের দাবি আগের তুলনায় ৫ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গৃহকর কমিয়ে দেওয়ার নামে রাজস্ব বিভাগের লোকজন তাদের কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেছেন। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে আগের হোল্ডিং ট্যাক্স দিতেই হিমশিত খাচ্ছেন জানিয়ে তারা বলেন, নতুন হারে কর দেওয়া ভবন মালিকদের পক্ষে অসম্ভব। গণশুনানিতে মঞ্চে থাকা বক্তারা বলেন, সিটি কর্পোরেশন নাগরিক সেবা প্রদানে চরমভাবে ব্যর্থ হলেও গৃহকর আদায়ে তৎপর রয়েছে। করোনা আর রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সাধারণ মানুষ টিকে থাকতে সংগ্রাম করছেন। আয় না বাড়লেও ব্যয় বেড়ে চলছে। খাবার কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের। এই রকম মুহূর্তে সিটি কর্পোরেশন গৃহকর বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। চসিক’র গৃহকরের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। বর্তমানে ধার্য করা বর্ধিত গৃহকরকে ‘গলা কাটা’ বলে মন্তব্য করে তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তা না হলে হরতাল, নগর ভবন ঘেরাওসহ নানান কর্মসূচি ঘোষণা করার কথাও বলেছে সুরক্ষা পরিষদ। রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো ক্যাব’র বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘নগরে বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের ডাটাবেস থাকা না থাকায় হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য ট্যাক্স আদায়ে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির মাত্রা বাড়ছে। তাই সিটি করপোরেশনের গৃহকর আদায়ে নোটিশ প্রদান প্রক্রিয়া, হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ, আদায় ইত্যাদি সব প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড করা হলে এই খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম অনেকাংশে কমে যাবে’।

# ২৩.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #