চলমান সংবাদ

খাতুনগঞ্জ দুইদিন স্থবিরতার জের

-বেড়েছে পেঁয়াজ-চিনি-ডালের দাম কাঁচাবাজারে বেড়েছে মুরগি-ডিম সবজির দাম

দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে দুইদিন ধরে পণ্য উঠানামাসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। এতে ক্রেতা সংকটে বিক্রি না হওয়ায় পচতে শুরু করেছে আদা। অপরদিকে সরবরাহ সংকটে বেড়েছে পেঁয়াজের দামও।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং অন্যদিকে শ্রমিকদের দুদিনের বিক্ষোভে বেচাবিক্রি একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে আদা থেকে পানি বের হতে শুরু করেছে। অপরদিকে খাতুনগঞ্জে পরিস্থিতি খারাপ থাকায় আমদানিকারকরা পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে না পাঠিয়ে দেশের অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। সরবরাহ সংকটে সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও পড়েছে প্রভাব। গত সপ্তাহে খুচরায় ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও বর্তমানে প্রতিকেজি পেয়াজ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে চিনি আর মসুর ডালও। গতসপ্তাহে খোলা চিনি ৯৩ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে মসুর ডাল ১২৫ টাকায় বিক্রি হলেও শুক্রবার বিক্রি হয় ১৩০ টাকায়। নগরের পাহাড়তলি বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাইকারিতে চিনির দাম বেড়ে গেছে। আমরা এখন কেজিপ্রতি ১শ টাকায় চিনি কিনে এনে ১০৫ টাকায় বিক্রি করি। তবে আগের চালান থাকায় প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। তবে নতুন চালান আসলে প্যাকেটজাত প্রতিকেজি চিনির দাম ১১০ টাকার বেশি হবে বলে আশংকা করছি।

এদিকে চট্টগ্রামের বাজারে আবারো বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি আর ডিমের দাম। অন্যদিকে সবজির দামও বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ডজনপ্রতি ডিমের দামও বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লাল ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকায়। আগের দামে হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায়। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ থেকে ২২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি সিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। আকার ভেদে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি শসা ও লম্বা বেগুন ৮০ টাকায়, গোল বেগুন ১২০, করলা ৮০, টমেটো ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া কেজিপ্রতি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, পটল ৬০, ঢেঁড়স ৭০, কচুর লতি ৮০, কাঁচা পেঁপে ৪০, বরবটি ৮০ ও ধুনধুল ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিস চাল কুমড়া ৬০ টাকা; লাউ আকারভেদে ৬০ টাকায় এবং কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

এদিকে ভোজ্যতেলের দাম কেজিতে ১৪ টাকা কমলেও তার প্রভাব নেই বাজারে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে তেল। বাজারে এখনো প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা এবং পলিব্যাগ ভর্তি তেল ১৮৮ টাকায়। এছাড়া খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা। বাজারে রসুনের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়।

অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের বাজার। প্রতিকেজি তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকায়, রুই ৩০০-৩৫০ টাকায়, কাতাল ২৫০-৩৫০ টাকায়, চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৮০০ টাকা দরে। পাঙাশ ২৫০ থেকে ৩শ, দেশি শিং মাছ ৩৫০ থেকে ৪শ, শিং মাছ ২শ, কই মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা মাছ সাড়ে ৫শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সামুদ্রিক অন্যান্য মাছ।

নগরীর জারমালখান এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, একেকদিন এক একটার দাম বেড়েই চলেছে। সবকিছুর দাম এখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। শীতের মৌসুম আসার আগেই সবজির দাম চড়া। তেলের দাম কমেছে ১৪ দিন আগে। কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে এখনো আগের দামে। বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। ম্যাজিস্ট্রেট আসছে-এমন খবর শুনলে মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে। এছাড়া মূল্য তালিকা চোখে পড়ে না।

# ২১.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #