চলমান সংবাদ

ব্যাংকিং খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে প্রায় ৭%

নারী কর্মকর্তাদের সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ বৈদেশিক ব্যাংকগুলোতে। এসব ব্যাংকে নারীদের অংশগ্রহণ রয়েছে ২৫.৯৪%। এরপরে এগিয়ে বেসরকারি বাণিজ্য ব্যাংকগুলো, এখানে নারীদের অবস্থান ১৯.২১%। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর নারীদের অংশগ্রহণ যথাক্রমে ১৬.৪৮% ও ১৪.২৭%।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি)  লিঙ্গ সমতা এসডিজিটি অর্জনের জন্য সরকারি-বেসরকারি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াছে। গত এক বছরে ব্যাংকিংখাতে নারী কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৬.৮৯%, অর্থাৎ প্রায় ৭%। লিঙ্গ সমতা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছয় মাসিক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের (জানুয়ারি-জুন) ব্যাংকিংখাতে মোট নারী কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১,৫৪৮ জন। যা মোট ব্যাংকিংখাতে ১৬.২৮%। ২০২১ সালে এ খাতে নারীদের পরিমাণ ছিল ২৯,৫১৩ জন। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২০৩৫ জন নারী কর্মকর্তা।

দেশে নারী কর্মকর্তাদের সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ বৈদেশিক ব্যাংকগুলোতে। এসব ব্যাংকে নারীদের অংশগ্রহণ রয়েছে ২৫.৯৪%। এরপরে অংশগ্রহণে এগিয়ে বেসরকারি বাণিজ্য ব্যাংকগুলো, এখানে নারীদের অবস্থান ১৯.২১%। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর নারীদের অংশগ্রহণ যথাক্রমে ১৬.৪৮% ও ১৪.২৭%।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৭টির মধ্যে লিঙ্গ সমতা পঞ্চম গোল। বাংলাদেশ এ লক্ষমাত্রা অর্জনে এবং সকল ক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নে অধিক গুরুত্বারোপ করছে। লিঙ্গ সমতা গোল অর্জনে  ৯টি টার্গেটে নারী এবং মেয়েদের প্রতি সব ধরণের অসমতা, হিংস্রতা দূরীকরণ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সমাজের সকল ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে নারীদের পূর্ণ এবং কার্যকর অংশগ্রহণের উল্লেখ থাকায় সরকারি-বেসরকারিভাবে নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, নারী কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ বাড়লেও উচ্চ পর্যায়ে তথা বোর্ডে নারীদের অবস্থান অনেক কম। জানুয়ারি-জুন ২০২২ ষান্মাসিকে বোর্ড সদস্য হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ১৩.৫৬%। এর মধ্যে বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহে নারী বোর্ড সদস্যের অংশগ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি ১৫.৯১%, অপরদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহের নারী বোর্ড সদস্যের অংশগ্রহণ মাত্র ৪%।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট ইউনিটের পরিচালক রোকেয়া খাতুন বলেন, “অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি চাকরির তুলনায় নারীদের ব্যাংকিং খাতে চাকরির নিরাপত্তা ও সার্বিক নিরাপত্তা বেশি, তাই এ খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটি, যাতায়াত সুবিধা ভালো থাকায় নারীরা ব্যাংক খাতের জব বেশি পছন্দ করছে।”

রিপোর্টে দেখা যায়, চলতি বছরের (জানুয়ারি-জুন) বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহে নারীদের কর্মসংস্থান বদলের হার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন, বিদেশি ও বেসরকারী ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেশি।

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ/সচেতনতা নীতি প্রণয়ন, নারীদের যাতায়াত সুবিধা, লিঙ্গ সমতা বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নারীদের ব্যাংকিংখাতে অংশগ্রহন বেড়েছে।”

এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৪৬ জন। যা গত বছরের জুলাই-ডিসেম্বরের তুলনায় মাত্র ৭ জন বেশি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র বাড়লেও যাতায়াত সুবিধা এবং লিঙ্গ সচেতনতা বিষয়ক প্রশিক্ষণের অভাবে সেখানে নারী কর্মচারীদের বৃদ্ধি কম ছিল।

দেশে নারীদের ব্যাংকিংখাতে অংশগ্রহণের পাশাপাশি নারী উদ্যেক্তাদের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিএমএসএমই খাতে নারীদের জন্য মোট ঋণের ১৫% লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

চলতি বছরের জুন শেষে মোট সিএমএসএমই খাতে নারীদের নীট ঋণ দাঁড়িয়েছে ১০৪৪৫ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৪.৪৫%। যদিও আগের বছর একই সময়ে এই খাতের নারীদের ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮০১ কোটি টাকা। সে সময়ের ঋণের স্থিতির ৪.০৮%।

# ১২/১০/২০২২, ঢাকা #