চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম সংবাদ

চসিক ভ্রাম্যমাণ আদালত ফুটপাত ও রাস্তা হতে ৫০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ৬ ব্যক্তিকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার নগরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। চসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী পরিচালিত অভিযানে নগরীর বন্দরটিলা ও নেভী হাসপাতাল গেইট এলাকায় রাস্তার উভয় পাশে অবৈধ দোকান বসিয়ে জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় প্রায় ৫০টি দোকান উচ্ছেদ করে রাস্তার জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।

এই সময় অবৈধভাবে রাস্তায় ব্যবসা করার অপরাধে ৩ ব্যক্তিকে ১৫ হাজার টাকা ও ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করার অপরাধে ৩ ব্যক্তিকে ৬ হাজার টাকাসহ ২১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে আরো অংশ নেন সিটি মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাসেম। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটকে সহায়তা করেন সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।

# ০৬.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #

চট্টগ্রামের পটিয়ায় কৃষি খামারিকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়ে কাজ করার সময় আনু মিঞা (৪৫) নামে এক কৃষি খামারিকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়ের জঙ্গলশ্রীমা পাহাড়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। নিহত আনু মিয়া (৪৫) পার্শ্ববর্তী খরনা ইউনিয়নের উত্তর খরনা গ্রামের ফকিরপাড়ার কালা মিয়ার ছেলে। তিনি পাহাড়ি এলাকায় চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। স্থানীয় কৃষকদের বরাতে পুলিশ জানায়, জঙ্গলশ্রীমা পাহাড়ে আনু মিয়ার কৃষি খামার প্রকল্প আছে। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। সকালে তিনি ওই খামারে কাজ করছিলেন। সকালে একদল লোক খামারের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। তখন আনু মিয়া জানতে চান- তোমরা কারা? তারা জবাব দেয়- তোর বাপ। এরপর আনু মিয়ার সাথে তাদের তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তার বাম উরু এবং কোমরের নিচে দুই রাউন্ড গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। পটিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, পাহাড়ি জমিতে প্রতিদিনের মতো সকালে কাজে গিয়েছিলেন আনু মিঞা। সেখানে পাহাড়ের মুখোশ পরা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। পাহাড় থেকে একজন নেমে এসে আনু মিঞাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে তারা পাহাড়ি সন্ত্রাসী। দুর্গম পাহাড়টিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসীরা এসে সেখানে অবস্থান করে। পুলিশ অভিযান চালালে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে সরে যায়। আমাদের ধারণা, পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এটা আমরা যাচাইবাছাই করে দেখছি। নিহতের মরদেহ সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। হত্যাকারীদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান চলছে। # ০৬.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #

চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুর অবৈধ দখলমুক্ত করতে আবারো কঠোর বার্তা প্রশাসনের

চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুরের সরকারি খাস জমি অবৈধ দখলমুক্ত করে সেখানে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনায় কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে আবারো কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৫তম সভায় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন বলেন, জঙ্গল সলিমপুরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার পর তাদের নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে হবে। সেজন্য তাদের এক মাস সময় দেওয়া হবে। তবে জঙ্গল সলিমপুরে বসবাসকারীদের দাবি তাদের পুর্নবাসন করতে হবে; এমনকি উচ্চ আদালতে রিট করেও তাদের দাবির স্বপক্ষে একটি আদেশও নিয়ে এসেছেন। কিছু জায়গা অবৈধ বসবাসকারীদের থেকে দখলমুক্ত করলেও বেশ কিছুদিন ধরে থমকে আছে জঙ্গিল সলিমপুরের অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান। যদিও জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে সলিমপুর ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে। জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড়ে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘তাদের নিজ স্থায়ী ঠিকানা যেখানে আছে; সেই অঞ্চলে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। তবে প্রসেসটা (নিয়ম) কিছুটা সহজ করে দিব। এর মধ্যে এক মাসের সময় দিয়ে তাদের গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, মাইকিং করা হবে এবং লিফলেট বিতরণ করা হবে। এছাড়া তাদের নিজ স্থানের কথা উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে তারা আবেদনগুলো পাঠাবেন। তারা যে উপজেলার বাসিন্দা, সেই উপজেলায় তাদের আবেদনগুলো পাঠানো হবে। এরপর সেই উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) উপজেলায় যে কমিটি আছে; তারা পর্যালোচনা করবেন। যদি মনে করেন তারা প্রকৃতিভাবে ভূমিহীন, কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকে এবং সেখানকার বাসিন্দা হন; তাহলে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলাতে সেই ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে পাহাড়ে যাতে নতুন করে আর কোনো পাহাড় কাটা না হয়; সে বিষয়ে নজরদারি অব্যাহত থাকবে।’ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, শুধু জঙ্গল সলিমপুর নয়; পুরো চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়ীয় অঞ্চলে যারা অবৈধ বসবাস করছে; তাদের উচ্ছেদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়া পাহাড়গুলোর মালিকানায় যে সংস্থা রয়েছে; তারা নিজ উদ্যোগে তাদের তালিকা তৈরি করবে। একইসঙ্গে পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের আইনানুগভাবে উচ্ছেদ চালানো হবে।’ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনাগুলোতেও আর নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না। এছাড়াও সলিমপুরে পাহাড় ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যালয় স্থাপন করা হবে। একইসঙ্গে যে অংশে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেগুলো যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে; সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা ও খালি স্থানগুলোতে র‌্যাব-পুলিশ-আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে নিয়মিত টহল দেওয়া হবে। খুব শিগগিরই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নতুন করে যাতে কেউ পাহাড় না কাটে সেজন্য নজরদারি অব্যাহত থাকবে। সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা অবৈধভাবে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করেছে তাদেরকে আর কোনভাবেই পাহাড় কাটতে দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে প্রশাসন। জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধভাবে যারা বসবাস করছে তাদের ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে খুব শিগগিরই একটি চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হবে। সেই নোটিশ দেওয়ার পর সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হবে। জঙ্গল সলিমপুরের পরিবেশ প্রতিবেশ সমুন্নত রেখে সেখানে সরকারি স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, সরকারি জায়গা দখল করে যারা পাহাড় কেটে সরকারি খাস জমি বিক্রি করছে তাদের পেছন থেকে ইন্ধন দিচ্ছে কিছু লোক। আর যখনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উচ্ছেদে যান তখনই তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা প্রশাসনের ওপর হামলা চালায়। তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাও রয়েছে। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিবো। সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ বন সংরক্ষক আবুল কালাম, বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মাহাবুবউল আলম প্রমুখ। # ০৬.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #