চলমান সংবাদ

ভারত সফরের কৃত্রিম সাফল্য প্রচারের মাধ্যমে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থতা, কৃষকের সার পেতে ভোগান্তিকে আড়াল করা যাবে না –বাম গণতান্ত্রিক জোট

বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রিয় পরিচালনা পরিষদের এক সভা আজ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, সকাল ৯টায় সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাম জোটের সমন্বয়ক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ,সহ সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদ (মার্ক্সবাদি)-র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সীমা দত্ত, গনতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, রুবেল সিকদার প্রমূখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, চাল, ডাল ,তেল, চিনি, ডিটারজেন্ট, ঔষধ, সিমেন্ট, রড সহ সকল পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনে সরকারি ব্যর্থতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে দাম কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে ব্যবসায়ী তোষণ নীতির গ্রহন করেছে।নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পন্যমুল্য যা বেড়েছে বলে বলা হচ্ছে, দেশের বাজারে তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি বাড়ানো হচ্ছে। চাল আমদানির শুল্ক কমানোর পরেও চালের দাম বৃদ্ধি কার স্বার্থে প্রশ্ন তুলে নেতৃবৃন্দ বলেন সরকার প্রকারন্তরে ব্যবসায়ী ও কমিশন ভোগীদের প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। তাদের পকেট ভারী করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন,দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও আমন মৌসুমে সারের অভাব, সময়মত সরবরাহ না করা, প্রয়োজন অনুযায়ী সার না পাওয়ায় কৃষকের ক্ষোভ চরমে উঠেছে। সার ব্যবসায়ী ও ডিলারদের বাজার কারসাজীর কারণে আমন ফসলের মারাত্নক ক্ষতি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশংকা প্রকাশ করেছেন।
কৃষিক্ষেত্রে সরকারের এই দায়িত্বহীনতার সমালোচনা করে নেতৃবৃন্দ কম দামে সার, ডিজেল সরবরাহের দাবী জানান।
সভায় প্রশ্ন উত্থাপন করে নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর জনগনের জন্য কি সুফল বয়ে নিয়ে এসেছে? তিস্তা সহ অভিন্ন নদীর পানি বন্টন, বাণিজ্য ঘাটতি দূর করা, বাংলাদেশী পণ্যের এন্টি ডাম্পিং আইন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ নিয়ে কার্যকর আলোচনা হয় নি কিন্তু ভারতের বিদ্যুৎ কেনা, ট্রানজিট সুবিধা দেয়া, ভারতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে নেপালের বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যার সুফল ভারতের ঘরেই যাবে। বিতর্কিত রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতে বসে উদ্বোধনের নিন্দা করে নেতৃবৃন্দ বলেন এর মধ্য দিয়ে পরিবেশ বিপর্যয়, সুন্দরবন ধ্বংসের পথ উন্মোচন আর জনগনের দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন,ভারত সফরের কৃত্রিম সাফল্য প্রচারের মাধ্যমে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থতা, কৃষকের সার পেতে ভোগান্তিকে আড়াল করা যাবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচন কমিশন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও সুস্ঠ নির্বাচনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, ‘ইভিএম’, ‘নির্বচনী রোডম্যাপ’ সহ নানা ইস্যু সামনে এনে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারসহ নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি গৌন করে ফেলতে চাইছে। নেতৃবৃন্দ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন সহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার এর দাবিতে আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ নেত্রকোনায় সিপিবির সমাবেশ ও জোটের সমন্বয়ক সহ সিপিবি নেতৃবৃন্দ, ঢাকায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ দেশের বিভিন্ন স্থানে সভা সমাবেশে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, হামলা করে বামপন্থীদের কন্ঠরোধ করা যাবে না।
সভা থেকে নেতৃবৃন্দ সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরন, লুটপাট, দুর্নীতির বিরুদ্ধে গন আন্দোলন শক্তিশালী করতে জনগনের প্রতি আহবান জানান।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ।