চলমান সংবাদ

মিতু হত্যার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল, শুনানি ১০ অক্টোবর

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে জমা দেওয়া অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগপত্র পর্যালোচনার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য আগামী ১০ অক্টোবর সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আব্দুল হালিমের আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়। মঙ্গলবার মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র আদালতে নগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখায় জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেনের (পিবিআই) পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। লাগেজভর্তি কেস ডকেটে ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার নথিপত্র রয়েছে। মূল অভিযোগপত্র নয় পৃষ্ঠার হলেও এর সঙ্গে দশ খণ্ডের নথি সংযুক্ত করা হয়। তথ্যপ্রমাণসহ অভিযোগপত্রটি জমা দেওয়ার সময় তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পিবিআই মেট্রোর পুলিশ সুপার কাজী নাইমা হাছানও ছিলেন। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেছি। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় সেটি দেখে সই করে নথিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অভিযোগপত্র পর্যালোচনা করে সেটি গ্রহণ করবেন কি না অথবা এ বিষয়ে অন্য কোনো আদেশ দেবেন কি না, নারাজি আবেদন থাকলে এর শুনানিসহ সার্বিক বিষয়ে ১০ অক্টোবর সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।’ অভিযোগপত্রে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু এবং শাহজাহান মিয়া। আসামিদের মধ্যে কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা ও খাইরুল ইসলাম কালুকে পলাতক দেখানো হয়েছে। জামিনে আছেন এহতেশামুল হক ভোলাইয়া। আর কারাগারে আছেন- বাবুল আক্তার, মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন এবং শাহজাহান মিয়া। পিবিআইয়ের জমা দেওয়া ২০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে মোট ৯৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। অভিযোগপত্রের সঙ্গে ২১ ধরনের আলামত জমা দেওয়া হয়। দুই হাজার ৮৪ পাতার কেস ডকেটে আসামি ও সাক্ষীদের জবানবন্দিসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০২০ সালে মিতু হত্যা মামলার তদন্তভার পাওয়ার আড়াই বছর পর পিবিআই চাঞ্চল্যকর মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়। এর আগে নগর গোয়েন্দা পুলিশের মাধ্যমেও মামলাটির তদন্ত করা হয়েছিল। তবে তারা তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেনি। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত বিদেশি এক নারীর সঙ্গে বাবুলের পরকীয়ার জড়িয়ে পড়া নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। এর জেরে বাবুল আক্তার স্ত্রী মিতুকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। তিন লাখ টাকায় ‘খুনি’ ভাড়া করে স্ত্রীকে খুন করায়। নিজেকে আড়ালে রাখতে প্রচার করেন- জঙ্গিরাই মিতুকে খুন করেছে। মিতুকে খুনের মিশনে নেতৃত্ব দিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুলের ‘সোর্স’ মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা। সঙ্গে ছিল আরও ছয়জন। হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল মুসাকে ফোনে নির্দেশ দেন- গা ঢাকা দেওয়ার জন্য। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল আক্তার। হত্যাকান্ডে জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে স্বামী বাবুল আকতার পরদিন ৬ জুন পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। পাঁচলাইশ থানা পুলিশের পর নগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্তের ভার পায় পিবিআই। # ১৪.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #