চলমান সংবাদ

কাঁকড়ার জন্য ফুটওভারব্রিজ!!

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস দ্বীপে (Christmas Island) প্রতি বছর বৃষ্টির মৌসুম শুরু হলেই (অক্টোবর-নভেম্বর) পুরো দ্বীপের পাহাড় বন জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক মিলিয়ন লাল কাঁকড়া গুলো সমুদ্রের দিকে পাড়ি জমায়। তাদের এই যাত্রা (migration) মূলতঃ শুরু হয় চাঁদের হিসেবে। অর্থাৎ অক্টোবর মাসের প্রথম পূর্ণিমা হলেই সাধারণত বৃষ্টি শুরু হয়। আর এসময় সাগরের জোয়ার অন্য সময়ের চেয়ে কিছুটা বেশি উঁচু হয় আর এই সময়টিই কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম। ফলে কাঁকড়া গুলো দ্বীপের চারদিকে সমুদ্র অভিমুখে রওয়ানা শুরু করে। তারা তীরে গিয়ে বাসা (গর্ত) তৈরি করে প্রজনন করে এবং ডিম পাড়ে।

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে সোজা কয়েকশত কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ১৩৫ বর্গ কিঃমিঃ আয়তনের দ্বীপটির সমুদ্র উপকূলীয় এলাকাজুড়ে রয়েছে সড়ক (motor road)। সুতরাং কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুমে সাধারণ ভাবেই গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে লাখ লাখ কাঁকড়া মারা যেত। কারণ এই সময়টা (সমুদ্র যাত্রা) প্রায় মাসব্যাপী দিন-রাত ধরে চলতে থাকে।
তাই অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ স্টিলের তৈরি বিশেষ ধরণের কতোগুলো কাঁকড়া পারাপার ব্রিজ তৈরি করে দিয়েছে। রাস্তার ধারগুলো স্টিল ও প্লাস্টিক পাতের বাঁধা বসিয়ে ব্রিজ গুলোর অভিমূখী করে দিয়েছে ফলে কাঁকড়া গুলো সেদিকেই ধাবিত হয়ে শুধু মাত্র ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পারাপার হয়। এছাড়াও কিছু এলাকার রাস্তা গুলো এসময় বন্ধ রাখা হয়, নির্দেশনা ফলক লাগানো হয় এবং রেডিওতে জনসচেতনতা মূলক নির্দেশনা প্রচার করা হয়।

প্রতি বছর এই সময়ে শতশত পর্যটক ও প্রাণী বিজ্ঞানী কাঁকড়াদের ‘সমুদ্র যাত্রা’ দেখতে সেখানে ভিড় করে। আর কাঁকড়া গুলোও কয়েক বছরে সেতু ব্যবহারে বেশ অভ্যস্ত হয়ে গেছে!

* পৃথিবীতে শুধু মানুষই সভ্য নয়…. অনেক প্রাণীই সভ্য, সামাজিক এবং মানুষের নিয়মকে শ্রদ্ধা করে মেনে চলে। তারাও এই পৃথিবীর অংশ, এই পৃথিবী শুধু মানুষের একার নয়। তাই, আসুন প্রাণীদের প্রতি যত্নবান হই, বিনাকারণে প্রাণী হত্যা বন্ধ করি।

সূত্র : ওয়ার্ল্ড নলেজ