চলমান সংবাদ

ভোগ্যপণ্যের বাজারে আগুন ক্রেতার নাগালের বাইরে শুঁটকি দাম

দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা চলছে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। বেড়েছে সকল নিত্যপণ্যের দাম। বাজারে এখন চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে সব ভোগ্যপণ্যের দামই চড়া। এসব নিত্যপণ্যের সঙ্গে এখন ক্রেতাদের পকেট কাটছে সাবান-শ্যাম্পুসহ সব ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী। এক মাসের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। এদিকে দাম বেড়ে ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে শুঁটকি মাছও। মাসের ব্যবধানে সব ধরনের শুঁটকি মাছের কেজিতে দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৩শ টাকা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাগরে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়া, শুঁটকি তৈরির অন্যতম উপাদান লবণের দাম বৃদ্ধি ও হিমায়িত করে মাছ বিদেশে রপ্তানি করার কারণে শুঁটকির উৎপাদন কমে গেছে। পাশাপাশি আগের তুলনায় পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ার কারণে শুটকির দামও এখন বাড়তির দিকে। নগরের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন শুঁটকির দোকানে ঘুরে দেখা গেছে, কেজিতে ৩শ’ টাকা বেড়ে রাঙাবালি শুঁটকি ৩ হাজার ২শ টাকায় ও লাক্ষা শুঁটকি ৪ হাজার ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে লইট্টা শুঁটকি ৭৫০, ফেওয়া শুঁটকি ৫৫০, হিছুটিমলা শুঁটকি ৫৫০, ছুরি শুঁটকি ৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে চিংড়ি শুঁটকি ৫৫০ টাকায়, ২০ টাকা বেড়ে বাঁশপাতা সিদল শুঁটকি ৪৩০ ও কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে চেঁপা শুঁটকি (বড়) ৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাক্তাই এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, লবণের দাম আগে ৬শ টাকা ছিল, এখন ৯শ টাকা। তার উপর সাগরে মাছ কমে গেছে, হিমায়িত মাছের রপ্তানি বেড়েছে। তাই আমাদের দেশে শুঁটকির উৎপাদন অনেক কমে গেছে। শুঁটকি আমদানি করতে গিয়েও বাড়তি খরচ দিতে হচ্ছে। আমাদের দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ, শ্রমিকের মজুরি তো আছেই। সবমিলিয়ে দামটা বেড়েছে। তাই ক্রেতার সংখ্যাও কমে গেছে। এদিকে বাজারে প্রতিকেজি গোল বেগুন ৮০, লম্বা বেগুন ৬০, হাইব্রিড শসা ৮০, চিচিঙ্গা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কচুমুখি ৫০, বরবটি ৩০ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০, লাউ আকারভেদে ৪০ থেকে ৬০, চালকুমড়া ৪০, ঢেঁড়স ২০ থেকে ৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি রুই আকারভেদে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি রূপচাঁদা ৬৫০ টাকা, লাল কোরাল ৪৫০ টাকা, বড় চিংড়ি ৯০০ টাকা, কাতাল ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০ টাকা, লইট্যা ১৮০ টাকা, মলা মাছ ৩৬০, শিং মাছ ৪৫০ টাকা, বড় সাইজের ইলিশ এক হাজার ২০০ টাকা, মাঝারি আকারের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও ছোট সাইজের ইলিশ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি ২৮০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ডিম ডজন প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৪০ টাকা, রসুন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে একটি সুগন্ধি সাবানের (১৫০ গ্রাম) সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ঠিক এক বছর আগে ছিল ৫৮ টাকা। একই সাবানের এখনকার দর ৭৫ টাকা। এক বছরে সাবানটির দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশ। শুধু সুগন্ধি সাবান নয়; দাম বেড়েছে কাপড় কাচার সাবান, গুঁড়া সাবান বা ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, টিস্যুসহ নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যের। এ মূল্যবৃদ্ধি সংসারের ব্যয় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। গুঁড়া সাবান এক কেজির প্যাকেট ১৪০ টাকা, ১০০ গ্রাম টিউবের টুথপেস্টের দাম ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা, ১৮০ মিলিলিটারের শ্যাম্পু ২৭০ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ছয় মাসে কয়েক দফায় দাম বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির কারণ বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম, জাহাজভাড়া, মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য ও দেশে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি। # ০২.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #