চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম সংবাদ

চট্টগ্রামে ধাওয়া-ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির ৬৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

নগরীর বাকলিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং স্থানীয় এক কাউন্সিলরের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির ৬৮ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) সেচ্ছাসেবক লীগের নগর কমিটির সদস্য শোয়েব চৌধুরী বাদি হয়ে বাকলিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। বাকলিয়া থানার ওসি আব্দুর রহিম বলেন, “বাকলিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নবাব খানকে প্রধান আসামি করে ৬৮ জনের বিরুদ্ধে মারামারি ও কাউন্সিলরের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত ‘জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে’ সোমবার বিকেলে বাকলিয়া ওয়ার্ডের মিয়াখান নগর বাদামতল এলাকায় বিএনপির সমাবেশ চলছিল। সেসময় বাকলিয়ার ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর নূরুল আলম ওরফে মিয়ার নেতৃত্বে একটি মিছিল ওই এলাকায় পৌঁছালে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ঢিল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের চারজন এবং বিএনপির ১২জন কর্মী আহত হন বলে উভয়পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। ওইসময় কাউন্সিলর নূরুল বলেন, শোকের মাস উপলক্ষে আমাদের মিছিল ছিল। সেই মিছিল নিয়ে বাদামতল এলাকায় পৌঁছালে বিএনপির সভা থেকে হাজার খানেক লোক পুলিশের সামনেই অতর্কিতে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের চারজন আহত হয়েছে। পরে তারা চর চাক্তাই স্কুলের পাশে আমার বাড়িতে এসে হামলা ও ভাঙচুর করে। এর সিসিটিভি ফুটেজ আছে। বিএনপি ও যুবদলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দক্ষিণ বাকলিয়া বিএনপির সভাপতি নবাব খান বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল। তখন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখছেন। আমাদের প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মী সমাবেশে ছিল। সেখানে পুলিশ সদস্যরাও ছিলেন। এসময় হঠাৎ কাউন্সিলর ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে মিছিল করে সেখানে আসে। তারা হামলা করে। এতে আমাদের ১২ জন কর্মী আহত হয়। পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছিল। তারা পুলিশের কথাও মানে না। পরে এক পর্যায়ে সমাবেশে থাকা জনতা উত্তেজিত হয় তাদের ধাওয়া দেয়। সমাবেশ স্থল থেকে কাউন্সিলরের বাড়ি এক কিলোমিটার দূরে। সেখানে আমরা কেউ যাইনি।
# ০১ .০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #

অনিয়ম পেলে কোনো হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ছাড় দেওয়া হবে না

কোনো হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এখন থেকে হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর সাইনবোর্ডে লিখতে হবে। এমনকি সাইনবোর্ডে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে কিউআর কোড বসাতে হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন সাইনবোর্ড লাগানোর নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিছু প্রতিষ্ঠানকে আমরা সপ্তাহ, ১০ দিনের সময় দিয়েছি। যাতে সংশোধন হতে পারে। যদি তারা সংশোধন না হয় তাহলে আমার স্থায়ী ব্যবস্থা নেব। সিভিল সার্জন চাইলেই কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারে। তবে আমরা চাই না কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর হতে। যেহেতু এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেকের রুটি রুজি জড়িত। আবার তার মানে এই নয় যে, তারা অনিয়ম করলেই ছাড় দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। সভায় সিভিল সার্জন চট্টগ্রামের ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, জনসংখ্যার বিচারে চট্টগ্রামে ডায়রিয়া পরিস্থিতি তেমন খারাপ নয়। তারপর যখন একই এলাকা থেকে সব রোগী আসছে, আমরা বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে একটি টিম ঘটনাস্থলও ঘুরে দেখেছেন। এতে ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি পানিবাহিত রোগের জন্য উপযোগী বলে জানিয়েছেন তদন্ত টিম। ম্যালেরিয়ার বিষয়ে চট্টগ্রামে উদ্বেগজনক কিছু না ঘটলেও ডেঙ্গুর বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিটি করপোরেশন মশক নিধনে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে তার ফলাফল নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন রয়েছে। উদ্যোগ যাই হোক ব্যক্তি সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে হবে। কারণ চলতি বছর ডেঙ্গুতে ১৫৪ জন আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৪৭ জনই শিশু।
# ০১ .০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #

ব্যবসায় লোকসানের পর প্রতারণাকে বেছে নেয় আয়ের পথ হিসেবে

পুলিশের ওসি-এসপি, কখনো র‌্যাবের কর্মকর্তা পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত বেলাল হোসেন (৩১)। নিজেকে কখনও দাবি করতেন পুলিশের এসআই-ওসি, কখনও এসপি ও র‌্যাবের কর্মকর্তা, আবার কখনও কখনও বিজিবি অফিসার সেজে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। পোলট্রি ব্যবসায় লোকসানের পর পেশা বদলে বেলাল প্রতারণাকেই বেছে নেয় আয়ের পথ হিসেবে। পুলিশ-র‌্যাব পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদানসহ মামলা মোকাদ্দমা দায়েরের হুমকি দিয়ে অর্থ হাতিযেছে সে। এই প্রতারকের খপ্পড়ে পড়া বেশ কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। পাশপাশি মো. ওসমান (৫৩) নামে বেলালের এক সহযোগিকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ধূর্ত বেলাল নিজে সামনে না এসে সহযোগীর মাধ্যমে টাকা আদায় করত। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-৭’র চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৭’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ। এর আগে বুধবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট এলাকা থেকে বেলালকে সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতার মো. বেলাল হোসেন (৩১) ফটিকছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। গ্রেফতার অপরজন হল মো. ওসমান (৫৩)। বেলাল ফটিকছড়ি থানার বক্তপুর এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে ও সহযোগী ওসমান ভুজপুর থানার পশ্চিম সুয়াবিল এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান, বেলাল দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। পোলট্রি ফার্মের ব্যবসায় লোকসানের পর আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রতারণাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়। নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, এমনকি হাটহাজারীর সংসদ সদস্য পরিচয় দিয়েও সে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে। এক পর্যায়ে প্রতারণাই তার নেশায় পরিণত হয়। তিনি বলেন, বছর খানেক আগে এক মুদি দোকানিকে ফোন করে সয়াবিন তেলের ‘ডিলার’ পরিচয় দিয়ে দাম বাড়ার তথ্য জানিয়ে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এর কিছুদিন পর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বেলাল নিজেকে ভুজপুর থানার এসআই পরিচয় দিয়ে স্থানীয় এক দফাদারের কাছ থেকে নয় জন ইউপি সদস্য প্রার্থীর ফোন নম্বর সংগ্রহ করে। পরবর্তী সময়ে তাদের ফোন করে সাতজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করে।’ তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশ-র‌্যাব পরিচয়ে খোরশেদ আলমের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। বেলাল অনিবন্ধিত বিভিন্ন অনলাইন চ্যানেল থেকে বিভিন্ন ক্রাইম ও মামলার খবর, জমিজমার বিবাদের সংবাদ নিয়ে কখনও থানার ওসি, কখনও সার্কেল এএসপি বা এসপি কখনও আবার কখনও র‌্যাবের অফিসার ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে কথা বলতো ও টাকা দাবি করত। টাকা না দিলে কিংবা দিতে দেরি করলে হুমকি-ধামকিও দিত। বেলালকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এম এ ইউসুফ আরও বলেন, ‘মাসখানেক আগে রাউজান উপজেলায় পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়। বেলাল শিশুটির বাবাকে ফোন করে ছেলের ময়নাতদন্ত না করাতে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। পরবর্তী সময়ে সেই টাকা আদায় করে। সম্প্রতি হাটাহাজারী উপজেলায় ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে কিছু দুষ্কৃতিকারী এক তরুণীর বাবাকে মারধর করে। পরবর্তী সময়ে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ওই মামলার বাদী তরুণীর বাবাকে ফোনে হাটহাজারী থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করে। পরপর দুইদিন ওসি এবং সার্কেল এএসপি পরিচয় দিয়ে ৫৩ হাজারের বেশি টাকা আদায় করে। এরপর নিজেকে র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ওই তরুণীর বাবার কাছ থেকে ফের টাকা দাবি করায় সেটি তার সন্দেহ হয় এবং র‌্যাবকে অবহিত করে। র‌্যাব বেলালের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করে। # ০১.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #