চলমান সংবাদ

ভোজ্যতেলের বাজারে প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করার দাবি

পাইকারিতে কমলেও খুচরায় প্রভাব নেই আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমে যাওয়ার প্রভাবে দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে কমেছে ভোজ্যতেলের দাম। পাইকারি বাজারে গত ১৫ দিনে প্রতি লিটারে কমেছে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরা বাজারে নেই এর প্রভাব। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে। ১৫ দিনের ব্যবধানে সয়াবিন তেল প্রতি মণে ৫শ’ টাকা কমেছে এবং পামতেলের দাম কমেছে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে বেশি কমেছে এস আলম ব্র্যান্ডের তেলের দাম। ১৫ দিন আগে সিটি গ্রুপের প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৫শ টাকায়। একইভাবে এস আলম গ্রুপের সয়াবিন তেল ১৫ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৮শ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৪শ টাকায়। এস আলম গ্রুপের পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ সাড়ে ৪ হাজার টাকায়, যা ১৫ দিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ৬ হাজার টাকায়। অন্যদিকে সিটি গ্রুপের পাম অয়েল বিক্রি হয় প্রতি মণ ৫ হাজার টাকায়, যা ১৫ দিন আগেও ছিল ৬ হাজার ২শ টাকা। পাঁচদিন আগে খুচরা পর্যায়ে দাম কমিয়ে ভোজ্যতেলের নতুন দরও নির্ধারণ করে সরকার। গত ১৭ জুলাই বোতলজাত সয়াবিন তেলে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। অথচ নগরের বিভিন্ন খুচরা দোকানগুলোতে ১৯৬ থেকে ২শ’ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। নগরের হালিশহর, রিয়াজুদ্দিন বাজার ও কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারগুলোতে আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত করা প্রতিলিটার তেল ১৯৬ থেকে ১৯৮ টাকা। কিছু কিছু দোকানে ২শ’ টাকা দাম চাইছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে পাঁচলিটার ভোজ্যতেল ৯৭০ থেকে ৯৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, খুচরা বাজারে এখন যে তেলগুলো বিক্রি হচ্ছে তা আগের কেনা। সরকার নির্ধারিত নতুন দরের তেল এখনও বাজারে ছাড়া হয়নি। নতুন দরে তেল পেতে আরো তিন থেকে চারদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে। পাইকারি বাজারেও দাম কমছে ভোজ্যতেলের। বিশেষ করে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেল ও পাম অয়েলের দাম কমেছে। কিন্তু খুচরা বাজারে কমছে না।’ তিনি বলেন, ‘প্যাকেটের গায়ে দাম বেশি লেখা থাকলে তো বাজারে দাম কমবে না। এজন্য সরকারের ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনই দায়ী। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে সরকারি সংস্থাগুলো তেলের দাম সমন্বয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে। এখন যখন কমেছে, তখন তারা খুচরা বাজারে দাম সমন্বয় বা কমানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এখন প্রশাসনের উচিত দ্রুত খুচরা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় করা।’ কাজীর দেউড়ি বাজারে নাজমা স্টোরের মালিক মো. সেলিম বলেন, সরকার তেলের দাম কমিয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে পুরনো দরে কেনা তেল থাকায় এবং কোম্পানির কাছ থেকে নতুন চালান না আসায় কম দামে তেল বিক্রি করতে পারছি না। মিলগেট থেকে আশা করছি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুন দরের তেল বাজারে আসবে। তখন ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।

# ২২.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #