চলমান সংবাদ

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রামে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে দেশের উত্তর অঞ্চলের জেলাগুলো থেকে চট্টগ্রামে আসতে শুরু করেছে গরুভর্তি ট্রাক। চট্টগ্রামের সাগরিকা, বিবিরহাট, মইজ্যারটেক সিডিএ মাঠসহ অন্যান্য বাজারে এর মধ্যেই ব্যবসায়ীরা গরু নিতে দেখা গেছে। বাজার ইজারাদাররা বলছেন, শুক্রবারের মধ্যেই উত্তরবঙ্গ থেকে আনা গরু-মহিষে ভরে যাবে চট্টগ্রামের বাজারগুলো। কয়েকদিনের মধ্যেই ক্রেতা-বিক্রেতার আনোগোনায় জমে উঠবে এই পশুর হাট। এদিকে চট্টগ্রামে এবারও কোরবানীর পশুর সংকট হবে না বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর। বর্তমানে চট্টগ্রামে প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ৩০ হাজার গরু কম থাকলেও উত্তরবঙ্গের গরু আসা শুরু করায় সেই সংকটও থাকছে না। চট্টগ্রাম জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবছর মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য ৭ লাখ ৯১ হাজার পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০৩টি। মহিষ ৬৬ হাজার ২৩৭টি, ছাগল ও ভেড়া ১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬২টি। বিভিন্ন ফার্ম ও ব্যক্তি উদ্যোগে এসব পশু লালন-পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় প্রাণি সম্পদ বিভাগের নিবন্ধিত গরুর খামার রয়েছে ৮ হাজার ১৭১টি। এর মধ্যে জেলার মীরসরাই, কর্ণফুলী, পটিয়া, সীতাকুন্ড, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলার খামারগুলোতে কোরবানির জন্য বেশি পশু লালন-পালন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাতে বড় খামারের বাইরে ব্যক্তি উদ্যোগে ৩ থেকে ৪টি খামারে গরু ছাগল লালন-পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছর চট্টগ্রামে উৎপাদন হয়েছিল ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি, আর কোরবানির পশু জবাই হয়েছিল ৭ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৫টি। চট্টগ্রাম জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আসন্ন কোরবানিতে এবার চট্টগ্রামে পশুর চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে আনুমানিক ৮ লাখ ২১ হাজার। এর বিপরীতে বিভিন্ন খামারে ও ব্যক্তি উদ্যোগে কোররানির পশু প্রস্তুত রয়েছে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৫০১টি। ফলে প্রায় ২৯ হাজার ৪৯৯টি পশুর ঘাটতি রয়েছে। পশুর সঙ্কট থাকবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, দেশে মোট কোরবানির উপযুক্ত পশু চাহিদার চেয়ে নয় লাখ বেশি আছে। সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। স্থানীয় পশুর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু বেপারীরা চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন। এতে স্থানীয় চাহিদা পূরণ হবে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছরেই কোরবানির বাজারে মাঝারি ও ছোট আকৃতির গরুর চাহিদা বেশি থাকে। বাজারের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে এবার সেই সাইজের গরু বেশি মোটাতাজা করা হয়েছে। তবে গত দুই বছর করোনার কারণে কোরবানি কম হলেও এবার এর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে স্থানীয় খামারিরা মনে করছেন। গোখাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তাই কোরবানির পশুর প্রকৃত দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন খামারিরা। চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার এক গরুর খামারি জানান, এবার কোরবানির জন্য তিনি ৪১টি গরু প্রস্তুত করেছেন। গত বছরের অভিজ্ঞতায় বড় গরুর চাহিদা কম থাকায় এবার ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু বেশি সংগ্রহে রেখেছেন। একটা সময় ছিল- বড় গুরুর জন্য চট্টগ্রামের মানুষ উত্তর অঞ্চলের গরু খামারী কিংবা ঢাকার খামারিদের দিকে তাকিয়ে থাকতো। সেই দিনের অবসানও হয়েছে। চট্টগ্রামের খামারগুলোতে বড় গরু লালন-পালন হচ্ছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়ামে ৩২টি খামারের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গরু প্রদর্শনী। এতে নজরকাড়া অনেক গরু নিয়ে হাজির হয়েছিলেন খামারিরা। # ২৯.০৬.২০২২ চট্টগ্রাম #