চলমান সংবাদ

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে স্কপের স্মারকলিপি পেশ

– কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের – স্কপ

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক বরাবর চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ স্মারকলিপি প্রদানকালে

 

সম্প্রতি ২ জন জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিক নিহত ও সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে শ্রমিক হতাহতের জন্য দায়ী মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের শাস্তি এবং হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসার দাবিতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক বরাবর চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আজ সকাল ১১টায় স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

স্মারকলিপি প্রদানকালে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন স্কপ-চট্টগ্রামের যুগ্ম সমন্বয়ক জাতীয় শ্রমিক লীগের সহসভাপতি মুঃ শফর আলী, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি শ্রমিক নেতা এ এম নাজিম উদ্দিন, টিইউসি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু, বিএলএফ এর নুরুল আবছার ভুঁইয়া, আবু আহমেদ, বিএফটিউসি চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুগ্ম সম্পাদক রিজওয়ানুর রহমান খান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা মহিন উদ্দিন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতা মোঃ মামুন প্রমুখ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ

স্মারকলিপি প্রদানকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত ৪ জুন দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ক্যামিকেল ভর্তি কন্টেইনার বিস্ফোরিত হয়ে ১০ জন দমকল বাহিনীর কর্মীসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক নিহত হয়েছে্ন এবং ৪ শতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। এখনো বেশ কিছু শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। আবার বিস্ফোরণের পরপর বিগত ৮ জুন সাগরিকা শিপ ব্রেকিং এ ১ জন শ্রমিক নিহত ১ জন আহত হন আবার গত ১১ জুন শনিবার এইচ এম শিপ ব্রেকিং এ ১ জন শ্রমিক আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এরকম হৃদয় বিদারক ঘটনা বার বার ঘটছে –যা কোনভাবেই কাম্য নহে।

পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্ট হতে জানা যায়, ডিপোর কন্টেইনার সমূহে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকার কারণে বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটেছে। বুয়েট সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের মতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড উচ্চ মাত্রার বিস্ফোরক হলেও তা রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে মালিক এবং সরকারী দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথ জ্ঞানের অভাব, কর্তব্যে অবহেলা এবং দুর্নীতিও কম দায়ী নয়। তারা বলেন, শ্রম আইন মোতাবেক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরেরও রয়েছে।  সুতরাং সারা দেশে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে অধিদপ্তরের ঘাটতি সমূহ এবং দায়ী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করা খুবই জরুরী।

নেতৃবৃন্দ আরো বলে, এ ভয়াবহ বিস্ফোরণের মাধ্যমে আমাদের দেশের কন্টেইনার ডিপো সমূহের নিরাপত্তা ঘাটতি প্রকটভাবে উম্মোচিত হয়েছে। আমরা মনে করি, কন্টেইনার ডিপোগুলোর নিরাপত্তা ঘাটতি নিরূপণের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। উক্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কন্টেইনার ডিপোগুলোর নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী কন্টেইনার ডিপোগুলো পরিচালনার উদ্যোগ নেয়ার  লক্ষে দ্রুত উদ্যোগনিতে হবে। একই সাথে তারা ডিপো মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারী দপ্তরের দায়ী সকল কর্মকর্তাদের শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।

এছাড়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুসরন করে দুইজন নিহত জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিকসহ কন্টেইনার বিস্ফোরণে নিহত সকল শ্রমিকের পরিবারকে আজীবন আয়ের সমপরিমান ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। আহতদের চিকিৎসাকালীন সবেতন ছুটি সহ সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আহতদের মধ্যে কেউ যদি স্থায়ী পঙ্গু হয়ে যায় তাদের ক্ষেত্রে আজীবন আয় এবং ভোগান্তি হিসাব করে তার সমপরিমান টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কেউ আংশিক পঙ্গু হলে  তাদের পুনর্বাসনসহ অঙ্গহানি বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।