জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর জোড়াতালির সংস্কার ১৬ মার্চ নতুন সেতু নির্মাণে সমীক্ষা যাচাই প্রতিবেদন মে মাসে
প্রায় শত বছরের পুরানো জরাজীর্ণ চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু বারবার সংস্কার-মেরামত করে জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহানো এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির মুখে কালুরঘাটের নতুন সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণের দাবিকে মূলার মত ঝুলিয়ে নির্বাচনী বৈতরণীতে পাড় হয় ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। অবশেষে স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সদিচ্ছায় কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু নকশা জটিলতার কারণে নতুন সেতু নির্মাণের কার্যক্রম পিছিয়ে যায়। নতুন সেতুর উচ্চতা জটিলতায় পরিবর্তিত ডিজাইনের ফলে অর্থায়নসহ সব কিছু নতুন করে করতে হচ্ছে। ফলে আগের সব বাদ দিয়ে নতুন করে সমীক্ষা যাচাইয়ের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় দাতা সংস্থা কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংককে। তারা আগামী মে মাসে নতুন সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে সমীক্ষা রিপোর্ট ও ডিটেইলস ডিজাইন জমা দেবে। কিন্তু বর্তমানে যান ও রেল চলাচলকারী কালুরঘাট সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুতে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের। সেতুর উভয় পাশের ডেক ও লোহার বেড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেতু পারাপার এখন অনিরাপদ। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন সেতু দিয়ে যাতায়াত করছে। সেতুটি চলাচল উপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সেতুর উপর ট্রেন ও যানবাহন চলাচলের ঝুঁকি এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে সেতুর রোড সার্ফেস কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। আগামী ১৬ মার্চ সেতুর উপরে যানবাহন চলাচলের রোড কার্পেটিংয়ের কাজ করতে যাচ্ছে রেলওয়ে। ১৬ মার্চ রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা রোড সার্ফেস কার্পেটিং কাজ করা হবে। এজন্য রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা সেতুর উপর সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু বিভাগ। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) আবুল কালাম বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুতে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো ভরাট করে যান চলাচল উপযোগী করার জন্য আগামী ১৬ মার্চ একদিনের জন্য রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ থাকবে।’ প্রসঙ্গত ৯২ বছর আগে ১৯৩০ সালে ট্রেন চলাচলের জন্য সেতুটি চালু করা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে সবরকম যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরি করা হয় সেতুটি। এই সেতুটিতে রয়েছে ছয়টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টিলের পিলার ও ১৯টি স্প্যান। একমুখী সেতুটিতে ট্রেনের পাশাপাশি গণপরিবহন ও পণ্যপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। চট্টগ্রাম মহানগরী সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি এলাকার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই কালুরঘাট সেতুর উপর গত তিন দশকে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করছে। সেতুর একপাশে গাড়ি উঠলে অন্যপাশ বন্ধ থাকে। ফলে নিত্য দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তি চলছে। যানবাহনের চাপে দুলতে থাকে সেতুটি। ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। যে কোন সময় কালুরঘাট সেতুতে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। কালুরঘাট সেতুটি ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। এরপরও জোড়াতালি দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। সেতু দিয়ে ১০ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
# ০৯.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #