মিতু হত্যা: বাবুলের শ্বশুরের মামলায় পিবিআই’র ফাইনাল রিপোর্ট গ্রহণ

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার সকল তথ্য ও উপাত্ত প্রথম মামলায় একীভূত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি মামলার বাদীর দায়ের করা নারাজি পিটিশন খারিজ করে দেন আদালত। রোববার (৬ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিম এ আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলার ২৭৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আদালতে গত ২৫ জানুয়ারি জমা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে থাকা তথ্য উপাত্ত বাবুল আক্তারের মামলায় একীভূত করতে আবেদন জানানো হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি পিবিআই’র চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি পিটিশনটি দাখিল করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। রোববার শুনানিতে আদালতে মামলার ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ গ্রহণ করেছেন। সেই সঙ্গে এই মামলায় থাকা আসামি, সাক্ষীর জবানবন্দিসহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র বাবুল আক্তারের করা মামলাটিতে যুক্ত করতে বলা হয়েছে। র সময় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও কুপিয়ে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি’র কাছে থাকলেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তদন্তভার পড়ে পিবিআই’র ওপর। গতবছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ১২ মে ওই মামলার তার বিরুদ্ধে ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ওইদিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পিবিআই’র দেয়া চার্জশিটের বিষয়ে বাবুল গত বছর আদালতে আপত্তি জানিয়ে অন্য কোন সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা দিয়ে মিতু হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্ত চান। শুনানি শেষে আদালত বাবুলের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে টেকনিক্যাল ত্রুটি আছে উল্লেখ করে অধিকতর তদন্ত করে পুনরায় প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেন। এতে সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল ও শ্বশুরের করা দুটি মামলাই বর্তমানে তদন্ত করছে পিবিআই। গতবছরের ২৩ অক্টোবর আসামি এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, বিশ্বস্ত সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার মুছাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করায় পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার। তার ঘনিষ্ঠ সাইফুল হক, গাজী আল মামুন, মোকলেসুর রহমান ইরাদ এবং আসামি মুসার স্ত্রী পান্না আক্তারও আদালতে জবানবন্দি দেন।

# ০৬.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #