চলমান সংবাদ

বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক বুখারেস্টের একটি হোটেলে

মঙ্গলবার দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা, আসছে না হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক মলদোভা হয়ে রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন। তারা এখন রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে ফেরার আগ পর্যন্ত ২৮ নাবিক এই হোটেলেই অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ সময় রোববার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বুখারেস্টের ওই হোটেলে পৌঁছান তারা। এ সময় তাদের অভ্যর্থনা জানান রোমানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী। আগামী মঙ্গলবার (৮ মার্চ) তারা দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে একসঙ্গে সবার ফ্লাইটের টিকিট পাওয়া না গেলে গ্রুপ গ্রুপ হয়ে টিকিট পাওয়া সাপেক্ষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে হামলায় নিহত জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ এখন আনা হচ্ছে না। তার মরদেহ ইউক্রেনের অলভিয়া এলাকার বাংকারে ফ্রিজারে রাখা হয়েছে। সেখানকার দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, ২৮ নাবিক-ক্রু বহনকারী একটি গাড়ি স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টা) হোটেলে এসে পৌঁছায়। দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা কোন হোটেলে অবস্থান করছেন, তা জানানো হচ্ছে না। দীর্ঘ জার্নি করে আসা জাহাজের সকল ক্রু সুস্থ আছেন। এর আগে বাংলাদেশ সময় রোববার বেলা ১২ টায় মলদোভা পৌঁছান তারা। মলদোভা থেকে রোমানিয়া দূতাবাসের ভাড়া করা একটি গাড়িতে বুখারেস্টের ওই হোটেলে যান। বাংলাদেশে ফেরার আগ পর্যন্ত ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক এই হোটেলেই অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। কবে নাগাদ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে তাদের এ বিষয়ে জানতে চাইলে সূত্রটি জানান, একসঙ্গে সবার ফ্লাইটের টিকিট পাওয়া সম্ভব হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রুপ গ্রুপ হয়ে যেতে হবে। তবে টিকিট পাওয়া সাপেক্ষে দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়। হামলায় নিহত জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ এখন আনা হচ্ছে না। তার মরদেহ ইউক্রেনের অলভিয়া এলাকার বাংকারে ফ্রিজারে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) সভাপতি মো. আনাম চৌধুরী বলেন, বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকরা ভোরে ইউক্রেন সীমান্ত পার করে মলদোভায় প্রবেশ করেন। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাদের বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি রোমানিয়ার কাছে হস্তান্তর করে। মলদোভা সীমান্ত থেকে একই গাড়িতে তাদের বুখারেস্টে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে তারা বুখারেস্টের একটি হোটেলে পৌঁছান। বাংলাদেশে ফেরার আগ পর্যন্ত তারা সেখানেই থাকবেন। এখন আর তাদের (নাবিক) দেশে ফিরিয়ে আনতে কোনো সমস্যা হবে না। বিএমএমওএ সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. এনাম চৌধুরী জানান, বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের শিকার হয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর পরই নাবিকদের জাহাজ থেকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। তবে যাত্রায় নিহত হাদিসুর রহমানের মরদেহ আপাতত আনা সম্ভব হচ্ছে না। তার মরদেহ বাংকারে ফ্রিজারে রাখা হয়েছে। ২৮ নাবিক-ক্রু নিরাপদে ফিরে এলে এরপর মরদেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, আমাদের নাবিকরা রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন। তারা এখন রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের একটি হোটেলে অবস্থান করছেন। সবদিক বিবেচনা করে সেখান থেকে তারা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। জাহাজটি ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল, তবে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার পর আর ফিরতে পারেনি। বন্দরে ২৯ নাবিক নিয়ে আটকা পড়েছিল জাহাজটি। এর মধ্যে গত বুধবার সন্ধ্যায় রকেট হামলায় নিহত হন থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান। পরে বৃহস্পতিবার জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ২৮ নাবিক ও ক্রুকে সরিয়ে নেয়া হয় নিরাপদ স্থানে। রাখা হয় ইউক্রেনের অলভিয়া এলাকার একটি বাংকারে। তিনদিন বাংকারে রাখার পর শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীদের একটি সংস্থার সাহায্যে বাসে করে তারা ইউক্রেনের অলভিয়া পোর্ট থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে মলদোভার পথে যাত্রা করেন। তবে ইউক্রেন থেকে মলদোভা যাত্রার পথে একটি ব্রিজ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বিকল্প পথে তাদের মলদোভায় নিয়ে যাওয়া হয়। # ০৬.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #