চলমান সংবাদ

রাশিয়া কি আজ বুধবারই সামরিক আগ্রাসন চালাবে?

রুশ সৈন্য
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ট্রেনের ওয়াগনে সাঁজোয়া যান তোলা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যেসব গোয়েন্দা তথ্য আছে সে অনুসারে আজ বুধবারই ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক আগ্রাসন চালাতে পারে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও এজন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। ভলোদিমির জেলেনস্কি আজকের দিনটিকে আগে থেকেই ঘোষণা করেছিলেন জাতীয় ঐক্যের দিবস বা ইউনিটি ডে হিসেবে। তার নাগরিকদের তিনি ইউক্রেনের পতাকা উড়ানো এবং দেশটির জাতীয় রঙ- নীল ও হলুদ ব্যাজ পরার আহবান জানিয়েছিলেন।

কিন্তু তার একদিন আগে মঙ্গলবার ক্রেমলিন ঘোষণা করেছে যে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে তাদের কিছু সৈন্য রুশ ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে। রুশ প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখানো হয়েছে রেলওয়ের খোলা ওয়াগনে কিছু ট্যাংক এবং সাঁজোয়া গাড়ি তোলা হচ্ছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় সামরিক যানবহর ক্রাইমিয়ার সেতু পার হয়ে চলে যাচ্ছে। রাশিয়ার ঘোষণায় এখনও আশ্বস্ত হতে পারেনি ইউক্রেন, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র। ক্রেমলিনের এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তারা এখনও সন্দিহান। সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে রাশিয়ার বক্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে সীমান্ত এলাকায় রাশিয়া তাদের সৈন্য সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করেছে।

ইউক্রেনের সৈন্যরা ১৬ই ফেব্রুয়ারি সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়।
ইউক্রেনের সৈন্যরা ১৬ই ফেব্রুয়ারি সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়।

এতদিন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র ধারণা করছিল যে ইউক্রেনের সীমান্তে এক লাখের মতো রুশ সৈন্য জড়ো করা হয়েছে। ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালানোই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাইডেন এখন বলছেন, সীমান্তে দেড় লাখ রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া তার এই বক্তব্য টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে যাতে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার “এখনও জোর সম্ভাবনা রয়েছে,” এবং যদি সেরকম কিছু হয় তাহলে তার “মানবিক মূল্য হবে অনেক বেশি।”

“আমাদের বিশ্লেষকরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে তাদের অবস্থান এখনও হুমকি হিসেবেই রয়ে গেছে,” বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, এরকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে তার দেশ পুরোপুরি প্রস্তুত।

ইউনিটি ডে সফরে অংশ নিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ইউনিটি ডে সফরে অংশ নিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের আহ্বানের কয়েক ঘণ্টা পরেই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই বক্তব্য এলো।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনার কথা সবসময়ই প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন, এবং বলেছেন যে রাশিয়া ইউরোপে আরো একটি যুদ্ধ চায় না।

গত নভেম্বর মাসে ইউক্রেনের সীমান্তে রুশ সৈন্য মোতায়েন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

আজ বুধবার রাশিয়া ঘোষণা করেছে মস্কোর দখল করে নেওয়া ক্রাইমিয়াতে তাদের সামরিক মহড়া শেষ হয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কৌশলগত অনুশীলনে অংশগ্রহণ শেষ করে সৈন্যরা তাদের স্থায়ী ঘাঁটিতে চলে যাচ্ছে।”

তবে কতো সৈন্য ফেরত যাচ্ছে সেবিষয়ে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

# সূত্রঃ বিবিস বাংলা #