চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম ইয়ুথ ক্লাইমেট হাবের যাত্রা শুরু উপলক্ষে বেসরকারি সংস্থা সংশপ্তকের সহযোগিতায় ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

বর্তমান জলবায়ু এ ধারায় অগ্রসর হতে থাকলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রের পানির উচ্চতা ২ মিটার বৃদ্ধি পাবে।  ২১৫০ সালে সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা ৫ মিটার পর্যন্ত। বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে চট্টগ্রাম শহরের অন্তত ৬৯ শতাংশ এলাকা সমুদ্রপৃষ্টের ৪.৫ মিটার নিচে তলিয়ে যাবে।জলবায়ু সংকট এখন শুধু পরিবেশগত সমস্যা নয়, এটি এখন বাঁচা-মরার ইস্যু এবং অর্থনৈতিক সংকটও। মানুষের কারণেই জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। এজন্য সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে সংকট নিরসনের উদ্যোগ নিতে হবে বলে সংশপ্তকের বৈঠকে বক্তাগণ অভিমত ব্যক্ত করেন।

আয়োজক চট্টগ্রাম ইয়ুথ ক্লাইমেট হাবের সংগঠনটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী সনাতন চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। ধারনা পত্র পাঠ করেন সংশপ্তক সংস্থার প্রধান নির্বাহী লিটন চৌধুরী, আলোচক হিসেবে ছিলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সামচ্ছুদ্দিন ইলিয়াস, ফ্রাইডে ফর ফিউচারের বাংলাদেশের সন্বয়ক ও পরিবেশকর্মী সোহানুর রহমান, উপকূল সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জোবায়ের ফারুক, যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা সাঈদুল আরেফিন, চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কান্তি নাথ প্রমুখ।

বৈঠকের প্রধান অতিথি ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “জলবায়ু পরির্বতনের কারণে বাস্তুচ্যুতদের নিয়ে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। শহরের বস্তি এলাকায় বসবাসরত দলিত সম্প্রদায়ের মানুষরা মূলত নদী ভাঙনের ফলে আসেন। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদেরও উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় আনতে হবে।”

সাংবাদিক সামচ্ছুদ্দিন ইলিয়াস বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রতি বছর ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুহারা হয়ে চট্টগ্রামে আসছেন। কিন্তু তাদের জন্য এ নগরীর কোনো পরিকল্পনা নেই। তাদের মৌলিক অধিকারের বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ”

চট্টগ্রাম শহরও জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন শহরের প্রায় ১৮ শতাংশ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। কিন্তু নগরীতে জলবায়ু বাস্তুহারা জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কোনো টেকসই পরিকল্পনা নেই।”

চট্টগ্রামের ইয়ুথ ক্লাইমেট হাব গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশের মানুষ এখনো জলবায়ু সুবিচার নিয়ে সচেতন নন। যারা কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী, তাদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে তরুণ সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে।”

পরিবেশকর্মী সোহানুর রহমান বলেন, “উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কারণে আজকের জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু সংকট এখন বৈশ্বিক সমস্যা। মূলত কলোনিয়ালিজম, ক্যাপিটালিজম ও ডমিনেশনের কারণে এই সংকট। ক্লাইমেট জাস্টিস নিয়ে এখনো দেশের মানুষ সচেতন নন। এ বিষয়ে দেশ থেকে আওয়াজ তুলতে হবে। এ আওয়াজ আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে যেতে হবে।”

গোলটেবিল বৈঠকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, উপকূল এলাকার তরুণ, পাহাড়ের আদিবাসী এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছেন।

# ১৫/০২/২০২২, প্রেস বিজ্ঞপ্তি #