মতামত

এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার্থীদের ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন

এসএসসি ও এইএসসি সমমানের পরীক্ষা প্রসঙ্গে পরীক্ষা শেষ হওয়ার দেড় মাস পর গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ‘২২ সারাদেশে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ বিরতির পর গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তবে সব বিষয়ে পরীক্ষা হয়নি। গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ পরীক্ষা। এর কিছুদিন আগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও অল্প কয়েকটি পরীক্ষা আর অতীতের বোর্ড পরীক্ষা যেমন জেএসসি, এসএসসি এর সমন্বয়ে এই ফলাফল ঘোষিত হয়। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীতে অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে সীমিত মূল্যায়ন ও পূর্ববর্তী শ্রেণীর ফলাফলের ভিত্তিতে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল নির্ধারিত হয়। স্কুল বন্ধ থাকায় ক্লাস পরীক্ষা আর মূল্যায়নের যে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেটি নিয়েও নানা রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবার।অনেক ছাত্ররা আশাতীত ভাল করেছে, আবার অনেক যোগ্য ছাত্ররা খুব হতাশও হয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরেই সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে সারা বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাস ছাড়িয়ে পড়ার পর সেবছর ৮ মার্চ থেকে বাংলাদেশেও এ রোগের বিস্তৃতি শুরু হয়। দেশে লকডাউন, সরকারি ছুটি এবং নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থার পাশাপাশি ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। কলেজ ও বিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও সব স্তরের ছাত্রছাত্রী এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেনি। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলোর অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় ডিজিটাল সুবিধার অভাবে অনলাইন সুবিধা গ্রহণ করতে পারছে না। করোনাভাইরাস মহামারিকালে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে এক বেসরকারি গবেষণায় উঠে এসেছে যে দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণে অংশই নিতে পারেনি। এমতাবস্হায় ২০২২ এ যারা এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা দিবে তারা মুলত কোন ক্লাসই পায়নি। নবম শ্রেণিতে উঠেই এরা করোনার ফাঁদে পড়েছে। ফলে কিছু অনলাইন ক্লাস ছাড়া তারা কোন ক্লাস পায়নি।

এমনিতেই কোমলমতি ছেলেমেয়েরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার উপর চলছে নান গোলক ধাঁধা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একবার বলা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হবে, আবার বলা হচ্ছে পুরো সিলেবাসেই পরীক্ষা হবে। একবার বলা হচ্ছে, সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে আবার বলা হচ্ছে কিছু বিষয় বাদ দিয়ে পরীক্ষা হবে। ফলে ছাত্ররা  চরম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থায় এধরনের সিদ্ধান্তহীনতা তাদেরকে আরো গভির হতাশায় নিমজ্জিত করতে পারে।

এই বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে খুব দ্রুত পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত বিষয়, সিলেবাস এবং পরীক্ষার তারিখ নির্ধারন করে   বিস্তারিত ছাত্র-ছাত্রীদের জানিয়ে দেয়া উচিৎ। এ ব্যাপারে কোন ধরনের আমলাতান্ত্রিকতা বা কাল ক্ষেপন গ্রহণযোগ্য নয়।  আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে যথার্থ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন।

। ——- সম্পাদক প্যানেল