বিজ্ঞান প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ভাবনা (২৮)

-বিজন সাহা

বিগত প্রায় দশ পর্বে আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গন নিয়ে কথা বলেছি। বিশ্ব রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী, দুই পরাশক্তির একটি, পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী একটা দেশ বিনা যুদ্ধে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে, সেটা ছিল অকল্পনীয়। এ নিয়ে হাজার হাজার বিশেষজ্ঞ হাজারটা মতামত দিয়েছে, আরও অনেক দেবে। তবে একটা কথা ঠিক – এই পতনের কোন একক কারণ ছিল না। আর যেহেতু একটা গুলি ছাড়াই এটা ঘটেছে, তাই মূল কারণ ছিল আভ্যন্তরীণ। এটা ঠিক পশ্চিমা বিশ্ব এই পতনকে ত্বরান্বিত করেছে, কিন্তু সেটা ডিসিসিভ ছিল না। মূল কারণগুলো নিয়ে অনেক লেখা হয়েছে। আমি একেবারে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে সেই কারণগুলো নিয়ে লিখেছি যেটা আকাদেমিক আলোচনায় তেমন আসে না। এই কারণগুলোর সারসংক্ষেপ এভাবে প্রকাশ করা যায়  –

১) দোকানে ভোগ্য পণ্যের অভাব যা মানুষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। অসন্তোষ থেকে জন্ম নেয় নিরাপত্তাহীনতা। এটা মনে হয় হয়েছিল পরিকল্পিত অর্থনীতির কারণে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ভারি শিল্পের ক্ষেত্রে কার্যকরী হলেও লঘু শিল্পের ক্ষেত্রে সেটা অকেজো। কেননা ভোগ্য পণ্যের ক্ষেত্রে মানুষের চাহিদা দ্রুত পরিবর্তিত হয়। সেখানে ফ্যাশান বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া অর্থনীতি পরিকল্পনা বা প্ল্যান অনুযায়ী করা হলেও তার ব্যবস্থাপনা বা ম্যানেজমেন্ট ছিল যার পর নাই খারাপ।

২) যেহেতু ব্যক্তি স্বার্থ প্রায়ই উপেক্ষা করা হত (আসলে পার্টির মাধ্যমে অনেকেই ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার করত, তবে সেটা ভিন্ন কথা) তাই খুব কম লোকের মধ্যেই কাজ করার আগ্রহ দেখা যেত। অধিকাংশ মানুষ কাজ করত অনেকটা দায়সারা গোছের। এটা ঠিক এর মধ্যেও অনেকেই নিজেদের আগ্রহ থেকে কাজ করতেন, অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কার এই সময়েই হয়েছে, তবে যেহেতু ঐ অর্থে ভাল বা বেশি কাজের বিশেষ কোন অর্থনৈতিক  মূল্যায়ন প্রায় ছিলই না তাই সাধারণ মানুষ কাজ করত গা বাঁচিয়ে। আর এটা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

৩) এক দলীয় শাসন বিপ্লবের প্রথম পর্যায়ে দেশ গঠনে সহযোগী হলেও পরবর্তীতে প্রতিযোগিতার অভাবে পার্টিকে স্থবির করে দেয়। জন্ম নেয় দলীয় আমলাতন্ত্র বা নমেনক্লাতুরা। আর এ সব হয় পার্টির ভেতরে গণতন্ত্রের অভাবে। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা বিপ্লবের কোন এক পর্যায়ে কার্যকরী হলেও শান্তির সময়ে তা ক্ষতিকর। আসলে একদল বা একাধিক দল নয়, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে এক ধরণের কমফোর্ট জোন তৈরি হয়। সেটা মানুষকে বা দলকে অলস করে, তার সৃজনশীলতা ধ্বংস করে। তাই অন্তত আভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে একদিন হঠাৎ করেই দুর্যোগ ঘনিয়ে আসে।

৪) ব্যক্তিগত সম্পদ মানুষের মৌলিক অধিকারের একটা। স্থাবর সম্পত্তির উপর সেই অধিকার না থাকায় কী পার্টির বাইরে, কী পার্টির ভেতরে – সবাই এক ধরণের অনিশ্চয়তায় ভুগেছে। কারণ উপার্জিত সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের কোন উপায় ছিল না। এক্ষেত্রে একটা পপুলার মুভির একটা ডায়ালগের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে «উক্রাল, ভিপিল, ভ তুরমু» মানে, চুরি করলে, পান করলে, জেলে গেলে। চুরি করে (আয় করে) যে সেটা জাঁকজমক করে খরচ করবে সে উপায় ছিল না,  তাই একমাত্র উপায় মদ খাওয়া আর মদ খেয়ে ধরা পড়া। তাই সব কিছুর জাতীয়করণ সমাধান নয়, সেটা করতে হবে মাথা খাঁটিয়ে।

৫) প্রপিস্কা সিস্টেম যা পারত পক্ষে এক ধরণের ভূমি দাসত্ব সেটা মানুষকে পারতপক্ষে বন্দী করে রেখেছিল। নিজের ইচ্ছেমত বসবাস করা ও কাজ করার অধিকার না থাকাটা আর যাই করুক মানুষকে মুক্ত করে না। তাই  সর্বহারার শেকল ছাড়া হারানোর কিছু নেই কথাটা তখনই সত্য হবে যখন সে শোষণের  শেকল ছিঁড়ে প্রপিস্কা বা অন্য কোন শেকলে বন্দী না হবে।

৬) সব কিছুতেই যান্ত্রিকতা যেটা নোমেনক্লাতুরা ও আমলাতন্ত্রের মধ্যেই পড়ে। এ নিয়ে বিভিন্ন চুটকি আছে। একটা এ রকমঃ একজন লোক গর্ত খুঁড়ছে, কিছুক্ষণ পরে আরেকজন সেই গর্ত ভরাট করছে। অবাক পথিক প্রশ্ন করে
– কেন তোমরা এটা করছ?
– যার গাছ লাগানোর কথা ছিল সে অসুস্থ। সে জন্যে তো আমরা নিজেদের কাজ না করে বসে থাকতে পারি না।
নিজের জীবনে বাস্তবে এমন অনেক ঘটনা দেখেছি যেটা অনেকটা এই চুটকির মতই।

৭) যদিও প্ল্যান ইকোনমি তবে প্রায়ই মনে হয়েছে প্ল্যানিং-এ ঘাপলা ছিল। আমাদের সোভিয়েত বন্ধুদের প্রায়ই যেতে হত ট্রেন থেকে শস্য খারিজ করতে। অনেক সময় প্রচুর ফসল মাঠেই নষ্ট হত সময় মত ওঠাতে না পারায়। শুধু কতটুকু শস্য লাগবে সেটা ঠিক করলেই চলবে না, সেটা ফলানো, ঘরে তোলা – এসবও প্ল্যানে থাকতে হবে। অনেক সময় মনে হয়েছে সেটা ঠিকঠাক করে করা হয়নি। সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, সেটাকে বাস্তবায়ন করা তারচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কতটুকু বাস্তনায়ন করতে পারব সেটা মাথায় রেখে প্ল্যান করলে সময় ও শক্তির যেমন অপচয় হয় না, না করতে পারার বা ব্যর্থতার গ্লানিও তেমনি মানুষকে হতোদ্যম করে না।

সুতরাং আমরা দেখতে পাই পরিকল্পিত অর্থনীতি, ব্যক্তি স্বার্থ উপেক্ষা, এক দলীয় শাসন, গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা, স্থাবর সম্পত্তির উপর ব্যক্তি মালিকানা না থাকা, প্রপিস্কা সিস্টেম – মানে যা কিছু সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল সবই সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে কমবেশি ভূমিকা রেখেছে। আর সে কারণেই আমাদের ভাবতে হবে সেই পার্টি বা সেই সিস্টেমের কথা যা এ সমস্ত ত্রুটি থেকে মুক্ত থাকবে বা একেবারে মুক্ত না থাকলেও সময়ের সাথে প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেকে বদলাতে পারবে।

তাহলে প্রশ্ন হল এই যে এত এত সমস্যা, সেটা নিয়ে আগে ভাবা হল না কেন বা এত এত বিশেষজ্ঞ সেটা খেয়াল করলেন না কেন? সমস্যা বহুদিনের আর তার সমাধান খোঁজার চেষ্টা অনেক দিন থেকেই হয়েছে। ষাটের দশকেই প্রধানমন্ত্রী আলেক্সেই কোসিগিন কিছু কিছু শিল্প ব্যক্তিমালিকানায় ফিরিয়ে দেবার কথা বলেন। চীনে অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু হওয়ার বছর দশেক আগে তিনি অনুরুপ পরিকল্পনা পেশ করেন। কথায় আছে ক্ষমতা মানুষকে নষ্ট করে আর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা মানুষকে চরম ভাবে নষ্ট করে। পার্টি যখন নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী জনগণের স্বার্থ সে অনেক সময় দেখার প্রয়োজন বোধ করে না। ভুলে যায় দিনের শেষে জনগণই তার তথা সব ক্ষমতার উৎস। এখানেও সেটা ঘটেছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সোভিয়েত সমাজের সামনে উপস্থিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি, হয়নি পার্টির মধ্যে গণতন্ত্রের অভাবে, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে।

এর আগে এক লেখায় বলেছিলাম যে ধর্মের মতই রাজনৈতিক দলকেও রাষ্ট্র থেকে আলাদা করতে হবে। এটা অনেকের মনের প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। কেননা রাজনৈতিক দল যদি না থাকে তাহলে গণতন্ত্রের চর্চা হবে কীভাবে? কথাটা সত্য। আমি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নই, উল্টো দেশে যাতে একাধিক শক্তিশালী রাজনৈতিক দল থাকে তার পক্ষে। কেননা একমাত্র তখনই রাজনৈতিক দলগুলো কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের কাছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার প্রয়াস পায়, একমাত্র তখনই রাজনৈতিক দলগুলো জবাবদিহিতার রাজনীতিতে বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়। কিন্তু বর্তমানে দেশে দেশে দেখা যায় ক্ষমতাসীন দল সর্বশক্তি নিয়োগ করে বিরোধী দলগুলোর অস্তিত্ব বিপন্ন করে তোলে আর সরকারি দল পারত পক্ষে প্রশাসনের ভূমিকা পালন করে অথবা নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রশাসনকে দিয়ে দেশের নয়, দলের স্বার্থ আদায় করে। আর এটা যাতে না হতে পারে সেজন্যেই রাজনৈতিক দলকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা করা গুরুত্বপূর্ণ। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল কমিউনিস্ট পার্টি তথা রাজনৈতিক দলের সাথে রাষ্ট্রের একাত্ম হয়ে যাওয়ার চরম পর্যায়। আমার মনে হয় এটাও রাষ্ট্র হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার একটা কারণ। সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই, তবে সে দেশের এক দলীয় শাসনের প্রতি আকর্ষণ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়ই দেখা যায়, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের মধ্যে। তাই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয় থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি আর নিজেদের দল বা দেশের স্বার্থেই এক দলীয় ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে পারি। আর এজন্যে সেই রকম রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে পারি যেখানে একাধিক রাজনৈতিক দল সুস্থ ভাবে নিজেদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে।

তবে সেই সাথে আরও যে প্রশ্ন সামনে চলে আসে, সেটা হল পার্টির কাজ কী, বিশেষ করে কমিউনিস্ট পার্টির মত বিপ্লবী পার্টির? ক্ষমতা দখল এবং বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল – এটাই তো কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তাহলে? কিন্তু কথাটা হল বিপ্লব কি অবশ্যম্ভাবী? পৃথিবীর ইতিহাস কিন্তু সেটা বলে না। পৃথিবীর ইতিহাস বিবর্তনের ইতিহাস, রেভ্যুলিউশন নয়, এভলিউশনের ইতিহাস। সেটা সমস্ত ক্ষেত্রেই। আমরা যদি বৈজ্ঞানিক তত্ত্বে বিশ্বাস করি, তাহলে দেখব শুধু পৃথিবী নয়, মহাবিশ্বই বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। জীবজগৎও একই পথে অগ্রসর হয়েছে। অন্তত ডারউইনের বিবর্তনবাদ সেটাই বলে। মানব সমাজও সেই পথেই আজকের পর্যায়ে এসে পৌঁছিয়েছে। এমনকি মানুষের জ্ঞানের জগৎ, বিজ্ঞান – প্রযুক্তি এ সবই এসেছে বিবর্তনের হাত ধরে। আমরা বলতে পারি শিল্প বিপ্লবের কথা। আপেক্ষিক তত্ত্ব, কোয়ান্টাম তত্ত্ব – এসবই বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এটা ঘটেছে রসায়ন, বাইওলোজি, চিকিৎসাবিদ্যা থেকে শুরু করে বিজ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রেই। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখব, এসব পরিবর্তন এক দিনে আসেনি, এসেছে অতীতে অর্জিত জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে, সেই জ্ঞানকে স্বীকার করেই। কোয়ান্টাম তত্ত্বকে বরণ করে আমরা নিউটনের বলবিদ্যাকে ত্যাগ করিনি, খারিজ করে দেইনি। আর সেটা করিনি বলেই বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। সোভিয়েত ইউনিয়ন হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা সমস্ত সামাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আসলে শূন্যের উপরে ভাসতে শুরু করে। আর এ কারণেই হয়তো এক সময় পায়ের নীচে মাটি খুঁজে না পেয়ে বেঘোরে প্রাণ হারায়। তাই মনে হয় পার্টিকে বিপ্লবের, অন্তত সোভিয়েত স্টাইলে বিপ্লবের বিকল্প কিছু ভাবতে হবে। কিন্তু বিপ্লবের বিকল্প কী? বিবর্তন কি আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যাবে? এখানে একটা কথা খেয়াল করা দরকার যে মার্ক্স উন্নত পুঁজিবাদী দেশে সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ আসবে বলে বলেছিলেন। তাহলে পশ্চিম ইউরোপে না হয়ে বিপ্লব কেন রাশিয়ায় হল যেখানে পুঁজিবাদ একেবারেই দুর্বল ছিল? আমার মনে হয় পুঁজিবাদের এই দুর্বলতার কারণের এখানে বিপ্লব সম্ভব হয়েছিল। পশ্চিম ইউরোপে বিপ্লব হলেও সেটা টিকত কি না সন্দেহ, কেননা পুঁজিবাদ নামক শত্রু ছিল শক্তিশালী। তাই সেদিক থেকে রাশিয়ায় পুঁজিবাদের দুর্বলতা বিপ্লবের পক্ষে কাজ করেছে। তাহলে কি হবে সে সব দেশে যেখানে পুঁজিবাদ যথেষ্ট শক্তিশালী। মনে হয় সেখানে বিপ্লব নয়, বিবর্তন হবে এফেক্টিভ। আর এ পথেই যাচ্ছে বিভিন্ন ওয়েলফেয়ার স্টেট। কিন্তু সেখানে আর যাই হোক, মালিক – ভৃত্যের সম্পর্ক তো বদলাবে না। মালিক মালিকই থাকবে আর ভৃত্য থাকবে ভৃত্য। শুধু নতুন বাস্তবতায় ভৃত্যদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, কিন্তু সম্পর্কের পরিবর্তন হবে না। তাহলে কীভাবে সর্বহারা তার দাসত্বের শিকল ছিঁড়বে? আর দাসত্বের শিকলই যদি না ছেড়ে তবে সমাজ বদলাবে কীভাবে, কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে সামাজিক ন্যায়বিচার? সে জন্যে দরকার শক্তি। দরকার জনসমর্থন। যদি কমিউনিস্ট পার্টি সত্যিকার অর্থেই নিজের পতাকা তলে সমস্ত মেহনতি মানুষকে জড় করতে পারে একমাত্র তখনই সে বা মেহনতি মানুষ পুঁজিপতিদের বাধ্য করতে পারবে তাদের দাবিদাওয়া মেনে নিতে। আবার যাতে সেখানে সর্বহারার একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠিত না হয় সেজন্যে আবার পুঁজিপতিদেরও দুর্বল হলে চলবে না। এক কথায় শক্তির এমন একটা ভারসম্য থাকতে হবে যা সব দলের মধ্যে এক ধরণের স্ট্যাটাস কো ধরে রাখতে পারে।

গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, দুবনা
শিক্ষক, পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি, মস্কো