চট্টগ্রামে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে একজনের ফাঁসির রায়
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানায় এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের পরে হত্যার অভিযোগে জসীম উদ্দীন বাপ্পি (৫০) নামে এক আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। দুই আসামি মারা যাওয়ায় তাদের মামলার বিচার কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪’র বিচারক জামিউল হায়দার এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত জসীম উদ্দিন সীতাকুন্ড উপজেলার কুমিরা এলাকার মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। একই এলাকার বাসিন্দা আইয়ূব খান (৩৬) ও শরীফ আহম্মদ (৫০) খালাস পেয়েছেন। মামলার আরও দুই আসামি সরওয়ার আলম সেরু (৫৫) ও আব্দুল মোতালেব লিটন (৪২) জেলহাজতে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন। আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ বিকেলে সীতাকুন্ড উপজেলার কুমিরা এলাকার কবির পাহাড়ে রান্নার জন্য কাঠ কাটতে যান শারমিন আক্তার নামের এক নারী। আসামিরা দলবেঁধে শারমিন আক্তারকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর শারমিন আক্তারকে আসামী বাপ্পি ছুরির আঘাতে হত্যা করেন। ঘটনার পরদিন ভোরে কুমিরা রেলস্টেশনের পূর্বপাশে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের পাশে পাহাড়ে শারমিনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শারমিনকে ধর্ষণ করে হত্যা করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ৩০ মার্চ শারমিনের মেয়ে ইয়াসমিন বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সীতাকুন্ড থানায় মামলা করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তার আসামি জসীম উদ্দীন বাপ্পি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ জনকে আদালতে উপস্থাপন করে সাক্ষ্যগ্রহণ করে। চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪’র সরকারি কৌঁসুলি নিখিল কুমার নাথ বলেন, ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামি জসীম উদ্দীন বাপ্পির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানারও আদেশ দেন আদালত। মামলায় আরও চার আসামি ছিলেন, এর মধ্যে ২ জন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। মামলায় শরীফ ও আইয়ুব নামে আরও দুইজনকে আদালত খালাস দিয়েছেন। আইয়ুব শুরু থেকে পলাতক রয়েছে। বাদীর আইনজীবী বিবেকানন্দ চৌধুরী বলেন, ‘এ রায়ে আমরা মোটেই খুশি নই। জসীম উদ্দিনের পাশপাশি আইয়ূব ও শরীফ দু’জন আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারাও ভিকটিমকে ধর্ষণের পর খুনের পরিকল্পনকারী। পাঁচজন মিলে সংঘবদ্ধভাবেই এ অপরাধ সংঘটিত করেছিল। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
# ২০.০১.২০২২ চট্টগ্রাম #