বিজ্ঞান প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ভাবনা (২৭)

-বিজন সাহা

বিগত বিভিন্ন  আলোচনা থেকে যে কথাটা বেরিয়ে এসেছে তা হল রুশ সাম্রাজ্য বা সোভিয়েত ইউনিয়নে সব সময়ই একটা শক্তিশালী কেন্দ্র ছিল, ছিল আরিস্টক্র্যাট বা এলিট আর জনগণ। এই তিনের স্বার্থ যখন মিলেমিশে গেছে তখন দেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে, কিন্তু এদের কোন একটা বিগড়ে গেলে শুরু হয়েছে স্মুতা বা অরাজকতা। রুশ সাম্রাজ্যে সেই কেন্দ্র ছিলেন জার। সোভিয়েত ইউনিয়নে জারতন্ত্র ধ্বংস হলেও জারের চেয়েও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হন পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি। নতুন রাশিয়ার ক্ষমতার কেন্দ্রে প্রেসিডেন্ট। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখব যখনই কেন্দ্র দুর্বল হয়েছে বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে বিদ্রোহ। তবে কেন্দ্র তখনই শক্তিশালী হয়েছে যখন সে এলিটদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে মতৈক্যে আসতে পেরেছে। কারা এই এলিট শ্রেনি? জারের আমলে এরা ছিল বায়ারিন বা জমিদার ও ছোটখাটো রাজন্যবর্গ আর সোভিয়েত আমলে পার্টি নমেনক্লাতুরা। বর্তমানে এই শ্রেণিতে আছে রাজনৈতিক নেতৃত্ব, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি – ইত্যাদি। আর জনগণের ভূমিকায় সব আমলেই ছিল সাধারণ মানুষ। এই জনগণ সাধারণত বরাবরই প্যাসিভ, যদিও দেয়ালে পিঠ ঠেকলে এরাও বার বার বিদ্রোহ করেছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় শাসকদের অত্যাচার বা দুঃশাসনের কারণে জনগণ বিদেশি শক্তিকে বরণ করে নিয়েছে। সেটা আমরা দেখতে পাই বখতিয়ার খিলজির বাংলা জয়ের সময়, দেখতে পাই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক বাংলা বিহার উড়িষ্যা দখলের সময়। রাশিয়ার ক্ষেত্রে সেটা বলতে গেলে একেবারেই ঘটেনি। তাই যখনই বিদেশী শক্তি এ দেশ আক্রমণ করেছে তখন সব কিছু ভুলে এই জনগণ কেন্দ্র আর এলিটদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে, দেশকে করেছে শত্রুমুক্ত। সেটা আমরা দেখতে পাই ১৬১২ পোলিশ আক্রমণের বিরুদ্ধে, ১৮১২ সালে নেপোলিয়ন রাশিয়া আক্রমণ করলে। দেখতে পাই ১৯৪১ সালে হিটলার কর্তৃক সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ কালে। সমস্ত ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল সবচেয়ে বঞ্চিত ও নির্যাতিত হওয়া সত্ত্বেও জনগণ কখনই দেশের সাথে বেইমানি করেনি, সেটা করেছে কেন্দ্র বা এলিট শ্রেণি। আর এই কেন্দ্র আর এলিট শ্রেণির হাত ধরেই বিভিন্ন সময়ে রাশিয়া ভিন দেশের কাছে স্বাধীনতা হারিয়েছে, যেমন ঘটেছে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর। তখন থেকে পুরা নব্বুইয়ের দশক রাশিয়া আপাত স্বাধীন হলেও বাস্তবে ছিল অ্যামেরিকা ও ইউরোপের করদ রাজ্য। জনগণ মনে হয় সব দেশেই এমন, তারা দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে না। কেন? মনে হয় তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলেই? আমাদের সব দেশের এলিট শ্রেণি তো এক পা সাগর পাড়ে দিয়েই রাখে। এরা উপার্জন করে দেশের গরীব প্রজাদের শাসন করে আর ব্যয় করে ধনী দেশে। তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত আধুনিক রাশিয়ায় এই প্র্যাকটিস বহুল প্রচলিত।

প্রশ্ন হল কেন্দ্র কীভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করে? কেন্দ্র কি আদৌ বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে? তাহলে তো সে নিজেই পরাধীনতার শিকলে বাঁধা পড়বে। তাহলে? নিজের দুর্বলতা দ্বারা কেন্দ্র বার বার সেটা করেছে। যখনই জার কিংবা জেনারেল সেক্রেটারি বা প্রেসিডেন্ট দেশের স্বার্থ রক্ষায় যথেষ্ট দৃঢ়তার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তখনই দেশে শুরু হয়েছে অরাজকতা, এমনকি বিদেশী আক্রমণের শিকার হয়েছে। একই কথা বলা চলে এলিট  শ্রেণির ক্ষেত্রেও। যখনই তারা দেশের চেয়েও নিজেদের স্বার্থকে বড় করে দেখেছে, তখনই তারা ক্ষমতা, দেশ সবই হারিয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গনের একটা বড় কারণ ছিল অর্থনৈতিক পশ্চাৎপদতা থেকে বেরিয়ে আসার প্ল্যানকে বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্র তথা জেনারেল সেক্রেটারির দৃঢ়তার অভাব আর সেটা করতে নমেনক্লাতুরার অনিচ্ছা। যদিও গরবাচভের অদক্ষতা নিয়ে এদেশে শুধু অলসরাই কথা বলে না এবং তার কারণ হিসেবে অনেকেই গরবাচভের সাথে রোনাল্ড রিগ্যান ও মারগারেট থেচারের বিশেষ সম্পর্ক এমনকি সিআইএর হাত দেখতে পায় নমেনক্লাতুরার ব্যাপারটা ভিন্ন। মানে যদি গরবাচভের বিশ্বাসঘাতকতার বিভিন্ন কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়, পার্টি এলিটদের ব্যাপারে তেমন কোন কারণ খোঁজা হয় না। ভাবখানা এই যে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সেটাই যথেষ্ট, কেন তারা এটা করল সেটা নিয়ে ভাবার দরকার নেই। অথবা এও হতে পারে তখনকার পার্টি নমেনক্লাতুরাই বর্তমান এলিট শ্রেণি। তারাই তখনকার যোগসাজশের মধ্য দিয়ে দখল করেছে সমস্ত জাতীয় সম্পদ, হয়েছে অঢেল সম্পত্তি আর ক্ষমতার মালিক। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন তারা সেটা করল? আসুন চেষ্টা করি সে ব্যাপারে কিছু বলতে। নিঃসন্দেহে তাঁর পেছনেও বিভিন্ন কারণ ছিল, ছিল ক্ষমতার লোভ – তবে সেটা কি ডিসিসিভ? কেননা দেশে অন্য কোন পার্টি ছিল না, তাই ছিল না ক্ষমতা হারানোর রিস্ক। তারপরেও কেন নমেনক্লাতুরা এটা করল, নিজেরাই নিজের পায়ে কুড়াল মারল?

আমার মনে হয় এর সাথে সম্পত্তির মালিকানার প্রশ্নটা অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। সোভিয়েত ইউনিয়নে শুধু কল কারখানা বা বড় জমিদারিই নয়, সব কিছুরই রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়। ফলে সবাই থাকত সরকারি ফ্ল্যাটে, যদিও খুবই অল্প ভাড়ায়। যদি সাধারণ মানুষ তাদের অল্প আয়ের কারণে এটা সহজেই মেনে নিয়েছিল, এলিট শ্রেণি, যারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করত, কিন্তু কোন কারণে পার্টি বা প্রশাসনের কুনজরে পড়লে মুহূর্তেই সর্বস্বান্ত হয়ে যেত, তাদের পক্ষে এটা মানা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে অনেকের মধ্যেই অসন্তোষ দেখে দেয় বা বলা চলে ক্ষমতায় থাকতে থাকতেই তারা তাদের ভবিষ্যতের গ্যারান্টি পেতে চায়। এটা দিতে পারত প্রাইভেট প্রপার্টি, সমস্ত সুযোগ সুবিধার মনেটাইজেশন। এটা যে তাদের অন্যায় দাবি ছিল তা কিন্তু নয়। একজন লোক যখন চাকরি থেকে অবসরের সাথে সাথেই তার সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয় বা তার ভবিষ্যৎ জীবন কাজের উপর নির্ভর না করে পার্টি বা প্রশাসনের খেয়াল খুশির উপর নির্ভর করে তাহলে তো তাকে নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে হলেও এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তারপরে পার্টির নেতার সন্তান যে নেতা হবে সেই গ্যারান্টিও ছিল না। ফলে দেখা যেত এমনকি সৎ ভাবে এবং দক্ষতার সাথে কাজ করেও বাবা মা তাঁদের সন্তানদের খুব বেশি কিছু রেখে যেতে পারতেন না। আর মানুষ তো কাজ করে যতটা না নিজের জন্য তাঁর চেয়ে বেশি উত্তরসূরিদের জন্য। এটাই হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নে। কিন্তু দেখা গেছে সাধারণ নেতা/কর্মী কোন ছাড়, এমনকি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি থেকে অনেক পলিটব্যুরোর সদস্যদের বিধবা বা সন্তানদের জীবন কাটাতে হত নতুন নেতৃত্বের দয়ার উপর। তাই পার্টির উপরের সারির নেতারা নিজেদের স্বার্থেই সেই ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে আগ্রহী ছিলেন না। সুদূর অতীতে একটা সময় হয়তো ছিল যখন মানুষ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সমষ্টির কথা আগে ভাবত যাকে আমরা বলি আদিম সাম্যবাদ। এটা ঘটে যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে যখন মানুষ শেষ সম্বল সমাজের কাজে দান করে দিতে পারে। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষ সবই করে নিজের আর নিজের পরিবারের মানুষের জন্য। এটা একদিনে গড়ে ওঠেনি। বিবর্তনের ধারায় হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এই বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে। এটাকে কোন ডিক্রি দিয়ে একদিনে বদলানো যায় না। তাই স্তালিন পরবর্তী যুগে যখন কমবেশি শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, মানুষ ফিরে গেছে তার দীর্ঘ দিনের অভ্যস্ত পথে, সে চেয়েছে সম্পদের মালিক হতে। আর তাই সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পরে যখন ঘরবাড়ির উপর ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠার সুযোগ আসে মানুষ সেটাকে লুফে নেয়। এতদিন যথেষ্ট অধিকার থাকার পরেও সে ছিল ফ্ল্যাটের বা বাড়ির বাসিন্দা। নিজের পরিশ্রম দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা ঘরের মালিক সে যে হতে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক।

এই ব্যবস্থা মানে স্থাবর প্রাইভেট প্রপার্টির বিলুপ্তি সাধারণ মানুষকেও বিপদে ফেলত। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে জারের শাসন থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্ত করলেও এবং সেই ১৮৬১ সালে দাস প্রথার বিলুপ্তি হলেও সেটা নতুন করে ফিরে আসে প্রপিস্কা সিস্টেমের মাধ্যমে। ফলে সবার গতিবিধি ও কাজকর্ম কোন একটা নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। এই সিস্টেমের কারণে কোন নাগরিকই যে জনপদে তাকে অফিসিয়ালি রেজিস্ট্রি করা হত তার বাইরে অন্য কোথাও শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি – এসব পেতে পারত না। তাই পারতপক্ষে মুক্ত থেকেও সে ছিল বন্দী। জরুরি অবস্থায় দেশ গঠনের জন্য এসব ব্যবস্থা ফলপ্রসূ হলেও শান্তির সময় ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই প্রপিস্কা পাবার একমাত্র না হলেও অন্যতম উপায় ছিল বিয়ে। ফলে মস্কোর বাইরের অনেকেই স্থানীয় ছেলেমেয়েদের সাথে প্রেম করত, হয়তো ভালবাসাও ছিল। বিয়ে হলে তখন দুটো অপশন ছিল। মস্কোবাসী বা মস্কভিচ মস্কোর বাইরের প্রপিস্কা নিয়ে সেখানে বাস করতে পারত অথবা মস্কোর বাইরের লোক মস্কোর প্রপিস্কা নিয়ে লিগ্যালি মস্কোয় বাস করতে পারত। সেই সঙ্গে মস্কোয় তার জন্য অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবার পথও খুলে যেত। যেহেতু প্রপিস্কা শুধু এক জায়গায় থাকতে পারত, তাই অটোম্যাটিক্যালি অন্য প্রপিস্কা ত্যাগ করতে হত। যদি কোন কারণে বিয়ে ভেঙ্গে যেত, তাহলে বাসা ভাগ হত। এভাবে জন্ম নিত নতুন সমস্যা। সে সময় কম্যুনাল ফ্ল্যাট বলে একটা কথা ছিল যেখানে কয়েক রুমের এক ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ছিল কয়েকটা ফ্যামিলি। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও জন্ম নিত এরকম নতুন কম্যুনাল ফ্ল্যাট জন্ম নিত। সেই সিস্টেম এখনও আছে, কিন্তু সেটা নতুন করে নয়, সোভিয়েত সিস্টেমের রেশ হিসেবে। এর ফলে এক ধরণের সামাজিক সমস্যাও তৈরি হত। এখানে মস্কোর কথা বলা হল উদাহরণ হিসেবে। এটা ঘটত সারা দেশ জুড়েই। এভাবে লোকজন সাধারণত অপেক্ষাকৃত অনুন্নত এলাকা থেকে উন্নত এলাকায় যেত। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব ঘটত স্বাভাবিক উপায়ে, বিয়ে হত প্রেম ভালবাসার মধ্য দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে, তবে যে এখানে বিভিন্ন রকম দুর্নীতি ঘটত না তা কিন্তু নয়। অনেকেই কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ করত। ফলে জন্ম নিত দুর্নীতির। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দেখা যেত যদি কারও সন্তান না থাকত তাহলে সেই দম্পতির বাসা তাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনদের অধিকারে না গিয়ে সরকারি সম্পত্তিতে পরিণত হত, অথচ এই আত্মীয় স্বজন বা তাদের ছেলেমেয়েরা হয়তো অনেকে মিলে ছোট এক বাসায় বাস করত। ব্যক্তিগত সম্পদের বিপক্ষে উদাহরণ স্বরূপ অনেকেই বলেন স্তালিনের মৃত্যুর পরে তার সম্পদ ছিল সাধারণ সৈনিকের পোশাক, জুতা আর সিগারেট। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় সব নেতারাই খুব সরল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু কথা হল আপাত দৃষ্টিতে সর্বহারা হলেও তাদের সেবায় নিযুক্ত ছিল সমস্ত দেশ। আর জনগণ, যাদের বলা হত দেশের সমস্ত সম্পদের মালিক, সর্বহারা না হলেও ছিল বেশ গরীব, যতটা না অর্থের অভাবে তার চেয়ে বেশি চয়েসের অভাবে।

মানুষ সামাজিক জীব হলেও সে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। তাই ব্যক্তিগত সম্পত্তির ধারণা তার জন্য কোন ফাঁকা বুলি নয়, নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য হলেও এটা তার দরকার। বলতে পারেন অনেক সাধু সন্ন্যাসীর তো ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলতে কিছু নেই, তাহলে কি তারা ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নন! এখানে আমাদের মনে রাখা দরকার যে সন্ন্যাসীর সম্পত্তি না রাখাটা তার উপর চাপিয়ে দেওয়া নয়, এটা তার চয়েস। ভূমিহীনদের জমি নেই, তাহলে? কিন্তু তাদের তো জমির মালিক হতে বাধা নেই। আসল কথা ওখানেই – মানুষকে যেন তার মৌলিক অধিকার থেকে আইন করে বঞ্চিত করা না হয়।

এসব ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে বড় বড় কলকারখানা বা ফ্যাক্টরির রাষ্ট্রীয়করণ অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তিযুক্ত হলেও বাসস্থান, সীমিত স্থাবর সম্পদ – এসবের রাষ্ট্রীয়করণ শুধু অযৌক্তিকই নয়, ক্ষতিকরও। তাই ভবিষ্যতে আমাদের সোভিয়েত অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই রাষ্ট্রীয়করণের কথা ভাবতে হবে।

 

গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, দুবনা
শিক্ষক, পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি, মস্কো