বস্তিতে ভয়াবহ আগুন দেখেই বৃদ্ধের মৃত্যু

নগরীর সদরঘাটে একটি বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে ৩৩টি কাঁচাঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন ওই বস্তির ৩৩ পরিবারের শতাধিক মানুষ। আগুনে সর্বস্ব হারিয়েছে বস্তির গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। এদিকে ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখা দেখে আবদুল জলিল (৫৪) নামে বস্তির এক বাসিন্দা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোররাতে নগরীর সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি পানির ট্যাংকির পাশে রেললাইন সংলগ্ন এসআরবি কলোনি বস্তিতে এই আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, ভোর সাড়ে চারটার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে আড়াই ঘন্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুনে পুড়ে কেউ হতাহত হননি। ঘটনাস্থলে যাওয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন শিকদার বলেন, আগুনে বস্তির তিন সারিতে ২২ জন মালিকের ৩৩টি কাঁচাঘর পুড়ে গেছে। আগুনে ৩৩টি পরিবার তাদের সহায়-সম্বল হারিয়েছে। শতাধিক মানুষ ঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে রাস্তায় অবস্থান করছেন। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে। প্রত্যক্ষদর্শী ও বস্তির বাসিন্দারা জানান, ভোররাতে বস্তির একপাশ থেকে আগুন লাগে। পরিত্যক্ত একটি রেল লাইনের পাশে গড়ে ওঠা ওই বস্তিতে একশর বেশি বসতঘর ছিল। এত তাড়াতাড়ি আগুন ছড়িয়ে পড়ে, কোন জিনিসপত্র নিয়ে বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। জান বাঁচাতে মহিলা আর বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে আসেন তারা। স্থানীয়দের দাবি, সেখানে থাকা বিদ্যুৎসংযোগ অবৈধভাবে নেওয়া। বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে অথবা রান্নার চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। সদরঘাট থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, অগ্নিকান্ডের সময় আগুনের লেলিহান শিখা দেখে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে বস্তির এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আগেও দুইবার স্ট্রোক করেছিলেন। দূর থেকেই আগুনের ভয়াবহতা দেখে তিনি তৃতীয়বার স্ট্রোক করেন বলে বস্তির লোকজন জানিয়েছেন। আগুন লাগার পর প্রচুর মানুষের হুড়োহুড়ি আর চোখের সামনে দাউদাউ করে সব জ্বলতে দেখে ঘটনাস্থলেই স্ট্রোক করে মারা যান। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ আগুনে তিনি বা তার পরিবারের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

# ১১.১২.২০২১ চট্টগ্রাম #