চলমান সংবাদ

বাংলাদেশে ওমাইক্রনের কারনে সংক্রমনের নতুন ঢেউ এর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না

-তবে ওমাইক্রনের কারনে গুরুতর অসুস্থতা কিংবা মৃত্যু কম হওয়ারই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে

– ডা এ, কে, আরিফ উদ্দিন আহমেদ (আরিফ বাচ্চু)

গত ২৬শে নভেম্বর ’২১ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার নুতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমাইক্রন কে “ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন” বা উদ্বেগজনক ধরন বলে ঘোষণা করে, এবং ২৯শে নভেম্বর ’২১ এই ধরণটিকে অতি উচ্চ ঝুঁকির বলে উল্লেখ করে। ধারনা করা হচ্ছে বাংলাদেশে আগামী জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারি ২০২২ নাগাদ করোনা অতিমারির নতুন ঢেউ আসতে পারে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট “ওমাইক্রন” এর সংক্রমনের কারনে। গত ২৯শে নভেম্বর ’২১ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বিষয়ে এক সভায় চারটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, প্রথমত ভ্রমণ বিষয়ে। ইতিমধ্যে ওমাইক্রনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, এমন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা। দেশে ঢুকছেন, এমন বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের গত ১৪ দিনের ওই সব দেশ ভ্রমণের ইতিহাস থাকলে তাঁকে কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) রাখা। দ্বিতীয়ত, যেসব আন্তর্জাতিক বন্দর দিয়ে মানুষ যাতায়াত করে, সেসব জায়গায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং ব্যবস্থা জোরদার করা। পাশাপাশি সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিন ও রোগ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিকে আইসোলেশনের (বিচ্ছিন্নকরন) ব্যবস্থা করা। তৃতীয়ত জনস্বাস্থ্য উদ্যোগগুলো শক্তিশালী করা। চতুর্থত, মানুষকে সচেতন করতে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করা। এ ব্যপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশবব্যাপী  পনেরটি (১৫টি) নির্দেশনা দেয়া হয়েছেঃ-

১) দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, লেসোথো এবং ডব্লিউএইচও সামনে যেসব আক্রান্ত দেশের নাম ঘোষণা করবে; সেসব দেশ থেকে আগত যাত্রীদের বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে; ২) সব ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে; ৩) প্রয়োজনে বাইরে গেলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সব

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে; ৪) রেস্তোরাঁতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম করতে হবে; ৫) সব ধরনের জনসমাবেশ, পর্যটনস্থান, বিনোদনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বউভাত, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কমসংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করতে পারবে; ৬) মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে; ৭) গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে; ৮) আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে; ৯) সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা, প্রাক্‌-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে; ১০) সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহীতা, সেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে; ১১) স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে; ১২) করোনার উপসর্গ বা লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজেটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে; ১৩) করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে; ১৪) অফিসে প্রবেশ ও অবস্থানকালে বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে; ১৫) করোনা নিয়ন্ত্রণ ও কমানোর জন্য কমিউনিটি পর্যায়ে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং ও প্রচার চালানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার মাইক ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।

নিঃসন্দেহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, কিন্তু এই সকল নির্দেশনা বাস্তবয়নের কার্যকর পদক্ষেপ এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হচ্ছেনা ।

বিগত অক্টোবর ২০২১ থেকে বিশ্বে করোনা অতিমারি পরিস্থিতির কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আবার নভেম্বর ২০২১ এর শেষের দিকে দক্ষিন আফ্রিকায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট “ওমাইক্রন” এর সংক্রমন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন করোনা ভাইরাসের ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্টের “S” জীন এর মিউটাশান এর কারনে করোনার স্পাইক প্রোটিনে ৩০ টি পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে। যে কারনে এই ভ্যারিয়েন্ট টি মানুষের দেহ কোষে (এসিই-২

রিসিপ্টরে) খুব সহজেই সংযুক্ত হতে পারে। তাই এর সংক্রমনের গতি অন্য সব ভ্যারিয়েন্টের চাইতে বেশী। এই ভ্যারিয়েন্টের কারনে ইউরোপে করোনা সংক্রমণের হার আবার ঊর্ধমূখী। তবে ওমাইক্রন এর সংক্রমণ এখনো পর্যন্ত ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মত আতঙ্কিত হওয়ার পর্যায়ে যায়নি। যারা ইতিমধ্যে করোনার টিকা নিয়েছেন, তারা ওমাইক্রনের বিরুদ্ধে অনেকটা সুরক্ষিত।

মানব দেহে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নির্ণয়ে প্রচলিত পরীক্ষা “আর টি পি সি আর” এর মাধ্যমে করোনার ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত করা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞবৃন্দ বলছেন এই ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত করতে হলে বিশেষ ধরনের “আর টি পি সি আর” পরীক্ষা করতে হবে অথবা বিভিন্ন পর্যায়ে এখন থেকেই স্যাম্পল সংগ্রহ করে জীন সিকোয়েন্সিং করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচলিত “আর টি পি সি আর” পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের তিনটি জীন “E, RdRp, N” শনাক্ত করা হয়, কিন্তু “S” জীন সনাক্ত করা হয়না। তাই যেহেতু ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্টের মূল মিউটেশান “S” জীন এ হয়েছে তাই “S” জীন সনাক্ত করতে না পারলে, মানব দেহে করোনা শনাক্ত করা গেলেও, ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তাছাড়া বিশ্বে কিছু কিছু কোম্পানীর “আর টি পি সি আর” কিট দিয়ে “S” জীন শনাক্ত করা গেলেও, এই জীনে মিউটাশান হয়েছে কিনা তা শনাক্ত করা সম্ভন নয়। তাই বাংলাদেশে ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা এখন থেকেই নেয়া উচিৎ। ইতিমধ্যে ঢাকার বিএসএমএমইউ, ও চট্টগ্রামের সিভাসু ঘোষনা দিয়েছে, যদি স্যাম্পল পায় তবে তারা জীন সিকোয়েন্সিং এর মাধ্যমে করোনার ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করতে পারবে।

ওমাইক্রন ভেরিয়েন্ট ১১ই নভেম্বর ২০২১ এ দক্ষিন আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়। এর পর ৮ই ডিসেম্বর ‘২১ এর মধ্যে ৫৭টি দেশে ওমাইক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ এইচ ও) সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলেছে ওমাইক্রনের তীব্রতা মূল্যায়নের জন্য আরও তথ্য প্রয়োজন। টিকা নেয়ার পর মানুষের শরীরে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ওমাইক্রন থেকে কতটা সুরক্ষা দিতে পারে, তা-ও অনিশ্চিত। এমনকি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমাইক্রনের তীব্রতা সমান বা সম্ভাব্য কম হলেও এটা প্রত্যাশিত যে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউ এইচ ও) জরুরি সেবা বিষয়ক পরিচালক মাইকেল রায়ান এএফপি কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, প্রাথমিক ভাবে আসা তথ্য-উপাত্ত করোনার নতুন এ ধরনে গুরুতর অসুস্থতার কোন ইঙ্গিত দিচ্ছেনা। গুরুতর অসুস্থতা বরং কম হওয়ারই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য এ নিয়ে তিনি

আরও গবেষণার ওপর জোর দিয়েছেন। মাইকেল রায়ান আরও বলেন, করোনার নতুন এ ধরন বেশি দিন আগে শনাক্ত হয়নি। তাই এর যেকোনো ইঙ্গিত ব্যাখ্যার ব্যপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, একই সঙ্গে কোভিডের বিদ্যমান টিকাগুলো থেকে পাওয়া সুরক্ষা যে ওমাইক্রন একেবারে পাশ কাটিয়ে যাবে – এমন কোন ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি। আমাদের হাতে আছে উচ্চমাত্রার কার্যকর টিকা। গুরুতর অসুস্থতা কিংবা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দিক বিবেচনায় এ পর্যন্ত আসা করোনার সবকটি ধরনের ক্ষেত্রে এসব টিকায় সুরক্ষার বিষয়টিও প্রমানিত। এটা ভেবে বসে থাকার কোন কারন নেই যে ওমাইক্রনের ক্ষেত্রে এমনটা হবেনা।

যেহেতু ওমাইক্রন ভ্যারিয়েন্টটি দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে, তাই দক্ষিণ আফ্রিকার করোনা অতিমারি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকার দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের গ্রাফ পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় সেখানে ১১ই নভেম্বর ২০২১ ওমাইক্রন শনাক্তের পর নভেম্বর এর শেষ সপ্তাহ থেকে রোগী শনাক্তের সংখ্যা হঠাত অত্যধিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্বে সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলে সমান তালে মৃত্যু হারও বৃদ্ধি পেতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ওমাইক্রনের কারনে দক্ষিণ আফ্রিকায় রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধি পেলেও মৃত্যু নেই বললেই চলে। অবশ্য এ বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার সময় আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিশষজ্ঞগণ। গবেষনায় দেখা গেছে যারা করোনার দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন তাদের রক্ত বেশির ভাগ সময় করোনার নতুন ধরণকে দুর্বল করতে সক্ষম। রয়টার্সের তথ্য মতে দক্ষিণ আফ্রিকার আফ্রিকা হেলথ রিসার্স ইন্সটিটিউটের প্রধান বিজ্ঞানী বলেছেন, ফাইজার বায়োন্টেকের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকার দুই ডোজের সুরক্ষা আংশিক ভেদ করতে পারে এই ওমাইক্রন। তাই ফাইজার বায়োন্টেক শুধু ওমাইক্রন নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট একটি টিকা উদ্ভাবনে কাজ করছে। আগামী মার্চ ’২২ এর মধ্যেই এটি পাওয়া যেতে পারে বলে তারা প্রত্যাশা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে যারা যারা পূর্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা আবারও এই ওমাইক্রনের মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারেন। সাউথ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ার অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজে বলেছেন, নতুন রূপের দ্বারা সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে অপরিচিত উপসর্গের দেখা পেয়েছি। তিনি বলেন সংক্রমিতদের মধ্যে চরম ক্লান্তির ভাব লক্ষ করা গেছে। পাশাপাশি শরীরের পেশিতে হালকা ব্যথা, আচমকা গলা ভেঙে যাওয়া এবং শুকনো কাশির সমস্যার কথাও জানিয়েছিলেন রোগীরা। যদিও তার দাবি, প্রতিটি সংক্রমিত রোগীর ক্ষেত্রেই উপসর্গের মাত্রা ছিল মৃদু। হাসপাতালে ভর্তি না হয়েই প্রত্যেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখানে উল্লেখ্য ৮ই ডিসেম্বর ’২১ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশ মানুষকে কোভিডের দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে এবং আরও ৫ শতাংশ

মানুষকে কোভিডের প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে এটাও অনুমান করা যায় যে টিকা প্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা কম থাকলে ওমাইক্রনের সংক্রমনের হার বেশি হতে পারে।

বাংলাদেশে সেপ্টেম্বর ’২১ এর মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সর্বশেষ ১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৮২ দিনে। ৮ই মার্চ ,২০ থেকে প্রথম রোগী শনাক্তের ২১ মাসের মাথায় এসে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে দেশে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ৪ঠা ডিসেম্বর ’২১ সকাল ৮টা থেকে ৫ই ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৪ঠা ডিসেম্বর ২৪ ঘন্টায় দেশে মোট ১৯ হাজার ১৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৯৭ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ১ দশমিক শূন্য ৩। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের গ্রাফ পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় করোনা অতিমারির তৃতীয় ঢেউ গত ৭ই জুন ’২১ থেকে ৩১শে অক্টোবর ’২১ পর্যন্ত ছিল। এর পর বর্তমানে করোনা সংক্রমণ নেই বললেই চলে। কিন্তু যেহেত বাংলাদেশে ৮ই ডিসেম্বর ’২১ পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ২৪ শতাংশ মানুষকে কোভিডের দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে এবং আরও ১৬ শতাংশ মানুষকে কোভিডের প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে, তাই এই ওমাইক্রন সংক্রমনের ঢেউ

বাংলাদেশেও হতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ওমাইক্রনের কারনে গুরুতর অসুস্থতা কিংবা মৃত্যু কম হওয়ারই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

লেখকঃ প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক (ক্লিনিক্যাল মেডিসিন), ফোকাল পার্সন (কোভিড ইউনিট) ও একাডেমিক কোঅরডিনেটর, ইমপেরিয়াল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম