চলমান সংবাদ

সংঘর্ষের ঘটনায় ৩১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে চমেক ছাত্রলীগের দু’ গ্রুপ একই সুরে

ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় মারামারি-সংঘর্ষের ঘটনা আসছে। দুইগ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব-বিরোধ থাকলেও সম্প্রতি সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৩১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে চমেক ছাত্রলীগের দুই অংশই। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে দুটি অংশই যেন একই সুরে কথা বলছে। বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে একাডেমিক কাউন্সিলের নেওয়া বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশ। তারা অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার ও ইন্টার্ন হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমানের পদত্যাগও দাবি করেছেন। এসময় তারা বলেন, গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন অধ্যক্ষ। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নির্দোষ ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আকিবের ওপর হামলাকারীদের সিসিটিভি ক্যামেরায় চিহ্নিত করা গেলেও অধ্যক্ষ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। তিনি ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবিরের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এছাড়াও বর্তমান একাডেমিক কাউন্সিলের গঠন প্রণালী অবৈধ এবং একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা সদস্যদের অনেকে সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখে না বলেও দাবি করেছেন চমেক ছাত্রলীগ। সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, চমেক ছাত্রলীগের রাজনীতিকে ধূলিসাৎ করার লক্ষ্যে বর্তমান অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার জামায়াত শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। একপাক্ষিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সঠিক তদন্ত করে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণাদি সাপেক্ষে দোষীদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) রাতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত চমেক ছাত্রলীগের সাত নেতা এক বিজ্ঞপ্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তকে ‘বিতর্কিত’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চমেক ছাত্রাবাস ও ক্যাম্পাসে সবশেষ ঘটনায় হামলায় জড়িত থাকার প্রত্যক্ষ প্রমাণ রয়েছে- এমন ১৬ জনের মধ্যে মাত্র আট জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২৩ জনের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকার পরও তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। চমেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের হেনস্থা করতে এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একাডেমিক কাউন্সিল এ ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর রাতে ও ৩০ অক্টোবর চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের জেরে ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই দিনই শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার চমেক একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে ৩১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া ২৭ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
# ২৪.১১.২০২১ চট্টগ্রাম #